সামাজিক ব্যবসা দান খয়রাতের বিষয় নয় : ড. ইউনূস
নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সামাজিক ব্যবসা সমাজহিতকর বিষয়। তবে এটি কোন দান খয়রাতের বিষয় নয়। আবার মুনাফা অর্জনের বিষয়ও নয়। এটি হলো কৈ এর তেলে কৈ ভাজা। আপনি শুধু একবছর বিনিয়োগ করলেন। পরে আপনার টাকা আপনি ফেরত পেলেন। এরপর সেটা কাজে লাগিয়ে অর্জিত মুনাফা দিয়ে নিজের ব্যবসাটি সমপ্রসারণ করবেন। তবে এখানে অবশ্যই ব্যবসায়িক ভিত্তি থাকতে হবে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবে সামাজিক ব্যবসা নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। চট্টগ্রাম সামাজিক ব্যবসা কেন্দ্র লিমিটেড (সিএসবিসিএল) এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
ড. ইউনুস বলেন, সামাজির ব্যবসার পেছনে দুটো জিনিস বড় জরুরি। একটা হচ্ছে সৃজনশীলতা। মাথার মধ্যে এমন একটা পোকা থাকতে হবে। প্রথমে কোন কিছুকে মনে হবে অসম্ভব ব্যাপার। কিন্তু পোকার কারণে তা সম্ভব হয়ে যাবে।
প্রচলিত ব্যবসার সঙ্গে সামাজিক ব্যবসার পার্থক্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রচলিত ব্যবসা হলো ব্যক্তিহিতকর আর সামাজিক ব্যবসা হলো সমাজহিতকর। প্রচলিত ব্যবসায় ব্যক্তির মুনাফা অর্জনের বিষয় থাকে। সামাজিক ব্যবসায় মুনাফা নেয়ার কোন সুযোগ নেই। তবে সামাজিক ব্যবসা কোন এনজিও কার্যক্রমও নয়। এটি অবশ্যই ব্যবসায়িক কোম্পানি হতে হবে। এর একজন মালিকও থাকতে হবে। সামাজিক ব্যবসা কোন স্থানীয় বিষয় নয়। এটি বিশ্বমাপের জিনিস।
তিনি বলেন, সামাজিক ব্যবসা কোন দান খয়রাতের বিষয় নয়। ভর্তুকি দিয়ে কোন সমাধান হয় না বা লঙ্গরখানা দিয়েও সমাধান হয় না। কারণ এটি বেশি দিন টিকবে না। ব্যবসার শক্তি থাকলে সেটা চিরদিন চলবে।
তিনি বলেন, সামাজিক ব্যবসা যে আমি প্রথম আবিষ্কার করেছি তা নয়, এটা অনেক আগে থেকে ছিল। আমি এটাকে ব্র্যান্ডিং করছি। কিছু নিয়ম কানুনের মধ্যে যেন পরিচালিত হয়।
মতবিনিময় সভায় দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক বলেন, আমাদের দেশের অনেক সম্মানীয় ব্যক্তি ড. ইউনুসের গুরুত্ব বুঝতে পারেন না। এখন ইউনূস একটি নাম নয়, একটি প্রতিষ্ঠান।
ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. সিকান্দর খানের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম ক্লাবের প্রেসিডেন্ট এম এ ছালাম, চট্টগ্রাম সামাজিক ব্যবসা কেন্দ্রের পরিচালক ফারুক-ই আজম বীর প্রতীক, চট্টগ্রাম সামাজিক ব্যবসা কেন্দ্রের পরিচালক আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ।