লন্ডনের আলতাব আলী পার্ক : বাংলাদেশী রাজনীতি আর কলংকের নতুন অধ্যায়

Faisalরেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী শোয়াইব :: অনেকদিন লিখিনা, লিখতে চাইও না। চারিদিকে যা ঘটছে তার কতখানি ঘটনা আর কতখানি ক্রেডিট আর নেতার আশীবার্দের আশায় সাজানো নাটক তা নিয়ে প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন থাকলেও উত্তর অজানা।
লিখতে বসলে দেশের রাজনীতি চলে আসে। যে রাজনীতির সাথে নীতির দুরত্ব এখন বহুদুরের ।
দেশের রাজনীতি থেকে বোধকরি এখন আর শেখবার মতোন কিছু নেই। সবকিছুই ভাসছে নষ্ট জলে। অবশিষ্ট বলে কিছু কী আদৌ আর বাকি আছে? হয়তো অনেকেই দ্বিমত পোষন করতে পারেন আমার সাথে। ৪২ বছর পেরিয়ে গেছে আমাদের স্বাধীনতার। নতুন করে শুনতে হয়েছে বঙ্গবন্ধু রাজাকার। তারেক জিয়া লন্ডনে বসবাস করছেন দীর্ঘদিন ধরে। বেশ কিছুদিন তিনি নীরব ছিলেন, ছিলেন সব কিছুর বাইরে। সম্প্রতি তিনি সরগরম রাজনীতিতে। কোন কথা বললে মিডিয়া খাবে,অনলাইনে শেয়ার হবে,বাড়ানো যাবে পরিকল্পিত বিতর্ক সেটি তিনি আমাদের চেয়ে বোধকরি বেশিই জানেন। কথা নেই বার্তা নেই হুট করে ডেকে বসেন মিটিং। সেখানে মুখ দিয়ে যা আসে তাই বলে বেড়ান। তবে বসে নেই আওয়ামীলীগাররাও, তারা ও বলছেন। আমরা যারা সাধারন মানুষ অথবা মিডিয়ায় কাজ করি তাদের কথা আমরা প্রচার করি। প্রচার করতে যেয়ে শুনি কি বলছেন। তাদের সেসব বাক্য আর বার্তা সম্প্রচারে আমরাও হই লজ্জিত,বিব্রত। তাদের এসব বক্তব্য থেকে জাতি উপকৃত হচ্ছে, আদৌ এসব ফালতু কথা বলার দরকার কি দরকার নেই পাবলিক শুনছে কি না শুনছে সে সবের ধার ধারেন না তারা। জনগনকে যে আমাদের নেতারা মানুষ বলে মনে করেন কি না সেটিই এখন বুঝবার বিষয়।
প্রিয় পাঠক, আজকের এই লেখা আমাদের লন্ডনের বাঙালী কমিউনিটি নিয়ে। এ কমিউনিটি গড়ে উঠেছে তিল তিল করে। এখানে এই কমিউিনিটি গড়তে আওয়ামীলীগ কোনো অবদান রাখেনি , রাখেনি বিএনপি, রাখেনি রাজাকার নামের প্রানীগুলোও। লন্ডনের বাঙালী কমিউিনিটি গড়ে উঠেছে সাধারন মানুষের অবদানে। আমাদের পূর্ব পুরুষরা সেই ১০০ বছর আগে লন্ডনে এসেছিলেন। ৮০ দশকে বর্নবাদীদের আক্রমনে আলতাব আলী শহীদ হয়েছিলেন। সেই আলতাব আলীর রক্তে রঞ্জিত পার্কটিকে গতকাল মঙ্গলবার আরো একবার কলংকিত করলো বাংলাদেশের রাজনীতি। আজকে তারেক রহমান বা আওয়ামীলীগের নেতারা এখানে এসে লম্বা বক্তব্য দেন,দেখেন জনসমাগম। কিন্তু তারা জানেন না,এই কমিউনিটি আবাদ করতে যেয়ে আমাদের রাজপথে নিয়ত সংগ্রাম করতে হয়েছে বর্নবাদের বিরুদ্ধে,বর্নবাদীদের বিরুদ্ধে।
গতকালের আলতাব আলী পার্কের যে ঘটনা ঘটেছে, মুনজের চৌধুরী যা লিখেছেন আমাদের সময় ডটকমে। তাইই সঠিক। এরপর কিছু নামসর্বস্ব অনলাইন পত্রিকা যেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই সেগুলোতে নাটক সাজানোর চেষ্টা চলছে। অনলাইনের বেলাইন নিউজ পড়ে খালি ভাবি,কোথায় যাচ্ছে সাংবাদিকতা। এমন সাংবাদিকতার জন্য কি তারুন্য আর যৌবন কাটিয়ে দিয়েছিলাম গনমাধ্যম ভালবেসে। নৈতিকতার বাধ না মানা এ কেমন সাংবাদিকতা ?
এই সুদুর পরবাসে আওয়ামীলীগ-বিএনপির জার্সি পরিয়ে একজনকে আরেকজনের মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেয়া হচ্ছে।
কথা হচ্ছে দেশের এই নোংরা রাজনীতি লন্ডনে কেন? এমনিতেই বৃটেনের বাঙালীরা আছেন বিপদে। সম্প্রতি জঙ্গিবাদ নিয়ে বেশ কয়েকজন বাংলাদেশী বংশোব্দুত ব্রিটিশ নারী পুরুষ দন্ডিত হয়েছেন। বিলেতে এসব ঘটনাকে ঘিরে নতুন করে প্রশ্নের মুখোমুখি আমাদের কমিউনিটি। টাওয়ার হ্যামলেটস নিয়ে যা ঘটেছে,ঘটছে সে সব নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। রাজাকাররা যা করেছেন লন্ডনে সেটি হয়তো একদিন লিখবো। কিন্তু লিখে কি লাভ ?
নেতারা দেশ থেকে বিলতে আসেন। সওয়ার হন কর্মীদের ঘাড়ে। বক্তৃতা বিবৃতি দেন। প্রবাসীদের সব সমস্যার সমাধানের কথা দেন। খুশি হয়ে তাদের এই প্রবাসীরা দেন সুটকেস ভরে। আর যখন তারা দেশের উদ্দেশ্যে হিথ্রো এয়ারপোর্ট ছাড়েন,তখন ভুলে যান প্রবাসীদের সব দাবী। ভুলে যান ক্ষতি নেই,তবে আমাদের কমিউনিটিতে নতুন করে আর বিভক্তির রেখায় বিভাজন বাড়াবেন না প্লিজ। সে যে-ই হোন না কেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা জনাব তারেক রহমান।
লেখক: রেজা আহমদ ফয়সল চৌধুরী শোয়াইব
আহবায়ক-ইউকে বাংলা প্রেসক্লাব,ব্যাবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button