দরগাহ মাদরাসার নাম পরিবর্তন নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্যে সিলেটে ক্ষোভ
সিলেটের দরগাহ মাদরাসার নাম পরিবর্তন নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহার করেননি আঞ্জুমানে আশেকানে মোস্তফা (স.)-র সাধারণ সম্পাদক ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। তবে, মাজার শরীফের বিরুদ্ধে কিংবা মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আকবর আলীর বিরুদ্ধে কোন বক্তব্য দেয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন তিনি। বলেছেন, অপপ্রচার রটিয়ে দরগাহ মাদরাসার ছাত্ররা তাদের অনুষ্ঠানে হামলা চালিয়েছে। এই হামলার ঘটনাকে ন্যক্কারজনক বলে দাবি করেন তিনি। গতকাল সন্ধ্যায় সিলেটে এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়। মাওলানা আবুবকর ছিদ্দিকের বিতর্কিত বক্তব্যকে ঘিরে এখন ক্ষোভ বিরাজ করছে দরগাহ মাদরাসায়। দাবি উঠেছে, বিতর্কিত বক্তব্য প্রত্যাহারের। আঞ্জুমানে আশেকানে মোস্তফা (স.) পরিষদের উদ্যোগে শনিবার আলিয়া মাদরাসা মাঠে বিকাল ৩টা থেকে সুন্নী সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ওই সম্মেলনে হবিগঞ্জ জেলার প্রতিনিধি মাওলানা আবুবকর ছিদ্দিক বক্তৃতা করেন। এক পর্যায়ে তিনি জামেয়া কাসিমুল উলুম দরাগাহে হযরত শাহজালাল (রহ.) মাদরাসার নামকরণ নিয়ে কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘মাদরাসায় হযরত শাহজালালের নামের সঙ্গে ভারতের এক ব্যক্তির নাম জুড়ে দেয়া শাহজালালের সঙ্গে বেয়াদবি।’ মাদরাসার নামকরণ পরিবর্তনের জন্য তিনি বক্তৃতায় আহ্বান জানান। মাদরাসা ছাত্ররা অভিযোগ করেছেন, নাম পরিবর্তনে বিতর্কিত বক্তব্যের পাশাপাশি মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা আকবর আলীকে নিয়েও তিনি কটূক্তিপূর্ণ মন্তব্য করেন। হেফাজতে ইসলামকে ‘ইয়াজিদ বাহিনী’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি। এদিকে, তার এ বক্তব্য চলাকালে দরগাহ মাদরাসার ছাত্ররা এসে হট্টগোল শুরু করে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার এক পর্যায়ে সম্মেলন স্থলে ইটপাটকেল ও জুতা ছোড়ে। উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় দরগাহ এলাকায় থাকা ওই সংগঠনের কর্মীদের উপরও হামলা হয়। এর পর পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ সম্মেলন স্থগিত করে দিলে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে সম্মেলন স্থগিত করা হয়। দরগাহ মাদরাসার মুহতামীম মাওলানা মুফতি আবুল কালাম জাকারিয়া সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা ও দরগাহ মসজিদের ইমাম মরহুম হাফিজ মাওলানা আকবর আলী ও মাদরাসা নিয়ে একজন বক্তা কটূক্তিপূর্ণ বক্তব্য দিচ্ছিলেন। এতে এলাকার মানুষ প্রতিবাদ করেছে বলে তিনি শুনেছেন। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যায় সিলেটে সংবাদ সম্মেলন করেছে আঞ্জুমানে আশেকানে মোস্তফা (স.)- সাধারণ সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দিন আহমদ চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, মাজার শরীফ প্রাঙ্গণের জামেয়া কাসিমুল উলুম নামে মাদরাসা না হয়ে শাহজালাল (র.) নামে মাদরাসা হওয়া উচিত ছিল মন্তব্য করেন একজন বক্তা। এই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গে মাদরাসার ২০০ থেকে ৩০০ শিক্ষার্থী মাহফিলে হামলা চালায়। এতে তাদের চার কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। তিনি বলেন, মাহফিলে মাজার শরীফ বিরোধী কিংবা মাওলানা আকবর আলীর নাম জড়িয়ে কোন কটূক্তি করা হয়নি। এদিকে, এ ঘটনায় গতকালও ক্ষোভ জানিয়েছেন ছাত্ররা। তারা জানিয়েছেন, বিতর্কিত ও বেফাঁস মন্তব্য করে সিলেটবাসীর হৃদয়ে আঘাত করা হয়েছে। ওরা দরগাহ ও মাদরাসা নিয়ে বিতর্কিত বক্তব্য দিয়ে অপমান করেছে।