আমি মোটেই বিচলিত নই : কামারুজ্জামান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান তার সন্তান ও পরিবারের সদস্যদের বিচলিত না হওয়া এবং আল্লাহর ওপর ভরসা করে ধৈর্য ধারণ করার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি তাদের বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধে নয়, ইসলামি আদর্শের রাজনীতি করার কারণে সম্পূর্ণ মিথ্যা কল্পকাহিনী সাজিয়ে আমাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। আমাকে যদি হত্যা করা হয় তাহলে সেটা হবে জুলুম। আমার মৃত্যু হবে আদর্শিক ও শহীদী। এ জন্য আমি মোটেও বিচলিত নই।
গতকাল বুধবার সকালে পরিবারের সদস্যরা ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে তার সাথে দেখা করতে গেলে এসব কথা বলেন মুহাম্মদ কামারুজ্জামান। সকাল ১০টা ২০ মিনিটে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের ১০ সদস্য কামারুজ্জামানের সাথে দেখা করতে কারাগারে প্রবেশ করেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর সোয়া ১১টার দিকে তারা কারাগার থেকে বের হয়ে আসেন। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ছিলেন স্ত্রী নুরুন্নাহার জোসনা, চার ছেলে, এক মেয়ে, ভাই, বোন, শ্যালক ও ভাগ্নে।
কারাগার থেকে বের হয়ে তার বড় ছেলে হাসান ইকবাল ওয়ামী জেলগেটে সাংবাদিকদের বলেন, এটি আমাদের নিয়মিত সাাৎ। নিজেরাই কারা কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে এ সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেছি। কারাগার থেকে আমাদের সাাতের জন্য ডাকেনি।
হাসান ইকবাল বলেন, আমার বাবা সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক আছেন। তিনি মোটেও বিচলিত নন। পরিবারের সদস্যদেরও চিন্তা না করতে বলেছেন। তিনি বলেছেন, আমার মৃত্যু হতে পারে কিন্তু আমি যে আদর্শে বিশ্বাস করি সে আদর্শ যুগ যুগ ধরে এ দেশে বেঁচে থাকবে। ইনশাআল্লাহ, আমার এই আদর্শ একদিন এ দেশের মাটিতে বিজয়ী হবেই হবে। তিনি মাকে বলেছেন, তিনি যে আদর্শের আন্দোলন করছেন, তার সন্তানদেরও যেন সেই আদর্শে গড়ে তোলা হয়। তিনি আমাদেরকে আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ইসলামি আদর্শের ওপর অবিচল থাকার জন্য বলেছেন।
রায় প্রসঙ্গে কামারুজ্জামান বলেছেন, আমি কোনো অপরাধী নই। প্রমাণের ভিত্তিতে নয়, রূপকথার ভিত্তিতে রায় দেয়া হয়েছে। এটি একটি রূপকথার গল্প। এটি ন্যায়ভ্রষ্ট রায়। আমার ওপর যারা জুলুম করেছে তাদের বিচার আল্লাহ করবেন।
রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমা চাইবেন কি না সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে হাসান ইকবাল বলেন, রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পেলে ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ করা হবে। সেভাবেই আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি। আর রিভিউ নিষ্পত্তির পর ক্ষমার ব্যাপারটি আসবে। আর এটি আমার বাবার একান্তই নিজের বিষয়। এ কারণে আমরা এ নিয়ে এখন কথা বলতে চাই না।
মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে গত মঙ্গলবার কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে আনা হয়।
কামারুজ্জামানের সাথে আইনজীবীদের সাক্ষাতের আবেদন
জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত মুহম্মদ কামারুজ্জামানের সাথে দেখা করার জন্য আবেদন করেছেন তার আইনজীবীরা। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে সাক্ষাতের এ আবেদন জমা দেন অ্যাডভোকেট গাজী এম এইচ তামিম। অ্যাডভোকেট শিশির মনির জানান, জেল কর্তৃপক্ষ আবেদন গ্রহণ করে আজ বৃহস্পতিবার সকালে মুহম্মদ কামারুজ্জামানের সাথে আইনজীবীদের সাক্ষাতের ব্যবস্থা করার বিষয়ে মৌখিকভাবে জানিয়ে বলেছে, পরে যোগাযোগ করে সময় নির্ধারণ করা হবে।
মুহম্মদ কামারুজ্জামানের সাথে পাঁচজন আইনজীবী দেখা করার অনুমতি চেয়েছেন। এরা হলেন অ্যাডভোকেট মশিউল আলম, ব্যারিস্টার এহসান সিদ্দিক, অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, অ্যাডভোকেট শিশির মনির ও ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button