হেফাজতে ইসলাম মদিনা জোনের ওলামা ও সুধী সমাবেশ
হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ পবিত্র মদিনা জোনের এক ওলামা ও সুধী সমাবেশ আজ বাদ যোহর হোটেল রাইয়ান নূর কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমীর, দারুল উলূম হাটহাজারীর মুহতামিম, শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী।
মদিনা জোন সভাপতি মাওলানা সাইয়েদ রফিকুল ইসলাম মাদানীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে ওলামা ও সুধী অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মুফতি হাবীবুল্লাহ মাহমূদ কাসমেী ,মাওলানা মাসহিুল্লাহ,মাওলানা মোজাম্মলে হক, মাওলানা আনাস মাদানী,মাওলানা মোস্তাফজিুর রহমান,মাওলানা সুফয়িান আনসি, মাওলানা বশীর, মুফতী মাসুম বল্লিাহ, ফরিোজী,মাওলানা আযযি ফুরকান আল মাদানী, মাওলানা লোকমান হোসনে,মাওলানা আব্দুল জললি,হাফজে মহউিদ্দনি ,হাফজে শাহাদাত, মাওলানা মনরি হোসাইন , মুফতি কাজী মইনউদ্দনি আহমাদ , মাওলানা শফিউল আলম, মুফতি যাকরি হোসাইন , মাওলানা মসেবাহ আল মাদানী প্রমুখ।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির ভাষণে আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, আল্লাহ, রাসূল সা., কুরআন-হাদিস ও ইসলামি তাহযীব-তামাদ্দুন নিয়ে একটি শ্রেণী বাংলাদেশে খেল-তামাশা শুরু করেছে। তাদের আস্ফালন দেখে মনে হয়, মুসলমানরা এদেশে আশ্রিত। তাদের স্মরণ রাখা উচিত, সাইয়েদ আহমদ শহীদ, হাজী শরীয়তুল্লাহ ও শাহজালাল (রাহ.)সহ অসংখ্য আলিম-মুহাদ্দেস, মুফাসসির ও অলি-দরবেশ, কুতুব-আবদালদের দেশ আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশ। এদেশে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড চালিয়ে, নাস্তিক-মুরতাদদের লালন পালন করে কিংবা ইসলাম নির্মূলের ষড়যন্ত্র করে কেউ পার পাবে না। মুসলমানদের বুকে যতদিন একবিন্দু রক্ত থাকবে ততদিন ইসলামবিদ্বেষীদের মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম ক্ষমতা দখলের আন্দোলনে রাজপথে নামেনি; আমরা আল্লাহ ও রাসূল সা. এর অবমাননাকারীদের শাস্তির বিধান প্রণয়নের দাবিতে দেশের সর্বস্তরের মুসলমানদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করছি। এই ঈমানী আন্দোলনকে স্তব্ধ করার জন্য দেশি-বিদেশি বহুমুখী ষড়যন্ত্র চালানো হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হাজার হাজার আলিম-ওলামাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আলিম-ওলামাকে বিদেশ যেতে বাধা দেয়া হচ্ছে। সকল ষড়যন্ত্র-জাল ছিন্ন করে ঈমানী আন্দোলন চূড়ান্ত সফলতায় উপনীত হবে ইনশাআল্লাহ।
আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বলেন, ইসলামের শত্র“রা ভেবেছিল, বিগত ৫ মে শাপলা চত্বরে লাখো জনতার মহাসমাবেশে বাতি নিভিয়ে রাতের অন্ধকারে গণহত্যা চালিয়ে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করা যাবে কিন্তু তাদের আকাক্সক্ষা কখনও পূরণ হবে না। নবীপ্রেমিক তাওহীদি জনতা ইতোমধ্যে গোটা দেশে বহুগুণ ঈমানী শক্তি নিয়ে আরও বৃহৎ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে।
প্রবাসীদের উদ্দেশে আল্লামা শাহ আহমদ শফী বলেন, বিদেশে আপনারা শুরু থেকে এই ঈমানী আন্দোলনে ব্যাপকভাবে সহযোগিতা করেছেন। বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে প্রবাসীদের সংগঠিত করে হেফাজতে ইসলামের পক্ষ আন্তর্জাতিক জনমত তৈরিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন; আল্লাহ আপনাদেরকে আরও বেশি ইসলামের খেদমত করার তাওফীক দিন। এই ত্যাগ ও পরিশ্রমের জন্য আমি আপনাদের শোকরিয়া জ্ঞাপন করছি। আপনাদের প্রতি অনুরোধ করবো, নিজেদের সন্তান-সন্ততি ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে আল্লাহর দীনের খাঁটি সৈনিক হিসেবে তৈরি করার চেষ্টা করবেন। বিদেশের মাটিতে অক্লান্ত পরিশ্রম করে যে অর্থ উপার্জন করছেন, তা যেন কিয়ামতের দিন নাজাতের উসিলা হয়।
সভাপতির ভাষণে মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী হেফাজত আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফী এই বৃদ্ধ বয়সে দীনের জন্য যে ত্যাগ ও কুরবানী দিয়ে যাচ্ছেন সে জন্য তাকে প্রবাসীদের মুবারকবাদ জানিয়ে বলেন, হেফাজতে ইসলাম যদি এই ঈমানী আন্দোলনের সূচনা না করতো এতো দিনে বাংলাদেশ নাস্তিক-মুরতাদদের দেশে পরিণত হতো। এই আন্দোলন আমাদের দেশের ওপর আল্লাহর বিশেষ রহমত। দেশবাসী ও মুসলমানদেরকে আল্লাহর গজব থেকে রক্ষার এক বড় কারণ হিসেবে হেফাজতের আন্দোলনের অভ্যুদয়।
সমাবেশ শেষে আমীরে হেফাজত আল্লামা শাহ্ আহমদ শফী বাংলাদেশের মুসলমানদের ইজ্জত-আব্র“ রক্ষা, দেশে শাস্তি-সমৃদ্ধি অর্জন, ৫ মে গণহত্যা আহতদের সুস্থতা কামনা ও শহীদদের মর্যাদা বৃদ্ধি এবং প্রবাসীদের কল্যাণের জন্য মহান আল্লাহর দরবারে বিশেষ মুনাজাত করেন।