বৃহস্পতিবারও হরতাল ডেকেছে জামায়াত
বৃহস্পতিবারও ২৪ ঘণ্টার হরতাল ডেকেছে জামায়াতে ইসলামী। একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় জামায়াতে ইসলামীর নির্বাহী পরিষদের সদস্য মীর কাসেম আলীসহ আটক জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে আগামী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৭ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ২৪ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেয়া হয়।
রবিবার দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের পক্ষে মোঃ ইব্রাহিমের স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই হরতাল কর্মসূচির জানানো হয়।
বিবৃতিতে জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমির মকবুল আহমাদ দলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাশেম আলীকে হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্রের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং মীর কাসেমসহ আটক সকল জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে সরকার পরিকল্পিতভাবে জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে।
তিনি বলেন, সরকারি ষড়যন্ত্রের শিকার মীর কানেম আলী। সরকার মিথ্যা, বায়বীয় ও কাল্পনিক অভিযোগে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দায়ের করে নিজেদের দলীয় লোকদের দ্বারা আদালতে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করে।
বিবৃতিতে বলা হয়, আদালত সরকারের দায়ের করা মিথ্যা মামলায়, সাজানো সাক্ষীর ভিত্তিতে মীর কাসেম আলীরবিরুদ্ধে মৃত্যুদন্ডের যে রায় ঘোষণা করেছেন তা একটি ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। এ রায়ে মীর কাশেম আলী ন্যায়বিচার পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
তিনি বলেন, এ রায়ের বিরুদ্ধে তিনি উচ্ছ আদালতে আপীল করবেন। উচ্চ আদালত ন্যায়বিচার নিশ্চিত করলে তিনি খালাস পাবেন বলে আমরা গভীরভাবে বিশ্বাস করি।
মীর কাশেম আলীর বিরুদ্ধে আনীত সরকারের অভিযোগের সঙ্গে তার ন্যূনতম সংশ্লিষ্টতাও নেই। সরকার পক্ষ আদালতে মীর কাসেম আলীর বিরুদ্ধে গঠিত অভিযোগের পক্ষে যেসব ডকুমেন্ট দাখিল করেছেন সেখানে মীর কাসেম আলীর নাম নেই। সরকারের দাখিল করা ডকুমেন্টে বর্ণিত অভিযোগের স্থান ও যে সময় এবং তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে ঐ সময়ে মীর কাসেম আলী ঐ স্থানে উপস্থিত ছিলেন না। তিনি তখন ঢাকায় ছিলেন।
বিবৃতিতে বলা হয়, সরকারের প্রতিহিংসামূলক এসব কর্মকা- জনগণ মানে না। সরকারি ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে মীর কাসেম আলীকে হত্যার যে পরিকল্পনা সরকার করেছে জনগণ গণতান্ত্রিক উপায়ে তার মোকাবিলা করবে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ও আমিরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, মীর কাসেম আলী, কামারুজ্জামানসহ আটক নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে ঘোষিত ২ ও ৩ নভেম্বর রবি ও সোমবারের শান্তিপূর্ণ হরতাল অব্যাহত থাকবে।
৪ নভেম্বর মঙ্গলবার পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আলোচনা এবং জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির জন্য দেশব্যাপী দোয়া অনুষ্ঠান।
মীর কাসেম আলীকে হত্যার সরকারি ষড়যন্ত্র ও সরকারের সীমাহীন ব্যর্থতায় ১ নভেম্বর দেশব্যাপী ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের প্রতিবাদে ৫ নভেম্বর বুধবার দেশব্যাপী বিক্ষোভ।
মীর কাসেম আলীসহ আটক জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবিতে ৬ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৭ নভেম্বর শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত দেশব্যাপী ২৪ ঘণ্টার হরতাল পালিত হবে।
বিবতিতে এই কর্মসূচি সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ উপায়ে সফল করে তোলার জন্য জামায়াতে ইসলামীর সকল শাখা এবং কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবী, সুশীলসমাজ ও পেশাজীবীসহ সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ তথা দেশের আপামর জনতার প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানানো হয়।
হরতাল চলাকালে অ্যাম্বুলেন্স, লাশবাহী গাড়ি, হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে বিবৃতিতে জানানো হয়।