নিউ ইয়র্কে ‘দেশী সিনিয়র সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা
বাংলাদেশী আমেজে প্রবীণ প্রবাসীদের সময় কাটানোর জন্য ১ ডিসেম্বর সোমবার নিউ ইয়র্কে উদ্বোধন করা হলো ‘দেশী সিনিয়র সেন্টার’ তথা ‘প্রবীণ নিবাস’। উত্তর আমেরিকায় বাংলাদেশী তথা দণি এশিয়ার প্রবীণদের জন্য এটি এ ধরনের প্রথম উদ্যোগ। নিউ ইয়র্ক সিটি প্রশাসন এ সেন্টার প্রতিষ্ঠা করল। সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ‘ইন্ডিয়া হোম’ এটি পরিচালনা করবে।
৬০ বছরের অধিক নিঃসঙ্গ প্রবাসীরা সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই সেন্টারে অবস্থান করবেন। তাদেরকে সকালের নাশতা ও দুপুরের খাবার পরিবেশন করা হবে। মাঝের সময় কাটবে গান-বাজনা, আড্ডা অথবা পত্রিকা পড়ে কিংবা কোনো ইস্যুতে আলোচনার মাধ্যমে। পাশাপাশি শরীরচর্চা ও নামাজসহ ধর্মচর্চার ব্যবস্থাও রয়েছে। স্থায়ী ভবন না হওয়া পর্যন্ত এটি চলবে বাংলাদেশীদের পরিচালনাধীন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের মিলনায়তনে। নিউ ইয়র্ক সিটির কাউন্সিলম্যান ররি ল্যান্সম্যানের সহায়তায় এটি স্থাপিত হলো। উদ্বোধনের সময়ই শতাধিক বাংলাদেশী তালিকাভুক্ত হয়েছেন এ সেন্টারের সুবিধা গ্রহণের জন্য।
স্থানীয় কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘প্রবীণদের চাঙ্গা রাখতে এ ধরনের সিনিয়র সেন্টারের ভূমিকা অপরিসীম। আমি এ উদ্যোগের সাথে ছিলাম এবং প্রবীণদের নিজ নিজ সংস্কৃতির আবহে সময় কাটানোর যেকোনো উদ্যোগের সাথে থাকব।’
নিউ ইয়র্ক স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন ‘দেশী সিনিয়র সেন্টার’-এর উদ্বোধনী পর্বে বলেন, ‘সবাই প্রবীণ হবো। সবার জন্যই এ সিনিয়র সেন্টার প্রতিষ্ঠিত হলো। এটি পরিচালনায় সবাইকে সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।’
কমিউনিটি অ্যাডভাইজারি গ্র“পের চেয়ার মাজেদা এ উদ্দিন বক্তব্যের সময় আনন্দে কেঁদে ফেলেন। তিনি দীর্ঘ দিন ধরেই সিনিয়র সিটিজেনদের সেন্টার স্থাপনের চেষ্টা করছিলেন। ‘দেশী সিনিয়র সেন্টার’ পরিচালনার সাথে রয়েছেন কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট নার্গিস আহমেদ। তিনি বলেন, এমন একটি কাজের সাথে যুক্ত থাকতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি।
অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে নিউ ইয়র্ক সিটি কাউন্সিলে সিনিয়র সিটিজেন সম্পর্কিত কমিটির চেয়ারওম্যান মার্গারেট চিন বলেন, ‘এই সিটিতে প্রবীণের সংখ্যা বাড়ছে। তাই নিজ নিজ সংস্কৃতির আবহে প্রবীণদের সময় কাটানোর ব্যবস্থা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের প্রেসিডেন্ট ডা: মোহাম্মদ রহমান বলেছেন, এ ধরনের একটি সিনিয়র সেন্টার প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল আমাদের। আজ তা বাস্তবে রূপ নেয়ায় খুব খুশি হয়েছি।
ইন্ডিয়া হোমের নির্বাহী পরিচালক ড. বসুন্ধরা ডি কালাসাপুদি বলেন, ‘আমরা তিন বোন সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি মা-বাবাকে নিজস্ব সংস্কৃতির মধ্যে অবসর জীবন কাটানোর ব্যবস্থা করতে। পারিনি। সেই দুঃখবোধ দূর করতে এই সিনিয়র সেন্টার পরিচালনায় এগিয়ে এসেছি। উদ্বোধনী পর্বে আরো বক্তব্য দেন জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারের পেশ ইমাম মাওলানা আবু জাফর বেগ, চেয়ারম্যান ডা: মাহমুদুর রহমান, সেক্রেটারি আকতার হোসেন, পরিচালক শামসী আলী, দারুস সালাম মসজিদের ইমাম মাওলানা আব্দুল মুকিত এবং সমাজকর্মী কাজী হালিম।