দেশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে : প্রধানমন্ত্রী
শুনেছি ভূত নাকি পেছনে চলে। তেমনি বিএনপি- জামায়াতও পেছনে চলতে চায়। তারা যখন মতায় আসে দেশকে পেছনের দিকে নিয়ে যায়। গতকাল মঙ্গলবার কুয়ালালামপুরে মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশীদের দেয়া একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের সাফল্য তুলে ধরে বিএনপি-জামায়াতের আমলে উৎপাদন কমে যাওয়ার উদাহরণ টেনে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। বাসস, বাংলানিউজ।
পাশাপাশি শিা, স্বাস্থ্য খাতে তার সরকারের নেয়া ইতিবাচক পদপেগুলোকেও বিএনপি-জামায়াত মতায় ফিরে কিভাবে স্থবির করে তুলেছিল সে কথাও তুলে তিনি বলেন, দেশ এখন তাদের পশ্চাৎপদতা থেকে মুক্ত। আর সে কারণেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে।
মালয়েশিয়া আওয়ামী লীগের আয়োজনে এই গণসংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রী প্রবাসীদের কষ্টের উপার্জনে দেশ আজ উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে বলেন, দেশে রেমিট্যান্স ২২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেলে ৪টার কিছুণ আগে কুয়ালালামপুরে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। সফরের প্রথম দিনেই এই গণসংবর্ধনার আয়োজন করেন এখানকার প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
এ সময় সহস্রাধিক প্রবাসী বাংলাদেশী হোটেল গ্র্যান্ড হায়াতের বলরুমে সমবেত হন। মুহুর্মুহু করতালি আর স্লোগানের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান প্রবাসীরা।
বিএনপি-জামায়াতের নির্বাচন বানচালে সহিংসতার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এরপরও তারা নির্বাচন ব্যাহত করতে পারেনি, দেশের ৪০ শতাংশ মানুষ নানা অনিশ্চয়তা ও সহিংস পরিবেশের মধ্যেও আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে ফের নির্বাচিত করেছে। তিনি বলেন, এর ফলে তার সরকারের আগের মেয়াদে নেয়া উন্নয়ন পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের সুযোগ তৈরি হয়েছে।
মালয়েশিয়ার উদাহরণ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা দেশের জন্য সংগ্রাম করেছে সেই দলই এই দেশে বছরের পর বছর মতায় থেকে দেশের উন্নয়ন নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশেও আওয়ামী লীগ সরকার দেশের উন্নয়নে কাজ করে যেতে বদ্ধপরিকর।
নিজের দলকে ও সরকারকে জনগণের সেবক উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজের ভাগ্য নয় আমরা জনগণের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করছি।
জামায়াত-বিএনপি জোট এই উন্নয়নের ধারা ব্যাহত করতে চায়। আর দেশের স্বাধীনতারবিরোধী কারো গাড়িতে যখন জাতীয় পতাকা ওঠে তখন দেশ পিছিয়ে যাবেই, মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের দুঃশাসনের কারণেই তত্ত্বাবধায়ক আসে এবং দুই বছর মতায় থেকে দেশের মানুষের ভাগ্য থেকে সাতটি বছর কেড়ে নেয়। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের হাতে দেশবাসী দেশ পরিচালনার সুযোগ দেয়াতে দেশ আবার অগ্রগতির পথে হাঁটতে শুরু করে।
মালয়েশিয়ায় অবৈধ শ্রমিকদের বৈধ করার বিষয়টি তার অব্যাহত প্রচেষ্টারই ফল এ কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌদি আরব, আমিরাতেও একই চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ ছাড়া প্রবাসীদের কল্যাণে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক চালু, তাদের বিমানবন্দরে হয়রানি রোধে নানাবিধ উন্নয়ন পরিকল্পনার কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।
শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রেলস্টেশন পর্যন্ত আন্ডারপাস তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও এ সময় জানান প্রধানমন্ত্রী।
বিএনপি-জামায়াতের সমালোচনায় প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, এরা দেশের উন্নয়নের উদ্যোগগুলোকে বানচাল করতে চায়। আন্দোলনের নামে গাড়ি পোড়ায়, রেলের কোচ পুড়িয়ে দেয়। তারা মসজিদেও হামলা চালায়।
তিনি বলেন, এখনো তাদের অশান্ত মন শান্ত হয়নি। দলের নেত্রী এখনো হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন। নতুন নতুন তারিখ দিয়ে যাচ্ছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, হুমকিতে আমি ভয় পাই না। জন্মেছি যখন একদিন মরতেই হবে। মৃত্যুকে ভয় পাই না। আমি আমার বাবা-মা-ভাই হারিয়েছি। দেশের মানুষকে সেবা করার মধ্য দিয়ে, তাদের ভালোবাসার মধ্য দিয়েই বাবা-মাকে আজ যেন ফেরত পেয়েছি। বারবার আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা হয়েছে। কিন্তু পিছু হটিনি। দেশের মানুষের জন্য আমি মরতে প্রস্তুত।