বিনিয়োগ নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে বিনিয়োগকারীরা !

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সিদ্ধান্ত নিতে আবারো হিমশিম খাচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। নতুন করে বিনিয়োগ করার ইচ্ছে থাকলেও দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন পুঁজিপতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা। আর এর নেপথ্যের কারণ অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি। বিশেষ করে নির্বাচনপূর্ব রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নিতে যাচ্ছে তা নিয়ে শঙ্কায় ভুগছেন অনেক বিনিয়োগকারী। কারণ, বর্তমান সরকারের মেয়াদ আর মাত্র দু’মাস বাকি আছে। এরপর নির্বাচনী হাওয়া পুঁজিবাজারে লাগতে পারে। এছাড়া ইতিমধ্যে ঈদের ছুটির পর টানা ৪৮ ঘন্টার হরতালের কবলে পড়েছে সারা দেশ।
গত জুন মাসে বাজারে উত্থানের পর বাজার সংশ্লিষ্ট সকলেই নতুন করে আশার আলো দেখতে পেয়েছিলেন। কারণ, এ সময় লেনদেনের পাশাপাশি বাজারে সূচকের ওঠানামা স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে এসেছিল। কিন্তু গত মাসের শেষের দিকে রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কেন্দ্র করে বাজারে আবারো অস্থিরতা শুরু হয়। ফলে নতুন করে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শঙ্কা দেখা দেয় অনেকের মধ্যে।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, গত মাসের শেষের দিকে বাজারে বড় ধরনের মুনাফা উত্তোলন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। মূলত: ঈদকে সামনে রেখেই তারা মুনাফা উত্তোলন করেন। আর এ ঘটনা বাজারের স্বাভাবিক আচরণের মধ্যেই পড়ে। আর মুনাফা তুলে নেয়া বিনিয়োগকারীদের মধ্যে পুনরায় বিনিয়োগের ইচ্ছে বিদ্যমান ছিল। এদের মধ্যে পুঁজিপতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর সংখ্যাই ছিল বেশি। সার্বিক বাজারে মূলত: এ দুই শ্রেনীর বিনিয়োগকারীরা লেনদেনে বেশি প্রভাব রাখে।
কিন্তু সম্ভাব্য রাজনৈতিক অস্থিরতা পরিস্থিতি কিছুটা পাল্টে দিয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে এখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরো খারাপ হতে পারে বলে ধারণা করছেন অনেকে। কারণ, ঈদের ছুটি শেষে প্রথম দিন থেকেই হরতালের মুখে পড়তে হচ্ছে দেশবাসীকে। আর তাই নতুন করে বিনিয়োগের পরিকল্পনা নিতে সাহস পাচ্ছেন না বিনিয়োগকারীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মার্চেন্ট ব্যাংক এবং সিকিউরিটিজ হাউজের পুঁজিপতি বিনিয়োগকারী এমনকি মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বর্তমানে কিছুটা শঙ্কায় রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের এক সদস্য বলেন, আস্তে আস্তে বাজার প্রায় স্বাভাবিক আচরণে চলে এসেছিল। কিন্তু বরাবরের মত তা আবারো পতনে রূপ নিয়েছে। মূলত: বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের প্রতি অনীহার কারণেই এমন হয়েছে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, পুঁজিপতি বিনিয়োগকারীরা নতুন করে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আন সিকিউর ফিল করছে। তাই ঈদের পর এখন বাজার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে অনেকে।
একই প্রসঙ্গে আরেকটি একটি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) বলেন, তিন বছরের বেশি সময় ধরে মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো কি পরিস্থিতি পার করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। যে কারণে অস্থির পরিস্থিতিতে বিনিয়োগ করতে সাহস পাচ্ছে না ফান্ডগুলো। যেহেতু ফান্ডগুলো গ্রাহকের টাকা বিনিয়োগ করে এবং এর বিপরীতে গ্রাহকদের লভ্যাংশ দেয়ার বিষয় রয়েছে, তাই পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলেই বিনিয়োগে ফেরার আশা করছি।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button