ধর্ম ও বিজ্ঞান সাংঘর্ষিক নয়
ধর্ম ও বিজ্ঞানকে একে অপরের অংশীদার বললেন সায়েন্স ফিকশান লেখক ড্যান ব্রাউন। তিনি সম্প্রতি ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লীতে ফোর্ট অডিটরিয়ামে এ কথা বলেন।
৫০ বছর বয়সি আমেরিকান এই সায়েন্স ফিকশান লেখক ড্যান ব্রাউনের ২০১৩ সালের বই ‘দ্যা ড্যা ভিঞ্চি কোড’ ব্যাপক আলোচিত হয়েছে। তার লেখা বই ৫২টিরও বেশি ভাষায় অনুবাদ হয়েছে।
অডিটরিয়ামে তুমুল হর্ষধ্বনি ও করতালির মধ্য দিয়ে তিনি বক্তৃতা দিতে মঞ্চে দাঁড়ান ড্যান ব্রাউন। তার আলোচ্য বিষয় ছিলো বিজ্ঞান ও ধর্ম। আলোচনার মূল বিষয়ে যাওয়ার আগে তিনি প্রাসঙ্গিকভাবেই তার ছোটবেলার গল্পগুলো টেনে আনেন। তিনি একটি বই উঁচু করে দর্শকদের দেখিয়ে বলেন, বইটির নাম ‘দ্যা জিরাফ, দ্যা পিগস এন্ড দ্যা প্যান্টস অব ফায়ার’। এটি পাঁচ বছর বয়সে আমার মা হাতে তুলে দিয়ে কপি করার আদেশ জারি করেছিলেন। সেই সময় থেকেই আমার উপন্যাস লেখা শুরু।
আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি বলেন, বিজ্ঞান এবং ধর্ম একে অপরের পরিপুরক। দুইটি আলাদা ভাষায় এরা একই কথা বলতে চায়।
ধারণাটি ব্যাখ্যা করার জন্য তিনি নিজের আনন্দঘন ছেলেবেলার স্মৃতিতে চলে যান। তিনি মায়ের কাছ থেকে নুহের নৌকার গল্প শুনেছেন। অন্য দিকে বাবার পিজা বিক্রির ক্যালকুলেটারটি নিয়েও গবেষণা করতেন। মা তাকে চার্চ গুরুদের মতোই ধর্মীয় শিক্ষা দিতেন। আর বাবা শেখাতেন গণিত। তাদের ব্যবহৃত আলাদা আলাদা গাড়িতেও দুইজনের মানসিকতার চিহ্ন ছিলো। মায়ের গাড়ির নাম্বার প্লেটে লেখা ছিলো ‘কোরি’। গ্রীক এই শব্দের অর্থ ‘প্রভু’। বাবার গাড়িরর নাম্বার প্লেটে লেখা ছিলো ‘মেট্রিক’।
বক্তৃতায় তিনি বলেন, যখন আমার বয়স ১৩, তখন থেকেই ধর্ম এবং বিজ্ঞানের দ্বন্দ নিয়ে ভাবতে শুরু করি। বিভিন্ন প্রশ্নও জাগতে থাকে। যেমন- পৃথিবীটা কি আসলেই সাত দিনে তৈরি হয়েছে? তা হয়ে থাকলেও ওটা কি বিগ ব্যাঙ থেকেই হয়েছে? আদম এবং হাওয়া থেকে বিবর্তনের মাধ্যমেই কী আমরা এসেছি?
বয়স বাড়ার সাথে সাথে তার চিন্তাতেও পরিবর্তন আসতে শুরু করলো। তিনি স্রস্টার অস্তিত্ব নিয়েও ভাবতে শুরু করেন।
তায় ব্রাউন বলেন, বিশ্বের সবগুলো ধর্ম একই সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। তাই গড়া জিনিসকে ভাঙা ঠিক নয়। ভাঙার চেয়ে গড়া ভালো। ঘৃণার চেয়ে ভালোবাসা ভালো।