সিরিয়ায় ৩শ ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস
সিরিয়ায় প্রায় তিন বছর ধরে চলা গৃহযুদ্ধে দেশটির প্রায় ৩০০ ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে। আর নিহত হয়েছে প্রায় ২ লাখ মানুষ।
জাতিসংঘ জানিয়েছে, গৃহযুদ্ধের কারণে সিরিয়ার শত শত শহর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রাগ-ঐতিহাসিক যুগের কয়েক শ নিদর্শন ও স্থাপন ধ্বংস হয়েছে, কোনোটি লুট হয়েছে আবার কোনো কোনোটি আংশিক গুঁড়িয়ে গেছে।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, ২৯০টি স্থাপনা সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর মধ্যে পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে ২৪টি ঐতিহ্যবাহী স্থাপনা, ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ১০৪টি স্থাপনা, ৮৫টি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং ৭৭টি স্থাপনা ধ্বংস হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
প্রাগ-ঐতিহাসিক যুগের বসতভিটার নিদর্শন রয়েছে এই সিরিয়ায়। তিন বছরের গৃহযুদ্ধে এই নিদর্শনের অধিকাংশ ধ্বংস হয়েছে। বহু প্রাচীন বাজার, ঐতিহাসিক মসজিদ এবং ক্রুসেডারদের অনেক দুর্গ নিঃশেষ হয়েছে। এতে করে সিরিয়া এখন এক বধ্যভূমিতে পরিণত হয়েছে।
জেনেভায় অবস্থিত জাতিসংঘের প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সংস্থার অপারেশনাল স্যাটেলাইট প্রোগ্রাম বিভাগ মঙ্গলবার সিরিয়া নিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে। দেশটির ১৬টি এলাকা থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করেছে সংস্থাটি। ১৬টির মধ্যে ছয়টি এলাকা জাতিসংঘের বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এগুলো হলো- আলেপ্পো, বসরা, দামেস্কো, উত্তর সিরিয়ার মৃত শহর, দ্য ক্রাক ডেস চেভালিয়ার্স এবং গ্রিকো-রোমা ওয়েসিস অব পালমায়রা।
সিরিয়ার আলেপ্পোয় প্রায় ৭ হাজার বছর আগে মানববসতি গড়ে ওঠে। এই শহরের অধিকাংশ প্রাচীন নিদর্শন গৃহযুদ্ধের ফলে ধ্বংস হয়েছে। আলেপ্পোতে সিরিয়ার সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ হয়েছে এবং এখনো তা চলছে।
বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন মার্কেটের মধ্যে আল মদিনা চক মার্কেটটি সবচেয়ে বড়। এটি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে। ১২ শতকের স্থাপনা উমায়াদ মসজিদ ধ্বংস হয়েছে।
এদিকে তিন বছর আগে আরব বসন্তের ঢেউয়ে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের পতনের জন্য শুরু হওয়া শান্তিপূর্ণ আন্দোলন শেষ পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। সরকারি বাহিনী ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সংঘর্ষে এ পর্যন্ত দেশটির প্রায় ২ লাখ মানুষ মারা গেছে। এর মধ্যে অধিকাংশ নারী ও শিশু।