ভারতে যেভাবে মুসলমানদের ধর্মান্তরিত করা হয়েছিল
ভারতের আগ্রার দেবনগরের যে ৩০০ মুসলমানকে বলপূর্বক হিন্দুতে ধর্মান্তরিত করা হয়েছিল তারা সবাই দেশভাগের সময় বাংলাদেশ থেকে এসেছিলেন। প্রতারণার মাধ্যমে তাদের হিন্দু ধর্মে দীক্ষিত করা হয়েছিল বলে এখন জানা যাচ্ছে। তাদের অভাবকে পুঁজি করে উগ্রবাদী হিন্দুরা তা করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের জি নিউজ।
খবরে বলা হয়েছে, তিন দিন আগে ৬০টি মুসলিম পরিবারের এই সদস্যদের ধর্মান্তরিত করে আরএসএসের দুই শাখা বজরঙ্গ দল ও ধর্ম জাগরণ সমন্বয় বিভাগ। ধর্মান্তকরণ অনুষ্ঠানের নাম দেয়া হয় ‘ঘর ওয়াপসি’। বলা হয়, ধর্মান্তরিত হলে মিলবে বিপিএল কার্ড (রেশন কার্ড)।
বুধবার ধর্ম জাগরণ মঞ্চের সদস্য কিশোর বাল্মীকির বিরুদ্ধে সদর বাজার থানায় এফআইআর দায়ের করেন ধর্মান্তকরণে বাধ্য হওয়া শরিফা বেগম। তিনি বলেন, ‘আমাদের বলা হয়েছিল বিশেষ পোশাক পরতে ও পুরুষদের মাথায় খুলির টুপি পরতে বলা হয়। ধর্মান্তকরণের স্থানে পৌঁছনোর পর আমাদের হাতে ধর্মীয় সুতো বাঁধতে বলা হয়। আমাদের কপালে সিঁদূর লেপে দেয়া শুরু হয়। জোর করে যজ্ঞে অংশ নেয়ানো হয় আমাদের। আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম এটা কোনো অনুষ্ঠান। কিন্তু পরে যখন বুঝতে পারলাম ধর্মান্তকরণ করা হচ্ছে তখন আপত্তি জানাই আমরা।
অপর এক মুসলিম মুহম্মদ ইবাদুল জানান, ‘ধর্মান্তরিত হওয়ার আগে আমি মরে যেতে চাই। আমি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইছি। আমি চাই না কেউ এই ফাঁদে পা দিক।’
বছর ৪২-এর আবদুল রহমান গাজি জানান, ১৫ দিন আগে আমাদের জানানো হয় বিপিএল কার্ড দেয়া হবে, ছবি দেয়া হবে। সেইসঙ্গেই মিলবে অন্য বিষয়ে বিশেষ ছাড়। একটা অনুষ্ঠান হবে যেখানে কিছু বিশিষ্ট মানুষ ও সংবাদমাধ্যম উপস্থিত থাকবে। তখনো বুঝিনি কী হতে চলেছে।
ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে আগ্রার সমাজবাদী পার্টির সভাপতি ফারুখ সিয়ার বলেন, ‘কেউ কেউ ধর্মীয় অশান্তি তৈরির চেষ্টা করছে। গরিবরা ফেঁসে যাচ্ছে।’
অন্যদিকে বজরঙ্গ দলের অজ্জু চৌহান বলেন, ‘এরা নিজেদের ইচ্ছায় ধর্মান্তরিত হয়েছেন। পরে নিজেদের নতুন নামে ডাকার আর্জিও জানান। এখন বলতে ভয় পাচ্ছেন।’