হরতালের কারণে পর্যটনে মন্দা
জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতালের কারণে এবার ঈদকেন্দ্রিক পর্যটন ব্যবসা মন্দা ঠেকছে ব্যবসায়ীদের কাছে। যারা এসেছেন, হরতাল নিয়ে দুশ্চিন্তা তাদেরও। নিবন্ধন বাতিলের প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামী আগামী মঙ্গল ও বুধবার সারাদেশে হরতাল ডেকেছে। ঈদের ছুটির একদিন বাদেই শুরু হচ্ছে ৪৮ ঘণ্টার এই কর্মসূচি। রাঙামাটিতে আসা পর্যটকরা বেশি ভিড় জমাচ্ছেন দুই পাহাড়ের মাঝখানের আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুতে। তার পরেই পর্যটকদের আগ্রহ বেশি মনোমুগ্ধকর ঝর্ণা, রাজবন বিহার, জেলা প্রশাসন বাংলো, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফের সমাধি সৌধ, বালুখালী কৃষি খামার, টুকটুক ইকো ভিলেজ, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র, কর্ণফুলী পেপার মিল ও কাপ্তাই জাতীয় উদ্যানের দিকে। শনিবার দুপুরে ঝুলন্ত সেতুতে দেখা মেলে পর্যটক সাজু নাথ, মো. ফজল মিয়া, রাজন চক্রবর্তীসহ কয়েকজনের সঙ্গে। তারা বলেন, ঈদের ছুটিতে বন্ধুরা মিলে রাঙামাটি বেড়াতে এসেছেন। কিন্তু আনন্দের মাঝেও শঙ্কা তাদের দেশের পরিস্থিতি নিয়ে।
পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের টুরিস্ট বোট ব্যবসায়ী রায়হান চৌধুরী রানা বলেন, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর পর্যটকের সংখ্যা তিন ভাগের এক ভাগ। “গত বছর ঈদের পর দিন থেকে প্রতিদিন একশ বোট ভাড়া দিয়েছিলাম। এবার ২০টি বোটও ভাড়া হয়নি।” তিনি উৎসবকে কেন্দ্র করে হরতাল না দেয়ার জন্য রাজনৈতিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান। শহরের বেসরকারি হোটেল ব্যবসায়ীরাও মনে করেন, হরতালের কারণেই এবার রাঙামাটিতে ঈদের পর লোকজন কম আসছে। অনেকে কক্ষ বরাদ্দ দেয়ার পরও তা বাতিল করে দিয়েছেন। শহরের হোটেল গ্রীনক্যাসেল এর ব্যবস্থাপক চন্দন দাশ বর্মন জানান, তার হোটেলে এবারে পর্যটক নেই বললেই চলে। হোটেলের অধিকাংশ কক্ষ খালি পড়ে রয়েছে।
“হোটেল বরাদ্দ নিলেও হরতালের কারণে অর্ধেকের বেশি কক্ষের বরাদ্দ বাতিল করেছেন পর্যটকরা।” একই আক্ষেপ হোটেল সুপ্রিয়ার মালিক শফিকুল ইসলাম মুন্নারও। তিনি জানান, ঈদের পর দিন থেকে ১৫ অগাস্ট পর্ষন্ত ৮০ শতাংশ কক্ষ বরাদ্দ হলেও হরতালের কারণে ৪০ শতাংশই বরাদ্দ বাতিল করেছে। এজন্য হরতালকেই দায়ী করেন এ হোটেল ব্যবসায়ী। তবে রাঙামাটি সরকারি পর্যটন হলিডে কমপ্লেক্সের সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মো. আবু ইউসুফ পাটওয়ারী জানান, হরতালের কারণে তার মোটেলে বেশ কিছু কক্ষের বরাদ্দ পর্যটকরা বাতিল করে দিলেও পরে তা আবার পূরণ হয়েছে। মোটেলে আগামী ১৪ অগাস্ট পর্যন্ত সব রুম বরাদ্দ দেয়া হয়ে গেছে বলে জানান আবু ইউসুফ। তিনি বলেন, ঈদের পরদিন থেকে রাঙামাটিতে প্রচুর পর্যটক আসছে। আগামী দু’একদিনে পর্যটকের সংখ্যা আরো বাড়বে।