বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন বন্দী : তারেক রহমান
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখন বন্দী। এই বন্দী গণতন্ত্র মুক্তির লড়াইয়ে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের পাশাপাশি সমাজের সকল শ্রেণী পেশা বিশেষ করে শিক্ষাবিদ, গবেষক, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী ও সাস্কৃতিক কর্মীদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।
মঙ্গলবার ৪৪তম বিজয় দিবস উপলক্ষে যুক্তরাজ্য বিএনপির ৮ দিনব্যাপী কর্মসূচির শেষ দিনে ‘কনসার্ট ফর ডেমোক্রেসী ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিজয় উৎসবের অনুষ্ঠানে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সী হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল জাসাস, যুক্তরাজ্য শাখা এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
শিক্ষাবিদ, কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পী, গবেষকদের সমাজের বাতিঘর উল্লেখ করে তারেক রহমান বলেন, ক্ষমতাসীন অপশক্তির নানা অপবাদ কিংবা হামলা-মামলার ভয়ে আপনারা চুপ করে বসে থাকলে র্যাবের বন্দুক থেকে হয়তো সাময়িক রক্ষা পাওয়া যাবে কিন্তু নিজের বিবেকের কাছে রেহাই পাবেন না। ১৯৭১ সালের এইদিনে বাংলাদেশ হানাদার মুক্ত হয়েছিলো। সম্পূর্ণভাবে শত্রুমুক্ত হয়েছিলো। এখন ’৭১ এর সেই হানাদারদের সহযোগীদের কবলে বাংলাদেশ।
তারেক রহমান বলেন, ’৭১ সালে সমাজের সকল শ্রেণী মানুষের মরণপণ লড়াই যেভাবে শেখ মুজিবের ঐক্যবদ্ধ পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার খায়েশ মিটিয়ে দিয়েছিলো, বল বীর, বল উন্নত মমশীর ডাক দিয়ে সবাই ঐক্যবদ্ধ হলে গণবিরোধী শেখ হাসিনারও তার পিতার মতো অবৈধভাবে প্রধানমন্ত্রী থাকার স্বাদ মিটে যাবে।
তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে নিউইয়র্কের ম্যাডিসন স্কয়ার গার্ডেনে কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছিলো বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সমর্থনে আর ছোট্ট পরিসরে হলেও এই আয়োজন গণতন্ত্রের মুক্তির জন্য। গণতন্ত্র মুক্তির এই আন্দোলনেও জনগণের বিজয় হবেই ইনশাআল্লাহ।
অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ বলেন, বাংলাদেশী সংস্কৃতি এখন আগ্রাসনের শিকার। খুব সুকৌশলে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চলছে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের আন্তর্জাতিক বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটির সদস্য সচিব ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সহকারী প্রেস সচিব মুশফিুকল ফজল আনসারী, বিএনপির কেন্দ্রীয় আন্তর্জাতিক সম্পাদক মাহিদুর রহমান, জাসাসের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মনির খান, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি শায়েস্তা চৌধুরী কুদ্দুস, সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমদ, সাবেক আহবায়ক এম এ মালেক প্রমুখ।
কনসার্ট ফর ডেমোক্রেসিতে অংশ নেন বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের জনপ্রিয় শিল্পীরা। গান পরিবেশন করেন জনপ্রিয় শিল্পী রিজিয়া পারভীন, মনির খান এবং যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশি শিল্পীরা। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন তাসবীর চৌধুরী শিমুল এবং ফয়সল চৌধুরী।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি এম এ সালাম। সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন।
অনুষ্ঠানের ফাঁকে ২০১১ সালের ২৩ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্য স্টেট সিনেটের সর্বসম্মতিক্রমে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুুদ্ধের মহানায়ক হিসেবে উল্লেখ করে গৃহীত রেজ্যুলেশনের একটি কপি তারেক রহমানের হাতে তুলে দেন নিউজার্সি সিটি কমিটির চেয়ার সোলায়মান সেরনিয়াবাদ। এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলের বিভিন্ন পদক্ষেপেকে যুগান্তকারী উল্লেখ করে সিনেটের সর্বসম্মতিক্রমে পাসবৃত পৃথক একটি রেজ্যুলেশন কপি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব এডভোকেট রিজভী আহমদের হাতে তুলে দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সাবেক সহকারী প্রেস সচিব আশিক ইসলাম।
প্রসঙ্গত, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুুদ্ধের মহানায়ক হিসাবে উল্লেখ করে ২০১১ সালের ২৩ মে যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্য স্টেট সিনেটে সর্বসম্মতিক্রমে একটি রেজ্যুলেশন গৃহীত হয়। নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যে সিনেটের ১৬৭ বছরের ইতিহাসে দক্ষিণ এশিয়ার কোন নেতাকে এ ধরণের বিরল সম্মাননা প্রদান এটাই ছিলো প্রথম। ঐ সময়ে স্টেস সিনেটের নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের স্পিকার স্টিফেন সুইনীর আমন্ত্রনে তৎকালীন বিরোধাদলীয় নেতা বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া সিনেটে বক্তব্য রাখেন এবং এসময় তার হাতে রেজুলেশন তুলে দেয়া হয়।
একই সঙ্গে নিউজার্সি অঙ্গরাজ্যের সিনেট সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামলে বাংলাদেশে নারী শিক্ষা এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার নেয়া পদক্ষেপেকে যুগান্তকারী উল্লেখ করে পৃথক একটি রেজ্যুলেশন পাস করে। সেই সময় সরকার এবং বিরোধী দলের প্রতিটি সিনেটরের ভোটে সর্বসম্মতিক্রমে এই রেজ্যুলেশনটি পাস হয়।