ফ্রান্সে হামলার প্রতিবাদ মিছিলে মানুষের ঢল

Franceরাজধানী প্যারিস ও এর আশাপাশে তিনদিন ধরে চালানো প্রাণঘাতী হামলার প্রতিবাদে ফ্রান্সজুড়ে আয়োজিত মিছিলগুলোয় মানুষের ঢল নেমেছিল। প্যারিস, অর্লেন্স, নিস, পাউ, তুলুজ ও ন্যানেতসের মতো বড় বড় শহরগুলোসহ সারা দেশে প্রায় ৭ লাখ মানুষ এসব মিছিলে অংশ নিয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
বুধবার প্যারিসে বিদ্রুপ সাময়িকী শার্লে এবদুর কার্যালয়ে হামলা চালানোর মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া তিনদিনের তান্ডবে সাংবাদিক, পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১৭ জন নিহত হন। পরে পুলিশের গুলীতে তিন হামলাকারী নিহত হন। হামলাকারীদের সহযোগীদের খোঁজে ফ্রান্সজুড়ে ব্যাপক অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। আসছে সপ্তাহগুলোতেও ফ্রান্সজুড়ে উচ্চ সতর্কাবস্থা জারি থাকবে বলে জানিয়েছেন ফরাসি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বার্নাড ক্যাজনভ। প্রতিবাদ মিছিলগুলোয় অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন লেখাসংবলিত ব্যানার বহন করলেও মিছিলগুলোর অধিকাংশই মৌন মিছিল ছিল। ব্যানারগুলোয় “আমি সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে”, “আমি শার্লি”। দুই ভাই শেরিফ কোয়াশি ও সাইদ কোয়াশি শার্লি এবদুর কার্যালয়ে হামলা চালিয়ে আট সাংবাদিক ও দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ ১২ জনকে হত্যা করেন। হামলার আহত হন আরো ১১ জন।
এরপর শুক্রবার আরেক হামলাকারী আমেদি কুলিবালি প্যারিসে ক্যাশার নামের একটি সুপার মার্কেটে কয়েক জনকে জিম্মি করেন। পরে এখানে চার জিম্মিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। এর আগে বৃহস্পতিবার দক্ষিণ প্যারিসে এক নারী পুলিশ কর্মকর্তা নিহত হয়েছিলেন, কুলিবালিই তাকে হত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্যারিসে ক্যাশার সুপার মার্কেটের সামনে আয়োজিত বড় একটি প্রতিবাদ সমাবেশে ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী ম্যানুয়েল ভ্যালস বলেছেন, “আজকে, আমরা সবাই শার্লি, আমরা সবাই পুলিশ কর্মকর্তা, আমরা সবাই ফ্রান্সের ইহুদি।”
প্যারিসজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল। ব্যাপক পুলিশ ও সেনা সদস্যের উপস্থিতি ছাড়াও অতিরিক্ত ৫০০ সেনা মোতায়েন করা হয়েছিল। দেশকে রক্ষার জন্য সব ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে ঘোষণা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাজনভ। ফ্রান্সের এই শোকের সময়ে দেশটির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে রোববার প্যারিসে অপর একটি মৌন প্রতিবাদ মিছিলে ফরাসি প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওঁলন্দসহ যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন, জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল, ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসসহ বেশ কয়েকজন বিশ্বনেতা অংশ নেন।
স্থানীয় সময় বিকাল ৩টায় প্যারিসের রিপাবলিকান প্রাসাদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলে ১০ লাখের বেশি মানুষ অংশ নেন। এই মিছিলের নিরাপত্তার জন্য প্যারিসের ছাদে ছাদে স্নাইপার মোতায়েনসহ ৫ হাজার ৫০০ পুলিশ ও সেনা মোতায়েন করে “নজিরবিহীন নিরাপত্তা” পদক্ষেপ নেয়া হয় বলে জানিয়েছেন ক্যাজনভ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button