অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ মাধ্যম মুসলিম বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে

অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস থেকে প্রথমবারের মত নির্বাচিত মুসলিম এমপি দেশটিতে ব্যাপকভাবে বয়ে যাওয়া ইসলাম বিদ্বেষী তৎপরতার জন্য দু:খ প্রকাশ করে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, অস্ট্রেলিয়ার সংবাদ মাধ্যম মুসলমানদের খাদ্যাভ্যাস পোশাক পরিচ্ছদ ও আচার আচরণ সম্পর্কে গৎ বাঁধা প্রচারণার উপর জোর দিয়ে ইসলামের চরিত্র হনন করে চলেছে। মুসলিম এমপি শওকত মুসলমান স্ট্রিংগার নিউজ ওয়েবসাইটে লিখেছেন, সমৃদ্ধ ইসলামী সংস্কৃতি ও মসজিদে জমায়েত হয়ে মুসলমানরা ভাবগাম্বীর্যের মাধ্যমে তাদের যে আচার অনুষ্ঠান করে থাকে তাকে গুরুত্ব না দিয়ে টিভি মসজিদের বাইরে অগোছালো মুসল্লিদের ছবি প্রচার করার উপর বেশি গুরুত্ব দেয়। তিনি ‘থংস, কাবাব এন্ড হিযাব: এ ক্যারেক্টর এস্যাসিনেশন’ শিরোনামে উক্ত লেখায় তিনি মুসলমানদের সংস্কৃতির নামে মিডিয়া যে নির্দিষ্ট বিষয়ে ভাবমর্যাদা সৃষ্টির চেষ্টা করছে এ বিষয়ে সতর্ক করে দেন। শওকত বলেন, এসবের মাধ্যমে মিডিয়া সংখ্যালঘু মুসলমানরা নিম্ন শ্রেণীর কোন জীব হিসাবে দেখানোর চেষ্টা করছে। ডানপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো মুসলমানদের বিরুদ্ধে যেভাবে অপপ্রচার চালায় মিডিয়াও অনেকটা তাদের মতোই করে থাকে। বেলজিয়াম ও কানাডায় এ প্রবণতা দেখা যায়। দুঃখজনক হলো অস্ট্রেলিয়া ও ফ্রান্সও সে পথে হাঁটছে। অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসে মোট ১ লাখ ৬৮ হাজার ৭শ’ ৮৮ জন মুসলমান বাস করে। ২০০৬ সালের আদম শুমারী অনুযায়ী এই রাজ্যেই সবচেয়ে বেশি মুসলমানের বাস। ২শ’ বছরের বেশি সময় ধরে এ দেশটিতে মুসলমানরা বসবাস করে আসছে। দেশের মোট জনসংখ্যার ১.৭ শতাংশ হচ্ছে মুসলমান। খৃষ্ট ধর্মের পরেই এখানে ইসলামের স্থান। অস্ট্রেলিয়ায় মারাত্মক হিযাব বিরোধী প্রচারণার কথা উল্লেখ করে মুসলিম এমপি কয়েক জন হিযাব বিরোধী রাজনীতিকের কথা উল্লেখ করেন। উপরন্তু মুসলমানদের বিরুদ্ধে চরিত্র হননে জাতীয় প্রচারণার কথাও তিনি বলেন।
অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ইলি এবই হিযাব প্রসঙ্গে বলেন, আমি খোলাখুলিভাবে বলি, আমি চাই না এটা পরিধান করা হোক। মুসলিম এমপি তার কথা সর্বপ্রথমেই উল্লেখ করেন। লিবারেল দলের সম্মুখ সারির নেতা কেবিন এন্ডু, লিবারেল সিনেটর কোরি বার্নার্ড ও লিভারপুলের সাবেক প্রধান বে কিং গালনার, ইউনাইটেড পার্টির চেয়ারম্যান সিনেটর জাকুই ল্যাম্বিংয়ের নামও শওকত উল্লেখ করেন। হিযাব হচ্ছে মুসলিম মহিলাদের জন্য বাধ্যবাধকতামূলক পোশাক। অধিকাংশ আলেমের মতে মুখ ঢাকা বা নিকাব ব্যবহারও বাধ্যতামূলক তবে কিছু আলেম মনে করেন হিযাব পরলেই চলবে। নিকাব বাধ্যতামূলক নয়। ৯/১১ হামলার ঘটনার পর অস্ট্রেলিয়ার মুসলমানদের সন্দেহের চোখে দেখা হয় এবং তাদের দেশপ্রেমের ব্যাপারে প্রশ্ন তোলা হয়।  দেশভিত্তিক পরিচালিত একটি জনমত জরিপে দেখা যায়, অস্ট্রেলিয়ার এক চতুর্থাংশ মানুষ মুসলমানদের ব্যাপারে নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে। সংখ্যালঘুদের উপর বর্ণবাদী হামলার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। জরিপে আরো দেখা যায়, ৬০ বছরের বেশি যাদের বয়স তারা মুসলমানদের ব্যাপারে খুবই অসহনশীল। অপেক্ষাকৃত কম বয়সী, বিশেষ করে ১৮ থেকে ৪৪ বছর বয়সী লোকজন মুসলমানদের ব্যাপারে অপেক্ষাকৃত বেশি সহনশীল। শওকত যুক্তি তুলে ধরে বলেন, ইসলাম ও পশ্চিমা সভ্যতার মধ্যেকার পার্থক্যের বিষয়টি বড় করে দেখানো হয় এই কারণে যাতে ধর্মীয় বিভেদকে উস্কে দেয়া যায়। সংস্কৃতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা সভ্যতার সংঘাত আমাদের মোকাবিলা করতে হবে দৃঢ়ভাবে।।কান ছাড় দেয়া যাবে না। দিলে আমরা হেরে যাবো।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button