আমেরিকার তালেবান নীতিতে পরিবর্তন
আমেরিকার বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ের প্রধান হুমকি তালেবান গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে গণেশ উল্টেছে দেশটির। আগামী বছরের শুরু থেকে তালেবানদের বিরুদ্ধে কোথাও কোনো অভিযান চালানো হবে না বলে জানিয়েছে আমেরিকা। এমনকি তালেবানের আধ্যাত্মিক নেতা ও সাবেক আফগান প্রধান মোল্লা ওমরকেও তারা তাদের অভিযানের তালিকা থেকে বাদ দিয়েছে। দেশটি বলছে, “হুমকি মনে না হলে আর কোনো তালেবানের বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হবে না।”
সম্প্রতি ওয়াশিংটনে এক সংবাদ সম্মেলনে পেন্টাগন মুখাপাত্র রিয়ার এডমিরাল জন কিরভি বলেন, “কেউ তালেবান সদস্য হওয়া মানেই এটা নয় যে আমেরিকা তার বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে। শুধু এই একটা কারণে হামলা চালানো যেতে পারে না।”ৎ
তিনি বলেন, “আমরা সশস্ত্র ও নিরস্ত্র তালেবানদের আলাদা তালিকা করবো।কেউ যুদ্ধ চালাতে চাইলে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। আমরা একমত হয়েছি যে, আমেরিকা ও তার মিত্র আফগানের বিরুদ্ধে যারা হামলা চালাতে চাইবে তারা নিরাপত্তার ঝুঁকি।”
গত শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা বলেন, “২০১৪ সালের শেষে আফগানিস্তানে আমরা আমেরিকান যুদ্ধের ইতি টানবো। আর দুই সপ্তাহ পরই ১৩ বছরের লড়াইয়ের ইতি ঘটবে।”
তালেবানের জন্য গ্রহণ করা নতুন নীতেতে মোল্লা ওমরের বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করা হলে কিরভি বলেন, “আমি জানি না, আমি এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবো কিনা। তালেবানের একজন উল্লেখযোগ্য নেতা হিসেবে এবং তালেবানরা আমেরিকা ও তার মিত্রদের জন্য হুমকি। তাদের বিরুদ্ধে আমেরিকান সেনাদের অভিযান চলবে। আমি এর চাইতে বেশি কিছু বলব না।”
আগামী ২ জানুয়ারি থেকে আফগানিস্তান নীতিতে বদল আনবে উল্লেখ করে কিরভি বলেন, “আমরা নীতিতে একটা আমূল বদল আনছি। আর তা ২ জানুয়ারি থেকে। তালেবান সদস্য হওয়া মানেই তারা আমাদের হামলার লক্ষ্য হতে পারে না।”
মোল্লা ওমর প্রসঙ্গে আগের অবস্থান পাল্টে এবার সাংবাদিকদের কিরভি বলেন, “২ জানুয়ারির পর থেকে মোল্লা ওমরের বিষয়টাতে আফগান জনগণই সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি বলেন, “এটাই আসল কথা। কোনো সরাসরি হুমকি না হলে আমেরিকা কিছু করবে না।”
প্রসঙ্গত, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আফগানিস্তান সরকারের প্রধান ছিলেন মোল্লা ওমর। ২০০১ সালের অক্টোবরে ওসামাব বিন লাদেনসহ অন্য জঙ্গিদের আশ্রয় দেবার অপরাধে তাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কার ঘোষণা করে আমেরিকা। তাকে ধরিয়ে দেবার জন্য দশ মিলিয়ন ডলার পুরস্কা ঘোষণা করা হয়।