পিআইবি-সোহেল সামাদ স্মৃতি পুরস্কার পেলেন গাফ্ফার চৌধুরী
পিআইবি-সোহেল সামাদ স্মৃতি পুরস্কার-২০১৪ পেলেন খ্যাতনামা সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/আমি কি ভুলিতে পারি…’ গানের গীতিকার আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী।
রোববার রাজধানীর পিআইবি মিলনায়তনে প্রধান অতিথি হিসেবে গুণী এ সাংবাদিকের হাতে পুরস্কার ও সম্মাননা তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব কামাল লোহানী, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, তথ্য সচিব মরতুজা আহমদ, পিআইবির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি হাবিবুর রহমান মিলন, পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীর ও প্রয়াত সাংবাদিক সোহেল সামাদের পরিবারের সদস্য ডা. বেলাল সামাদ।
অধ্যাপক ড. সাখাওয়াত আলী খানের সভাপতিত্বে তিন সদস্যের জুরি বোর্ড কলাম লেখায় নিরবচ্ছিন্ন অবদানের জন্য আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীকে এ পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেন।
পুরস্কার গ্রহণ শেষে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী বলেন, পঞ্চাশের দশকে সাংবাদিকতায় অর্থবিত্ত ছিল না, ছিল প্রবল নৈতিকতাবোধ। সেই নৈতিকতা সাংবাদিকতায় আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। সাংবাদিকতায় কেবল অর্থকে বড় করে দেখলে চলবে না।
তিনি বলেন, আমরা এখন একটি মধ্যযুগীয় রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশের ভেতর দিয়ে যাচ্ছি। মৌলবাদ,জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা রুখে না দাঁড়ালে জাতির প্রতি ঋণ শোধ হবে না।
নিজের পুরস্কার পাওয়ার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন, সোহেল সামাদ তার কর্ম ও কীর্তির মাধ্যমে বেঁচে থাকবেন।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী একজন কালোত্তীর্ণ ব্যক্তিত্ব। তিনি তার লেখনীর মাধ্যমে আমাদের একই সঙ্গে অতীতে ফিরিয়ে নিয়ে যান,আবার ভবিষ্যতেও নেন। বহুদর্শী হিসেবে তিনি মানচিত্র বদলের ঘটনা দেখেছেন। আবার মানচিত্র বদলে দেওয়ার ঘটনাও দেখেছেন। কলামের মাধ্যমে তিনি পুরো জাতিকে অসাম্প্রদায়িক,গণতান্ত্রিক চেতনায় উজ্জীবিত করেন।
কামাল লোহানী বলেন, সংবাদপত্রের কলামে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী যে শব্দ, ভাষা, ব্যঙ্গ-রসাত্মক উপমা ব্যবহার করেন, তা অনবদ্য। যা সর্বশ্রেণির পাঠককে আকৃষ্ট করে।
গোলাম সারওয়ার বলেন, আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর ক্ষুরধার কলাম সব সময়ই সর্বাধিক পঠিত। যারা মতামত ও মন্তব্যের সঙ্গে একমত নন তারাও তার কলাম গভীর আগ্রহের সঙ্গে পাঠ করেন।
ইকবাল সোহবান চৌধুরী বলেন, সাংবাদিক হিসেবে তাকে নিয়ে আমরা গর্ব করি। তিনি যেন তার উত্তরসূরিদের জন্য একটি আত্মজীবনী লিখে যান।
পিআইবির মহাপরিচালক শাহ আলমগীর বলেন, কিছু ঘটনা ইতিহাস সৃষ্টি করে। আবার ইতিহাস কিছু মানুষকে তৈরি করে। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী তেমনই একজন
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পিআইবির পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি হাবিবুর রহমান মিলন, পিআইবির প্রয়াত সাংবাদিক সোহেল সামাদের পরিবারের সদস্য ডা. বেলাল সামাদ।
বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট (পিআইবি) প্রয়াত সাংবাদিক সোহেল সামাদ স্বরণে প্রতি বছর পাঁচটি ক্যাটাগরিতে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে।
পুরস্কার হিসেবে কলামিস্ট আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী পেয়েছেন ৫০ হাজার টাকার চেক,ক্রেস্ট ও সম্মননা। অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করেন হিমাংশু গোস্বামী ও রাকা চৌধুরী।