জড়িত সিআইএ কর্মকর্তাদের বিচার দাবি জাতিসংঘের
আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় ‘বর্বরোচিত’ নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার (সিআইএ) কর্মকর্তাদের বিচার দাবি করেছে জাতিসংঘ ও বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন।
বুধবার বিবিসির অনলাইনের খবরে জানানো হয়, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট ইনটেলিজেন্স কমিটি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে ২০০১ সালে নাইন-ইলেভেন হামলা-পরবর্তী সময়ে সন্ত্রাসবাদ ও আল-কায়েদার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আটক ব্যক্তিদের ওপর সিআইএর নির্মম নির্যাতনের চিত্র উঠে আসে।
জেনেভা থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের মানবাধিকার ও সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ দূত বেন এমারসন বলেন, জর্জ ডব্লিউ বুশ প্রশাসনের যেসব জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এ নির্যাতনের পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন করেন, তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, নির্যাতনের ঘটনায় কেবল সিআইএ নয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকারও দায়ী।
বেন এমারসন আর বলেন, আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী যুক্তরাষ্ট্র দায়ী লোকজনের বিচার করতে বাধ্য।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রোথ বলেন, সিআইএ যে ঘটনা ঘটিয়েছে, তা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। এটি কোনোভাবেই ন্যায্যতা পেতে পারে না।
মঙ্গলবার সিনেট কমিটি প্রকাশিত প্রতিবেদনে জিজ্ঞাসাবাদের সময় শতাধিক বন্দীর সঙ্গে কী রকম আচরণ করা হয়, তার উল্লেখ রয়েছে। তারা ২০০১ থেকে ২০০৯ সালের মধ্যে মার্কিন বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হন। আল-কায়েদার ১০০ জন সন্দেহভাজন সদস্যকে জিজ্ঞাসাবাদে ওয়াটারবোর্ডিংসহ বিভিন্ন ধরনের নিষ্ঠুর পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছিল। ওয়াটারবোর্ডিং হচ্ছে কাপড়ে মুখ বেঁধে ব্যক্তির ওপর পানি ঢেলে শ্বাস-প্রশ্বাস কষ্টকর করে তোলা, যাতে নির্যাতিত ব্যক্তির মনে হয়, তিনি পানিতে ডুবে যাচ্ছেন।
সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের আমলে বহু বন্দীকে জিজ্ঞাসাবাদে সিআইএ যে গোপন কার্যক্রম চালিয়েছিল, এ প্রতিবেদনকে তার একটি মারাত্মক প্রমাণ হিসেবে দেখা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। বারাক ওবামা ২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর ওই বিতর্কিত জিজ্ঞাসাবাদের পদ্ধতি বাতিল করেন। তিনি একে ‘নির্যাতন’ বলে আখ্যা দিয়েছিলেন।