ইমিগ্রেন্টদের অসহায়ত্বের সুযোগ নেওয়া বন্ধ হচ্ছে
ইমিগ্রেন্টদের দিয়ে কম বেতনে কাজ করানো বন্ধ করতে এবং প্রতিষ্ঠানগুলো যাতে কর্মপরিবেশের মান বজায় রাখতে বাধ্য হয়, সেজন্য নতুন আইন প্রণয়নের ঘোষণা দিয়েছে লেবার পার্টি। ২০১৫ সালের নির্বাচনে বিজয়ী হলে লেবার পার্টি এমন আইন করবে। গত ১৫ ডিসেম্বর সোমবার গ্রেট ইয়ারমাউথের নরফোকে দেয়া এক ভাষণে লেবার নেতা এড মিলিব্যান্ড এমন ঘোষণা দেন।
লেবারের প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী কোনো প্রতিষ্ঠান যদি ন্যূনতম মজুরীর কম পারিশ্রমিকের বিনিময়ে কাউকে চাকরি দেয় কিংবা ন্যূনতম কর্মপরিবেশ বজায় রাখতে ব্যর্থ হয় তাহলে তা ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এজন্য নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানকে ৬ মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত সাজা ভোগ করার বিধান রাখা হবে।
মিলিব্যান্ড বলেন, ইমিগ্রেশন নিয়ে নানা আলোচনা হচ্ছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বিদ্যমান মূল সমস্যা নিয়ে কনজারভেটিভ কিংবা ইউকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট পার্টি (ইউকিপ) কোনো কথা বলছে না। ইমিগ্রেন্টরা ব্রিটিশ নাগরিকদের চাকুরি বাগিয়ে নিচ্ছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এমন পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য কার্যকর পদক্ষেপের কথা দলগুলো বলছে না।
লেবার লিডার বলেন, নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরী না দিয়ে এবং কাজের ন্যূনতম পরিবেশ রক্ষা না করে প্রতিষ্ঠানগুলো ইমিগ্রেন্টদের কাজ করাচ্ছে। এমন বেতন কিংবা পরিবেশে ব্রিটিশ নাগরিকরা কাজ করবেন না। যার ফলে চাকুরিগুলো ইমিগ্রেন্টদের হাতে চলে যাচ্ছে। তিনি বলেন, এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য লেবার পার্টি ক্ষমতায় গেলে নতুন আইন করবে। ওই আইনের আওতায় ন্যূনতম বেতনের কমে কাজ দেয়া কিংবা কাজের পরিবেশের মান রক্ষা না করাকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হবে।
এড মিলিব্যান্ডের মতে, নিয়োগদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো বেতন এবং কর্মপরিবেশের নির্ধারিত মান বজায় রাখলে ব্রিটিশ নাগরিকরা এসব কাজ নিতে পারবেন। একইসাথে ইমিগ্রেন্টরাও মানসম্মত পরিবেশে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে পারবেন। এটা সকলের জন্য ইতিবাচক হবে বলে তিনি মনে করেন।
ইমিগ্রেশনবিরোধী দল ইউকিপের উত্থানের ফলে ইমিগ্রেশন নিয়ন্ত্রণ প্রশ্নে বিপাকে পড়েছে লেবার এবং ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ দল। ইউকিপ ইমিগ্রেন্টদের প্রবেশ অনেকটা বন্ধ করে দিতে চাইলেও কনজারভেটিভ এবং লেবার পার্টি তেমনটি ভাবতে পারছে না। এ জন্য তারা ইমিগ্রেশন নিয়ন্ত্রণে নানা বিকল্প পদক্ষেপের কথা তুলে ধরছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর রোববার রাতে প্রকাশিত ওয়ানপোল- এর জরিপ প্রতিবেদনে দেখা যায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে ব্রিটেন বের হয়ে যাক- এমনটা চান ৪২ শতাংশ ভোটার। অপরদিকে ৩১ শতাংশ ভোটার মনে করেন ব্রিটেনের উচিত ইইউর সাথে থাকা। বাকীরা বিষয়টিতে মনস্থির করতে পারেননি। একই জরিপে দেখা যায়, ৬০ শতাংশ ভোটার চান ইইউ ইমিগ্রেন্টদের ব্রিটেনে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটা নির্ধারণ করে দেয়া হোক। অপরদিকে ২৩ শতাংশ চান ইইউ ইমিগ্রেন্টদের ব্রিটেনে প্রবেশ পুরোপুরি নিষেধ করে দেয়া হোক।