ইইউ থেকে অভিবাসন রোধে ব্রিটেনে কড়া পদক্ষেপ
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে ব্রিটেনে অভিবাসন বন্ধের লক্ষ্যে বেশকিছু কড়া পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব দিয়েছেন। এসব প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো থেকে আসা লোকজন যাতে সহজে সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা না পায়, সেজন্যে নিয়ম-কানুন কঠোর করা। ডেভিড ক্যামেরন হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তার এসব প্রস্তাবের ব্যাপারে যদি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে সমঝোতা না হয়, ব্রিটেন গণভোটের মাধ্যমে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করতে পারে।
অনেকদিন ধরেই ব্রিটেনে অভিবাসন এক বিরাট ইস্যু। ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না থাকার প্রশ্নে এখানে জোর রাজনৈতিক বিতর্ক চলছে। বেশিরভাগ ব্রিটিশ ভোটারই চাইছেন অভিবাসন ব্যাপকভাবে কমানো হোক।
ডেভিড ক্যামেরন ক্ষমতায় এসেছিলেন ব্রিটেনে ইমিগ্রেশন ‘লাখ লাখ’ থেকে ‘হাজার হাজারে’ কমিয়ে আনার অঙ্গীকার করে। কিন্তু সবশেষ সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ব্রিটেনে অভিবাসীর নেট সংখ্যা এখন বছরে আড়াই লাখেরও বেশি করে বাড়ছে।
ডেভিড ক্যামেরন বলছেন, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে অবাধ চলাচলের স্বাধীনতা কেড়ে নিয়ে ইমিগ্র্যান্টের সংখ্যা কমাতে চান না। বরং তিনি এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে চান, যাতে ইউরোপের যারা কাজের সন্ধানে আছেন-তাদের জন্য ব্রিটেন ‘কম আকর্ষণীয় গন্তব্যে’ পরিণত হয়।
তার এই পরিকল্পনায় একটিা দিক হলো-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে যারা ব্রিটেনে আসবে তারা চার বছর থাকার আগে পর্যন্ত তেমন কোনো সরকারি কল্যাণ ভাতা পাবে না।
মি. ক্যামেরন বলছেন, ‘ভবিষ্যতে যারা কর রেয়াত, শিশুকল্যাণ ভাতা পেতে চান-তাদেরকে অবশ্যই এদেশে অন্তত চার বছর থাকতে হবে, এবং এদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে হবে। তাদের সন্তান যদি অন্য দেশে বাস করে, তাহলে এসব ভাতা তারা পাবেন না-তা তারা যতদিনই ব্রিটেনে বাস করুন না কেন, বা যত করই দিয়ে থাকুন না কেন। কাউন্সিল থেকে বাড়ি পেতে হলেও আপনাকে অন্তত চার বছর এদেশে থাকতে হবে।’
তিনি আরো বলেন, ইউরোপ থেকে আসা অভিবাসীরা ছয়মাস কাজ ছাড়া থাকলে তাদের দেশে ফিরে যেতে হবে।
মি ক্যামেরন বলছেন, ইমিগ্রেশনের জন্য ব্রিটেন লাভবান হচ্ছে ঠিকই কিন্তু এটা হতে হবে নিয়ন্ত্রিত এবং জাতীয় স্বার্থের অনুকূল।
তিনি আশা করছেন তার এই পরিকল্পনা ইইউর অন্যন্য নেতাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে-এবং ইউরোপবিরোধী ইউকে ইন্ডিপেনডেন্স পার্টি বা ইউকিপের উত্থান ঠেকানো যাবে।
মি. ক্যামেরন সতর্ক করে দিয়েছেন যে ইইউর সাথে আলোচনার মাধ্যমে যদি তিনি এই লক্ষ্য অর্জন করতে না পারেন-তাহলে এ ব্যাপারে গণভোটের পর ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়েও যেতে পারে।
ব্রিটেনে আগামী বছরই সাধারণ নির্বাচন এবং তার আগে মি. ক্যামেরনের কনজারভেটিভ পার্টি এখন থেকে ইমিগ্রেশনবিরোধী দলগুলোর দিক থেকে চাপের মুখে পড়েছে।