প্রয়োজনে তৃতীয়, চতুর্থবারও জাতিসঙ্ঘে যাব : আব্বাস
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে আবারো উত্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস।
তিনি বলেন, ‘জাতিসঙ্ঘে উত্থাপিত জর্ডানের প্রস্তাবটি নিয়ে আমরা আবারো আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি।’ গত সপ্তাহে জাতিসঙ্ঘে এ প্রস্তাবটি উত্থাপন হলে ভোটাভুটিতে তা নাকচ হয়ে যায়। অবরুদ্ধ এলাকাগুলোতে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে ২০১৭ সালের ভেতর একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনে জাতিসঙ্ঘ প্রস্তাবটিতে আরো সহানুভূতিশীল হবে বলে আশাবাদী ফিলিস্তিন কর্তৃপ। গত ৩০ ডিসেম্বর জাতিসঙ্ঘে আমেরিকার ভেটোর কারণে প্রস্তাবটি নাকচ হয়ে যায়।
আব্বাস বলেন, ‘আমরা ব্যর্থ হইনি, জাতিসঙ্ঘ আমাদের ব্যর্থ করেছে। আমরা আবারো জাতিসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদে যাব, আর যাবই না কেন? এক সপ্তাহ পরেই আমরা জাতিসঙ্ঘে যাচ্ছি।’ পশ্চিম তীরের রামাল্লায় সরকারি কর্মকর্তাদের সাথে বৈঠক শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রস্তাবটি নিয়ে আলোচনা করছি, এটি নিয়ে মিত্রদের সাথেও আলোচনা হবে, বিশেষ করে জর্ডানের সাথে। প্রস্তাবটি পাসের জন্য তৃতীয়বার কেন দরকার হলে চতুর্থবারও যাব।’ গত মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের প্রস্তাবের পে জাতিসঙ্ঘে আটটি ভোট পড়ে। প্রস্তাব পাসের জন্য একটি ভোটের প্রয়োজন ছিল। প্রস্তাবের বিপে ভোট দেয় যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া।
এ দিকে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেছেন, ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক অপরাধ অদালতে যোগ দেয়ার মাধ্যমে ইসরাইলের সাথে সঙ্ঘাতের পথ বেছে নিলে ইসরাইল বসে থাকবে না। রোববার মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন।
নেতানিয়াহু বলেন, আমরা হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের সামনে আমাদের সৈন্যদের ও কমান্ডারদের টেনে নিতে দেবো না। ফিলিস্তিনে ফাতাহ ও হামাসের ঐক্যের সরকার গঠনের কথা উল্লেখ করে নেতানিয়াহু বলেন, হামাসের যুদ্ধাপরাধীদের সাথে মিত্রতা স্থাপন করেছেন, সেই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের নেতাদেরকেই বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সৈন্যরা শক্তি ও দৃঢ়তার সাথে ইসরাইল রাষ্ট্রকে রক্ষা করেছে। তারা যেমন আমাদেরকে রক্ষা করেছে, আমরাও ঠিক তেমন শক্তি ও দৃঢ়তার সাথে তাদের রক্ষা করব।
বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) সদস্যপদ লাভের জন্য রোমান আইনের প্রস্তাবনায় স্বার করেন ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। জাতিসঙ্ঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে তোলা এক প্রস্তাব নাকচ হওয়ার পরদিন বুধবার এ উদ্যোগ নেয়া হলো। আব্বাসের স্বারিত ওই প্রস্তাবনাটি জাতিসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুনের কাছে দেয়া হবে। যদি তিনি এতে সম্মতি দেন তবেই তা নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে পাঠানো হবে। এ দিন আরো ২০টি প্রস্তাবনায় স্বার করেন আব্বাস। ওই প্রস্তাবনাগুলোতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে আনুষ্ঠানিক আবেদন করা হয়েছে।
ফিলিস্তিন সংস্থাটির সদস্যপদ লাভ করলে পরবর্তী সময়ই নয়, বরং পূর্ববর্তী সময়ে ইসরাইলের কার্যকলাপের জন্য তাদের আদালতে তোলা হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। এর আগে গত বছরের ৮ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে ফিলিস্তিনের বিশেষ মর্যাদা গৃহীত হয়। সংস্থাটিতে সদস্যপদ লাভ করতে পারলে ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধের বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার চাইতে পারবে ফিলিস্তিন।