ব্রিটেনে চালু হলো শরীয়া হোটেল
রাশিয়ার হালাল হোটেলের পর এবার ব্রিটেনে চালু হলো শরীয়া হোটেল। লন্ডনের প্রাণ কেন্দ্রে অবস্থিত বারমোন্ডসে স্কয়ার হোটেলটি এখন থেকে শরীয়া আইন মেনে চলবে। বৃহস্পতিবার থেকে এটি কার্যকর হয়েছে বলে জানায় ডেইলি মেইল।
সম্প্রতি হোটেলটি কিনেছেন মধ্যপ্রাচ্যের নতুন এক মালিক। তার ইচ্ছা অনুযায়ীয় ইসলামি রীতি নীতি মেলে এটি চলবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। ঘোষণার পর পরই হোটেল বারে শক্ত পানীয়, শূকরের গোশত এবং গ্রিল পরিবেশন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এতে আগের অতিথিদের অনেকেই হতাশ হয়ে ফিরে যাচ্ছেন।
হোটেলের এক কর্মী বলেন, মুসলিম মালিকের আদেশে আমরা অ্যালকোহল সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছি। এখন অ্যালকোহল সমৃদ্ধ পুডিং, রাম আইসক্রিম, বিয়ারসহ কোনো পাওয়া যাচ্ছে না। ওয়েটারদের বলে দেয়া হয়েছে, যারা অ্যালকোহল পান করতে আসেন, তাদেরকে বিনয়ের সাথে বিষয়টি জানিয়ে দিতে। এবং অ্যালকোহল ছাড়া অন্য খাবার প্রস্তাব করতে।
হোটেলটিতে প্রধান বাবুর্চির দায়িত্বে আছেন গ্রেগ ওয়ালেস। তিনি এরি মধ্যে শূকরের গোশতের পরিবর্তে মুরগি ও গরুর গোশত দিয়ে বিভিন্ন উপাদান তৈরি করা শুরু করে দিয়েছেন। খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে দেশটির জনপ্রিয় খাবার খরগোশ চপও।
বৃহস্পতিবার থেকে যুক্তরাজ্যের একমাত্র মুসলিম হোটেল হিসাবে যাত্রা শুরু করায় অনেক মুসলিম অতিথিরা খুশি আনন্দ প্রকাশ করেছেন। তবে স্থানীয় মদ্যপদের অনেকেই কর্তৃপক্ষের ওপর বিরক্তি প্রকাশ করছেন। ইন্টারনেটে এর বিরুদ্ধে প্রচারণাও চালাচ্ছেন। পেশায় আইটি কনসালটেন্ট এমন একজন নিয়মিত যাতায়াত করতেন হোটেলে। তিনি হোটেলের নতুন নীতিতে অসন্তুস্টি প্রকাশ করে বলেন, আমি বারে গিয়ে জানতে পারলাম হোটেলে অ্যালকোহল পরিবেশন করা হবে না। ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করলাম কেন? তিনি বললেন, নতুন মালিক এটিকে শরীয়া হোটেলে পরিণত করতে চাচ্ছেন। তিনি অ্যালকোহল থেকে লাভ আশা করেন না।
এর পর তিনি রাগ করে হোটেল থেকে বেরিয়ে আসেন। পরে জানান, ভবিষ্যতে কোনো দিন আর এই হোটেলে যাবেন না। পাশাপাশি হোটেল কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, এভাবে চললে হোটেলের ভরাডুবি হবে।
লন্ডনের একটি ইন্টারনেট কমিউনিটি হোটেলের শরীয়া নীতির বিরুদ্ধে প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা জানায়, লন্ডনের কেন্দ্রবিন্দুতে এমন একটি শুকনো হোটেল চলবে তা মেনে নেয়া যায় না। ওদের মনে রাখা উচিত এটা সৌদি আরব নয়।
বৃহস্পতিবার থেকে শরীয়া আইন চালু হলেও এখনো অগোছালো রয়ে গেছে হোটেলটির ওয়েবসাইট। ওখানে এখনো শ্যাম্পেইন ও ককটেল পার্টির জন্য দেয়া বিজ্ঞাপন শুভা পাচ্ছে। ওয়েবসাইটের বিভিন্ন যায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়ে গেছে অতিথিদের মদ পানের ছবি।
হোটেলের এই নতুন নীতি নিয়ে স্থানীয় অনেকে অসন্তুস্ট হলেও কর্মীরা আগের মতোই কাজ করছেন। প্রধান বাবুর্চি জর্জ ওয়ালেস শুক্রবার রাতে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, মালিক কি চাচ্ছেন বা না চাচ্ছেন সেটা নিয়ে আমার মাথা ঘামানোর কিছু নেই। অ্যালকোহল এবং শূকর পরিবেশন না করাা তার ধর্মীয় বিষয়। আমি এটাকে সম্মান করি। আমি এ হোটেলেই আছি। আর পান করতে ইচ্ছে হলে অন্য কোথাও গিয়ে করবো।