শাহী ঈদগাহ মাঠে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা উদ্বোধন
সিলেটে মাসব্যাপী আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা বুধবার থেকে শুরু হয়েছে। নগরীর শাহী ঈদগাহ মাঠে বিকাল ৪টায় মেলার উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দি ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ, নিটল নিলয় গ্রুপ’র চেয়ারম্যান ও ইন্ডো-বাংলা চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আবুল মাতলুব আহমদ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এক দশকের ভেতরে দেশ হবে দারিদ্রমুক্ত। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন কারণে এক দশকের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদা পাবে বাংলাদেশ। সিলেটের দক্ষিণ সুরমায় আমেরিকা এবং বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা ৭০০ একর জায়গা নিয়েছেন আইটি সিটি করার জন্য। সিলেটেই হবে বৃহৎ এই আইটি সিটি।
অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, দেশ অনেক এগিয়ে গেছে। এখন পৃথিবীর অন্যান্য দেশের সাথে আমাদের দেশও ব্যবসাসহ নানা ধরনের কাজে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে চলতি দশকেই দারিদ্র সীমা প্রায় ১৪ দশমিকের নিচে চলে আসবে। সেসময়ে দেশে বড় ধরনের পরিবর্তন আমরা দেখতে পাব। প্রধানমন্ত্রী খুব তাড়াতাড়ি এটা করে দেখাবেন।
তিনি বলেন, মেলার নামে ঘুষ-জুয়া বন্ধ না হলে আমার অনুমতি ছাড়া কোন মেলা হবে না। তবে আমি চাই সিলেটে মেলা করার দায়িত্ব ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো আয়োজন করুক, যেখানে মেলার নামে অনৈতিক কার্যকলাপ হবে না। বাদাঘাট এলাকায় লঞ্চ স্টীমার ইন্ডাস্ট্রিজ গড়ে তুললে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর উচিত, সরকারকে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে ঋণে সুদের হার কমানোর জন্য সরকারকে সুপরার্মশ প্রদান করা। যাতে দেশ, ব্যবসায়ী ও জনগণ লাভবান হোন। শাহী ঈদগাহ্ খেলার মাঠ নিয়ে ভূমিখেকোরা মামলা করেছে, বর্তমান সরকারের এই মেয়াদেই খেলার মাঠের সমাধান করে দেব।
মেট্রোপলিটন চেম্বারের পরিচালক হাসিন আহমদ মিন্টুর সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আফজাল রশীদ চৌধুরী, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশন অব চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই)-এর সাবেক সভাপতি এ, কে, আজাদ, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, জেলা প্রশাসক শহীদুল ইসলাম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, উপস্থিত ছিলেন সিলেট জেলা পরিষদের প্রশাসক আব্দুজ জহির চৌধুরী সুফিয়ান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুর রহমান চৌধুরী, এসএমপি কমিশনার, ডিআইজি, সাবেক সংসদ সদস্যা জেবুন্নেছা হক প্রমুখ।
মাসব্যাপী এ মেলার আয়োজন করেছে সিলেট মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি (এসএমসিসিআই)।
এবারের মেলায় দেশী-বিদেশী ১৬০টি স্টল, ৪টি মেগা প্যাভিলিয়ান, ৪টি প্রিমিয়ার, ৩টি স্ট্রান্ডার্ড প্যাভিলিয়ান, ৩টি ফোরেন জোন ও ৪টি টেক্সটাইল জোন থাকবে। এছাড়াও মেলায় রিয়েল এস্টেট, আই টি টেলিকম জোন, ট্যুারিজম সেন্টার ও ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প উদ্যোক্তা ও মহিলা উদ্যোক্তাদের জন্য রেয়াতি মূল্যে কিছু স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
মেলায় একটি সিকিউরিটি ক্যাম্প রয়েছে। ওই ক্যাম্প থেকে আইন-শৃঙ্খলাবাহীর পাশাপাশি এসএমসিসিআই’র নিজস্ব সিকিউরিটি এবং ভলেন্টিয়ার গ্রুপ কাজ করবে। পুরো মাঠ জুড়ে আছে সিকিউরিটি ক্যামেরা। শিশুদের বিনোদনের জন্য আছে একটি শিশুপার্কও। মেলায় নামাজ পাড়ার জন্য নির্ধারিত একটি স্থান রাখা হয়েছে।
এসএমসিসিআই’র একটি সূত্র জানায়, এরই মধ্যে মেলার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। উদ্যোক্তারা মেলা সফলে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।