হিন্দু না হলে ‘বাংলাদেশিদের’ ভারত ছাড়তে হবে
‘বাংলাদেশিদের’ অবশ্যই দেশ ত্যাগ করতে হবে নতুবা হিন্দু ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হবে বলে হুমকি দিয়েছে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বজরং দল। এটি বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সশস্ত্র যুব সংগঠন। গতকাল মঙ্গলবার সংগঠনটির মেরুত শাখার আহ্বায়ক বলরাজ দুঙ্গার এ হুমকি দেন।
‘বাংলাদেশিদের’ দেশ ছাড়ার আল্টিমেটাম দিয়ে বলরাজ বলেন, “আমাদের প্রথম কথা হলো ‘বাংলাদেশিদের’ অবশ্যই ভারত ছাড়তে হবে। তারা এ দেশের জনশক্তির ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর যদি দেশে থাকতেই হয় তবে তাদেরকে হিন্দু হয়ে থাকতে হবে। আমাদের জীবন যাত্রার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।”
দেশটির উত্তর প্রদেশে সম্প্রতি আয়োজিত ধর্মান্তর অনুষ্ঠান সম্পর্কে তিনি বলেন, “আমরা শুধু এ সরকারের সময়ই নয়, কংগ্রেস সরকারের আমলেও এ অনুষ্ঠানের প্রচারণা চালিয়েছি। এটা একটা ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, এটা চলবে।”
বলরাজ বলেন, “বাংলাদেশিরা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় এখানে শরণার্থী হিসেবে এসেছিল কিন্তু ৪৩ বছর ধরে তারা এখানে বসবাস করছে। তাদের এখন চলে যাবার সময় হয়েছে।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশিরা ধর্মান্তর হলেই বৈধ হয়ে যাবে না। এর ফলে যেটা হতে পারে, সেটা হলো তারা সংখ্যায় আমাদের শক্তি বাড়াতে পারে।”
বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সুদর্শন চক্র বলেন, “আমি বজ্রং নেতাদের সঙ্গে পুরো একমত নই।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশিদের কোনো ছাড় দেয়া আমাদের সংগঠনের এজেন্ডা নয়। সরকারের দেয়া তথ্যমতে দেশে প্রায় তিন কোটি বাংলাদেশি রয়েছে। তাদের সবাইকে অবশ্যই এ দেশ ছাড়তে হবে। তাদের হিন্দুতে ধর্মান্তরিত করারতো কোনো প্রশ্নই উঠে না। তাদের কারণেই বেকারত্ব ও সন্ত্রাস বেড়ে যাচ্ছে।”
চক্র বলেন, “তারা (বাংলাদেশিরা) দেশবিরোধী কাজে লিপ্ত হচ্ছে। এসব অভিযোগ সত্ত্বেও বিগত সরকারেরা তাদের সুবিধা দিয়েছে। তাদের রেশন কার্ড ও ভোটার কার্ড দেয়া হয়েছে। কোনো কিছুই তাদের ভারত থাকার বৈধতা দিতে পারে না। তাদের চলে যেতে হবে।”
ভারতে কতজন ‘বাংলাদেশি’ রয়েছে তা নিয়ে কিছুটা মতানৈক্য রয়েছে। ২০০১ সালে সেনসাসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতে ৩০ লাখ বাংলাদেশি রয়েছে। ২০১২ সালে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোল্লাপেল্লাই রামচন্দ্র বলেন, গত এক দশকে ভারতে ১৪ লাখ ‘বাংলাদেশি’ প্রবেশ করেছে। ২০০৭ সালের ভারত সরকারের তথ্য অনুযায়ী দেশটিতে দুই কোটি ‘বাংলাদেশি’ বসবাস করছে বলে উল্লেখ করা হয়।–টাইমস অব ইন্ডিয়া।