৪০ সালা দস্তারবন্দী শুরু বৃহস্পতিবার : অতিথি বরণে প্রস্তুত সিলেটবাসী
সৈয়দ উবায়দুর রহমান, মুহাম্মদ আল- আমীন: র্দীঘ প্রতিক্ষিত ৪০ সালা দস্তারবন্দী মহাসম্মেলন বৃহস্পতিবার বাদ জোহর থেকে সিলেট সরকারী আলিয়া মাঠে শুরু হচ্ছে ৩ দিন ব্যাপী ঐতিহাসিক দস্তার বন্দীমহাসম্মেলন। অতিথি বৃন্দ আসতে শুরু করেছেন। জামেয়া কাসিমুল উলুমসহ গোটা সিলেটবাসী অতিথি বরণে প্রস্তুত। দরগাহ মাদ্রাসার এই মহাসম্মেলনকে কেন্দ্রকরে সর্বত্র উৎসাহের আমেজ বিরাজ করছে। প্রচারণা চলছে নানা মুখি। সম্মেলনে যোগদান করতে ইতিমধ্যে ইংল্যান্ড সহ বিভিন্ন দেশে থেকে আলেম উলামারা দেশে এসেছেন। তাদের মধ্যে রয়েছেন, মাওলানা মুফতি আব্দুল মুন্তাকিম, মাওলানা হেলাল আহমদ, মাওলানা মাহবুবুর রহমান তালুকদার, মাওলানা আব্দুর রব, মাওলানা নাজির উদ্দীন, মাওলানা শাহ আহমদ মাদানী, মাওলানা শেখ জাকারিয়া, মাওলানা সাজ্জাদুর রহমান আনসারী প্রমুখ।
মাওলানা শায়খ আকবর আলী (রহ.) প্রতিষ্ঠিত জামিয়া কাসিমুল উলুম দরগাহে হযরত শাহজালাল (রহ.) সিলেট ৪০ শালা দস্তারবন্দী মহাসম্মেলনের আয়োজন করেছে। দস্তারবন্দী হচ্ছে সেই চেতনার পূনরোজ্জীবনের প্রয়াস, যে চেতনার সবক দিয়ে হুজুর (সা.) হযরত আলী রা. কে তিনশত সাহাবির প্রধান বানিয়ে ইয়ামনে প্রেরণ করেছিলেন। প্রেরনকালে হযরত আলী (রা.) এর মাথায় স্বহস্তে বেঁধে দিয়েছিলেন আমামা। যে চেতনার অগ্রসৈনিক হিসেবে সারিয়ায়ে দুমাতুল জন্দলে সেনাপতি বানিয়ে প্রেরণ করেছিলেন হযরত আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা.) কে। যাত্রার প্রাক্ষালে প্রিয় সাহাবীর মাথায় স্বহস্তে পরিয়েছিলেন মোবারক দাস্তার। যে উদ্দেশ্য সাধনে শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী (রাহ.) কোরবান করেছিলেন জীবনের সাধনা, যে উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য ইলহামী ভিত্তিতে প্রবর্তন করা হয়োছিল উসূলে হাশতেগনা, যে উদ্দেশ্যকে সফল করে তুলতে আওলাদে রাসুল (সা.) সায়্যিদ হুসাইন আহমদ মাদানী (রহ.) এসেছিলেন সিলেটে। ছুটে গিয়েছিলেন কাদামাখা পথ, অন্ধকার জঙ্গল, বিস্তীর্ণ জলাভূমি আর নদী-নালা পেরিয়ে জনপদে জনপদে। এই জামিয়া অত্যন্ত ঐতিহ্যের অধিকরী। জামিয়া জন্ম দিতে লাগলো সেই সব ছাত্রকে, যারা উলূমে নববী আহরন করে সীরাতে রাসূলে (সা.)’র আলোয় বিধৌত হয়ে মানবিক চরিত্রের মূর্তপ্রতীক হয়ে ওঠেন। তারা চরিত্রহীতার অন্ধকারে আখলাকের পয়গাম নিয়ে চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ছেন। তারা দুর্নীতির মরুভূমিতে সুনীতির গোলাপ ফুটিয়ে তুলছেন। তারা মৃত হৃদয়ে জাগিয়ে তুলছেন রূহানিয়্যাতের চারাবৃক্ষ। তারা মানব সন্তানদের সত্যিকার মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সাধনা করছেন। তারা দেশ ও জাতিকে উপহার দিচ্ছেন কল্যাণের বসন্ত ও হেদায়াতের শতল জলধারা। যার ফলে জাতি জেগে উঠছে নতুন আত্মার স্পন্দনে। বাতিলের প্রতিরোধে তারা সুদৃঢ় ও বলিষ্ট। তারা কলম নিয়ে লড়ছেন। ভেঙ্গে দিচ্ছেন গোমরাহীর বিষদাঁত। তারা রাজনীতির ময়দানে গুঁড়িয়ে দিচ্ছেন তাগুতের আস্তানা। জাতিয় সংসদেও রেখেছেন পারলামেন্টারী ভূমিকা। তারা সুলুক ও ইহসানের ময়দানে হাজারো মানুষের আত্মশুদ্ধির যিম্মা আদায় করেছেন। তারা খতীব ও বক্তা হিসেবে করছেন ‘আমার বিল মুনকার নাহী আনিল মুনকার’ । তারা ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক হিসেবে সততা, আমানতদারী ও নিষ্ঠার স্বাক্ষর রেখে চলছেন। তারা ইমাম ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে ধর্মীয় ও জাগতিক দিকনির্দেশনা দিচ্ছন দেশ ওজাতিকে। তাদের বিস্তৃতি দেশের সীমানা পেরিয়ে এশিয়া, আফ্রিকা ও ইউরোপের মানচিত্রে হেদায়েতের সুফল ফলিয়ে চলছে অব্যাহত গতিতে। জামিয়ার ফুযালা ও আবনাদের কৃতিত্বে জামিয়া গর্বিত। নিশ্চয় বৃহত্তর সিলেট বাসীর জন্যও এটা গর্বের অধ্যায়। সৌভাগ্যের অধ্যায়। আল্লাহ যেনো এই দ্বীনী জামিয়া এবং তার সাথে সম্পৃক্ত সবাইকে কবুল করেন। আমীন ।