দুবাইয়ের বৃহত্তম প্যারেড মাঠে অপরূপ সাজে বাংলাদেশ
ছালাহউদ্দিন, আরব আমিরাত থেকে: ২ ডিসেম্বর সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৪৩তম স্বাধীনতা দিবস। দিবসটি উপলক্ষে এক বাণীতে দেশটির প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান দেশের সুখ-সমৃদ্ধি কামান করে নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান এবং প্রেসিডেন্ট তার পিতা মরহুম প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের অনুসৃত নীতিমালার আলোকে সংযুক্ত আরব আমিরাতকে আরো এগিযে নেয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
১৯৭১ সালের এদিনে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য থেকে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতা লাভের পর মরহুম প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ানের নেতৃত্বে এবং তার দূরদর্শী চিন্তা, উদার মানসিকতা ও সুপরিকল্পনায় মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো ও মানব সম্পদ উন্নয়নের পাশাপাশি দেশটির উষর মরুভূমিকে রূপ দিয়েছেন সবুজের আঙ্গিনায় অট্টালিকায় সাজানো এক স্বপ্নের রাজ্যে। তার অক্লান্ত প্রচেষ্টায় সংযুক্ত আরব আমিরাত এখন সৌন্দর্যের এক অপূর্ব লীলাভুমি। উন্নত বিশ্বের জীবনধারায় নিয়ে এসেছেন আমিরাতবাসীদের জীবনযাপন। মরহুম প্রেসিডেন্ট ছিলেন তার দেশের নাগরিকদের পাশাপাশি প্রবাসীদের জন্যও এক মানবরূপী রহমতের ছায়া। সকল প্রবাসীদের কাছে তিনি ছিলেন প্রিয়ভাজন এক ব্যক্তিত্ব। প্রজাদের ন্যায় প্রবাসীদের সব ধরনের সমস্যা সমাধানে প্রশাসনের আওতায় ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগ নিতেন তিনি। এ জন্য যখনই শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান প্রসঙ্গ আসে তখনই প্রবাসীদের চোখেও শ্রদ্ধা ভালোবাসা ও ভক্তির ছাপ স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
২০০৪ সালের ২ নভেম্বর প্রেসিডেন্ট শেখ জায়েদ বিন সুলতান আল নাহিয়ান ইন্তেকালের পর প্রেসিডেন্ট শেখ খলিফা বিন জায়েদ আল নাহিয়ান তার মরহুম পিতার অনুসৃত নীতিমালার আলোকে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রেখে গত এক দশকে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে নেন সংযুক্ত আরব আমিরাতকে। আধুনিক স্থাপত্যশিল্পের অতুলনীয় নিদর্শন আর অপরূপ সাজে সাজানো এ দেশটি স্বাধীনতা লাভের ৪৩ বছরে অর্থনৈতিক ও অবকাঠাকামোগত উন্নয়নে এখন বিশ্বসেরা ধনী দেশগুলোর মধ্যেও একটি।
এদিকে দেশটির ৪৩তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে গত শনিবার বিকালে দুবাইয়ের প্যারেড মাঠে অনুষ্ঠিত বৃহত্তম প্যারেডে অংশ নেয় বিশ্বের ৪৪টি দেশ। এর মধ্যে বাংলাদেশের পক্ষে প্রথমবারের মতো অংশ নেয়া এক ঝাঁক প্রবাসীর বাংলাদেশ ও আরব আমিরাতের জাতীয় পতাকা এবং বাংলাদেশের সংস্কৃতি ঐতিহ্যের পোশাকে অপরূপ সাজে এক অসাধারণ নৈপুন্যে পারফরমেন্স ছিল মাঠভর্তি হাজার হাজার দর্শকের চোখে পড়ার মতো। প্যারেডে অংশ নেয়ার মাধ্যমে দু’দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরো দৃঢ় হবে এমন প্রত্যাশায়ই এ আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান বাংলাদেশি উদ্যোক্তা ও পরিচালকরা। তবে প্যারেডে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ অংশগ্রহণ করায় খুশি প্রবাসীরাও।
স্বাধীনতা লাভের এ দিনটি ঘিরে সরকারি ও বেসরকারিভাবে নেয়া হয়েছে ব্যাপক আয়োজন, বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে দেশটির ৭টি প্রদেশের প্রতিটি শহরকে। সর্বত্রই যেন সাজ সাজ রব আর আনন্দের জোয়ার দিনটিকে ঘিরে রয়েছে বিমান মহড়া ও আরবদের নানা অনুষ্ঠান। দিবসটি উপলক্ষে ৩ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়।