সুইডেনে চার দিনের ব্যবধানে আরেকটি মসজিদে আগুন
সুইডেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর এসলভে গত সোমবার একটি মসজিদ আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। মাত্র চার দিনের মধ্যে এটি হচ্ছে মুসলিম কেন্দ্র লক্ষ্য করে দ্বিতীয় অগ্নিকান্ডের ঘটনা। পুলিশ কর্মকর্তা মারি কেইসমার বলেন, আমরা ঐ অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি।
গত সোমবার ভোর রাত সোয়া ৩টার দিকে সুইডেনের দক্ষিনাঞ্চলীয় ছোট্ট শহর এসলভের ঐ মসজিদে আগুন লাগলে জরুরি বিভাগকে সাহায্যের জন্য আহ্বান জানানো হয়। টিটি নিউজের প্রতিবেদনে আরো জানানো হয় ঐ মসজিদ ভবনের যে কোনো একটি কক্ষে তরল দাহ্যে আগুন লাগার পর সেটি ছড়িয়ে পরে। দমকল কর্মীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে আগুনে ভবনের বড় ধরনের কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলে দাবি দমকল কর্মীদের।
দমকল বিভাগের মুখপাত্র গুস্তাফ সান্দেল সরকারি রেডিওকে বলেন, এ ধরনের অগ্নিকান্ডের স্বাভাবিক কোনো ব্যাখ্যা দেয়া সম্ভব নয়। সম্প্রতি মাসগুলোতে সুইডেনের মসজিদে হামলার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ক্রীসমাস ডেতে সুইডেনের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এসকেলেস্থানার একটি মসজিদে একই ধরনের এক অগ্নিকান্ডে কমপক্ষে পাঁচজন আহত হয়। পুলিশ জানায়, তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি কিভাবে এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয় দমকল বিভাগ আরো জানায়, ঐ মসজিদ ভবনের উপরের তলায় আবাসিক ইউনিট ছিল, তাদের সৌভাগ্য যে বড় ধরনের ক্ষতির আগেই তারা আগুন নিভিয়ে ফেলতে সক্ষম হন। মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২০১১ সালের রিপোর্ট অনুসারে সুইডেনের মোট জনসংখ্যা ৯০ লাখের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যা সাড়ে চার থেকে পাঁচ লাখ। ২০১৩ সালে সুইডেনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে তিন শতাধিক মুসলিমবিদ্বেষী হামলার খবর প্রকাশিত হয়। সুইডিশ ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর ক্রাইম প্রিভেনশনের (এসএনসিসিপি) মতে সুইডেনে দিন দিন এ ধরনের ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে। অপরদিকে এক সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে দুটি মসজিদে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় মুসলমানরা নিজেদের অনিরাপদ মনে করছে।
স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম সামির মুরিচ টিটি সংবাদ সংস্থাকে বলেন, দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে ইসলাম ফোবিয়ার কারণে এ ধরনের ঘটনা ঘটানো হচ্ছে। আমি এদের কাছেই বসবাস করছি তারা নিজেদের নিরাপদ মনে করছেন না। মুরিচ আরো বলেন, ঐ মসজিদের উপরে যারা বসবাস করেন তাদের বিষয়টি একটু ভাবুন তো, ঘটনার সময় তারা কতটা আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। আশঙ্কা প্রকাশ করে ঐ ইমাম আরো বলেন, এ ধরনের হামলার কারণে অনেক মুসলমান মসজিদ ছেড়ে দিতে বাধ্য হচ্ছে।
তিনি বলেন, “ইতোমধ্যেই আমি জানতে পেরেছি এ ধরনের হামলার ঘটনায় মসজিদে মুসল্লির পরিমাণ অনেক কমে গেছে। “আমি বুঝতে পারছি একটি অগ্নিকান্ড ঘটনা কিভাবে লোকদের আতঙ্কিত করে তোলে”।