এয়ার এশিয়া বিমানের ধ্বংসাবশেষের সন্ধান
এয়ার এশিয়ার নিখোঁজ বিমানের অন্তত ৪০ আরোহীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার নৌবাহিনী। ইন্দোনেশিয়ার মালিকানাধীন জাভা সাগরের বর্নিও দ্বীপের উপকূলে এসব মরদেহ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার কর্মকর্তারা। এয়ার এশিয়ার কিউজেড ৮৫০১ বিমানটি রবিবার সকালে সুরাবায়া বিমানবন্দর থেকে সিঙ্গাপুর যাওয়ার পথে ১৬২ আরোহী নিয়ে নিখোঁজ হয়। এর আগে কয়েকজন যাত্রীর মরদেহ জাভা সাগরের বর্নিও দ্বীপের উপকূলে পাওয়ার কথা জানিয়েছিলে উদ্ধারকারীরা।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ ও উদ্ধার বিভাগের পরিচালক এসবি সুপ্রিয়াদি বলেছেন, মরদেহগুলো এখনো অক্ষত রয়েছে। নৌবাহিনীর একটি জাহাজে করে এগুলো নিয়ে আসা হচ্ছে।
ভাসমান মরদেহের ছবি টেলিভিশন চ্যানেলে দেখানো হচ্ছে। হতভাগ্য যাত্রীদের স্বজনরা সুরাবায়া বিমানবন্দরের ক্রাইসিস সেন্টারে সমবেত হচ্ছেন। তাদেরকে কান্না করতে দেখা গেছে। অনেকে মাথায় হাত দিয়ে কাঁদছেন।
জাভা সাগরে যেসব ভাসমনা বস্তু সনাক্ত করা হয় তার মধ্যে মরদেহ, লাগেজ ও লাইফ ভেস্ট রয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার বিমান বাহিনীর ফার্স্ট লেফটেন্যান্ট টি উইবোয়ো বলেছেন, তিনি ৯৫% নিশ্চিত যে ধ্বংসাবশেষগুলো নিখোঁজ বিমানের।
নৌবাহিনী কর্মকর্তা মানাহান সিমোরাঙকিংর টিভিওয়ানকে বলেন, অনেক আরোহীকে পাওয়া গেছে। তবে তারা জীবিত না মৃত সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি।
তবে বিমান বাহিনী মুখপাত্র হাদি তাজানতো বলেন, কমপক্ষে একটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে দেশটির এয়ার ফোর্সের কর্মকর্তা অগাস দুই পুতরান্তো এক সংবাদ সম্মেলনে ‘ধ্বংসাবশেষ’ পাওয়ার দাবি জানান।
তিনি বলেন, প্লেনটির রাডারের সঙ্গে সর্বশেষ যোগাযোগের স্থান থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ১০টি ‘ধ্বংসাবশেষ’ পাওয়া গেছে। এছাড়া সাদা রঙের ছোট ছোট আরো কয়েকটি ‘বস্তু’ পাওয়ার কথা জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে অগাস বলেন, আমরা একটি জরুরি স্লাইড, প্লেনের দরজা ও চারকোণাকৃতি একটি বক্সের ছবি শনাক্ত করেছি।
এসময় তিনি প্লেনের দরজা, স্লাইড ও বক্সের ছবি সবার সামনে তুলে ধরেন। নিখোঁজ প্লেনটির উদ্ধার অভিযানে এখন পর্যন্ত এটিই সবচেয়ে বড় অগ্রগতি।
এছাড়া ইন্দোনেশিয়ার বরনো দ্বীপের জাভা সমুদ্রে প্লেনের বস্তু ‘সদৃশ’ অনেক কিছু ভাসতে দেখা গেছে বলে জানিয়েছে এএফপি।
এদিকে, উদ্ধার অভিযানকারী দলে থাকা এএফপির এক চিত্রগ্রাহক একটি লাইফ জ্যাকেট ও কমলা রঙের একটি টিউব শনাক্তের কথা জানিয়েছেন।
রবিবার ভোরে উড়াল দেওয়ার পর এয়ার এশিয়ার ফ্লাইটটি সকাল ৭টা ২৪ মিনিটের পর থেকে সংশ্লিষ্ট এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলে। স্থানীয় সময় সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিলো প্লেনটির।
এতে ৭ ক্রু ও ১৫৫ যাত্রী মিলিয়ে মোট ১৬২ জন আরোহী ছিলেন। এদের মধ্যে ২ পাইলট ৫ ক্রেবিন ক্রু ছাড়া ১৪৯ জন যাত্রীই ইন্দোনেশিয়ান। বাকি ছয়জনের মধ্যে তিনজন কোরিয়ান, একজন মালয়েশিয়ান, একজন সিঙ্গাপুরিয়ান ও একজন ফরাসি।