মোবারকের মৃত্যুদন্ড
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মোবারক হোসেনকে মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে। সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালনাল-১এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেল আসামি মোবারকের উপস্থিতিতে জনাকীর্র্ণ ট্রাইব্যুনালে এ রায় ঘোষণা করে। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি আনোয়ারুল হক।
৯২ পৃষ্ঠা রায়ের প্রথম অংশ বিচারপতি আনোয়ারুল হক, দ্বিতীয় অংশ বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন এবং শেষ ও চুড়ান্ত অংশ উপস্থাপন করেন ট্রাইব্যুনালনাল-১এর চেয়ারম্যান বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।
রায়ে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে আনীত ৫টি অভিযোগের মধ্যে ২টি অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এর মধ্যে ১ নম্বর অভিযোগে তাকে মৃত্যুদন্ড ও তিন নম্বর অভিযোগে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়। বাকী তিনটি অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে খালাস দেয়া হয়।
মোবারকের বিরুদ্ধে প্রথম অভিযোগ বলা হয়েছে, ’৭১-এর ২২ আগস্ট মোবারক ও অন্য রাজাকাররা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার টানমান্দাইল গ্রামের ২৬ জন ও জাঙ্গাইল গ্রামের সাতজনকে বাছাই করে তেরোঝুড়ি হাজতখানায় নিয়ে যায়। ২৩ আগস্ট পাকিস্তানি সেনা ও রাজাকাররা ওই ৩৩ জনকে গঙ্গাসাগর দীঘির পশ্চিম পাড়ে গুলি করে হত্যা ও লাশ মাটিচাপা দেয়। এ অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে ফাসিঁতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের রায় দেয়া হয়েছে।
তৃতীয় অভিযোগ: ৭১’ এর ১১ নভেম্বর রাতে মোবারক তার সশস্ত্র রাজাকার সহযোগীদের নিয়ে ছাতিয়ান গ্রামের আবদুল খালেককে অপহরণ করে সুহিলপুর ইউনিয়ন পরিষদের রাজাকার ক্যাম্পে নিয়ে যায় ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। ওই রাতেই খালেককে তিতাস নদীর পশ্চিম পাড়ে বাকাইল ঘাটে নিয়ে গুলি ও বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে হত্যা করা হয়। এ অভিযোগে তাকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেয়া হয়েছে।
সকালে কারাগার থেকে মোবারককে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। গত ২ জুন উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায়ের জন্য অপেক্ষমান (সিএভি) রাখা হয়। আজ রায় ঘোষণার বিষয়ে গতকাল দিন ধার্য করে দেয় ট্রাইব্যুনাল। এটি হলো ট্রাইব্যুনালের ত্রয়োদশতম রায়। ট্রাইব্যুনাল-১এ দেয়া ষষ্ঠ রায়। রায় ঘোষণা উপলক্ষে আজ ট্রাইব্যুনাল ও আশপাশ এলাকার নিরাপত্তা জোরদার করা হয়। -বাসস