ট্রাইব্যুনালের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন টবি ক্যাডম্যান
ব্রিটেনের বিখ্যাত আইনজীবী, যুদ্ধাপরাধ মামলার বিশেষজ্ঞ, মতিউর রহমান নিজামীর মামলার আন্তর্জাতিক আইন উপদেষ্টা বারি কিউসির ব্যারিস্টার টবি ক্যাডম্যান বলেছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়। সেজন্য তিনি এ ট্র্যাইব্যুনালের কার্যক্রম স্থগিত করার আহ্বান জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়ের প্রতি।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশন হাইকমিশন বরাবর তিনি চিঠিও দিয়েছেন এবং অপরাপর আন্তর্জাতিক সমপ্রদায়সহ সংগঠনের সঙ্গেও যোগাযোগ করেছেন।
জামায়াতের ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর মৃত্যুদন্ড রায়ের বিরুদ্ধে লন্ডনের সেইভ বাংলাদেশ ও জামায়াতের আন্তর্জাতিক ডেস্কের ব্যারিস্টার আবু বকর মোল্লার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত প্রেস কনফারেন্সে টবি ক্যাডম্যান উপরোক্ত বক্তব্য দেন।
সংবাদ সম্মেলনে সেইভ বাংলাদেশের পক্ষে মতিউর রহমান নিজামীর আত্মীয় ব্যারিস্টার নজরুল ইসলামও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে টবি ক্যাডম্যান দাবি করেন, তার কাছে যথেষ্টভাবে তথ্য-প্রমাণভিত্তিক প্রমাণিত হয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনালের বিচারপতিরা পক্ষপাতমূলক আচরণ করছেন, বিচারের ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ নন।
তার মতে, ট্রাইব্যুনাল কোনো প্রমাণ ছাড়াই মতিউর রহমান নিজামীকে আল-বদর বাহিনীর প্রধান হিসেবে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। তার মতে, নিজামী যুদ্ধ শুরুর চার মাস আগেই আল-বদর বাহিনী প্রধান থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। যেসব অভিযোগে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে দন্ড দিয়েছেন আদালত, তা গ্রহণযোগ্য মাত্রায় প্রমাণিত নয়।
সংবাদ সম্মেলনে টবি ক্যাডম্যান দাবি করেন, তার কাছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন টিম এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে গোপন সমঝোতা ও যোগাযোগের সম্পর্কের তথ্য প্রমাণ রয়েছে। তবে তিনি তা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করেননি।
টবি ক্যাডম্যান ভিয়েতনাম, হেগ সহ আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ মামলার আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কনসাল্টেশন ও পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বাংলাদেশ সরকারকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্র্যাইব্যুনাল ১ ও ২ এর কার্যক্রম স্থগিত এবং ইতিমধ্যে ঘোষিত রায়সমূহ স্থগিত বা বাতিলেরও দাবি জানান।
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠনের পর থেকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে জামায়াতের আন্তর্জাতিক আইনি পরামর্শক হিসেবে তিনি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লবিং এবং ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিয়ে আসছিলেন। বৃটেনের লর্ড কার্লাইল ছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়ন, বৃটেনসহ অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ও মার্কিন ফরেন দফতরের মৃত্যুদন্ডবিরোধী নানা বক্তব্য যুক্তি প্রমাণ হিসেবে তুলে ধরে তিনি বিশ্বের নানা সেমিনার ও জার্নালে বক্তব্য প্রকাশ করে আসছিলেন। ফেসবুকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের নানা অসঙ্গতি ও খুঁটিনাটি দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে বক্তব্যও সমানভাবে তুলে ধরছেন।