সকলের সম্পদের তথ্য চাইতে পারবে বাংলাদেশ ব্যাংক

Bangladesh Bank Logoবাংলাদেশে বসবাসকারী এদেশীয় ও বিদেশি নাগরিকদের বৈদেশিক মুদ্রা এবং অস্থাবর বা অন্যান্য সম্পত্তি সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংককে তথ্য চাওয়ার অধিকারের বিধান রেখে ‘ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশন (সংশোধন) আইন-২০১৫’র খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। সোমবার সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররফ হোসাইন ভুঁইয়া সাংবাদিকদের বলেন, বৈদেশিক মুদ্রা ও সিকিউরিটিজ ক্রয়-বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে বিদ্যমান আইন সময়োপযোগী করতে আইন সংশোধনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আইনের খসড়ায় কোনো বিদেশি সংস্থার ফরেন এক্সচেঞ্জ এজেন্সির লাইসেন্স নেয়া এবং শাখা ও লিয়াজোঁ অফিস খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের আগাম অনুমতি নেয়ার বিদ্যমান আবশ্যিক বিধান রহিত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বোর্ড অনুমতি দেবে এবং বিষয়টি ৩০ দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে অবহিত করা হবে; যাতে সংশ্লিষ্ট সংস্থার বৈদেশিক মুদ্রা ও সিকিউরিটিজের লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করা যায়। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ১৯৪৭ সালের ফরেন এক্সচেঞ্জ রেগুলেশনের আওতায় বর্তমান বিদেশি মুদ্রা বুল্লিয়ন (স্বর্ণ ও অন্যান্য) মূল্যবান ধাতু লেনদেন হয়। আইনটি ১৯৭৬ ও ২০০৩ সালে সংশোধিত হয়। তিনি বলেন, বিদেশি বিনিয়োগ ও বৈদেশিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের প্রেক্ষাপটে বৈদেশিক মুদ্রার লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় বিদ্যমান আইনের সংশোধনী প্রয়োজন হয়ে পড়ে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, আইনটি সংশোধনের লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন নির্বাহী পরিচালকের নেতৃত্বে একটি কমিটি বিশেষ করে প্রতিবেশী দেশসহ অন্যান্য দেশের এ সম্পর্কিত আইন পর্যালোচনা করে এই প্রস্তাব প্রণয়ন করে। পরে এ নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে মতবিনিময় করা হয়। মতামতের জন্য এটি ওয়েবসাইটেও দেয়া হয়। তবে মতামত সংখ্যা ছিলো খুবই কম।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব নতুন আইনের বিভিন্ন দিক তুলে ধরে বলেন, বর্তমান আইনের সামান্য সংশোধনী আনা হয়েছে। আইনটি বাংলাদেশে বসবাসরত দেশি ও বিদেশি নাগরিক উভয়ের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। তিনি বলেন, খসড়া আইনে সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে অনেক পরিভাষা সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। এতে তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে ইলেকট্রোনিক লেনদেনের আওতায় আনতে মুদ্রা, রফতানি, আমদানি পণ্যের সংজ্ঞায় কর্মসম্পাদনার ধারণা সম্পৃক্ত করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে আইন লংঘনের ঘটনায় ফরেন এক্সচেঞ্জ ভিলারের বিরুদ্ধে জরিমানা করার ক্ষমতা দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আইনে ফরেন এক্সচেঞ্জ এজেন্সির লাইসেন্স নেয়ার আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেয়ার বিধান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বোর্ড (বিওআই) অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এজেন্ট হিসেবে কাজ করার অনুমতি দিতে পারে।
কোনো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের শাখা অথবা লিয়াজোঁ অফিস খোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমতি নেয়ার বিধানের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে সময় সাশ্রয় এবং বিনিয়োগবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে বিনিয়োগ বোর্ডকে (বিওআই) দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। এদিকে মন্ত্রিসভায় কূটনীতিক ও সরকারি পাসপোর্ট ভিসা নেয়া সংক্রান্ত বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যকার স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুমোদনের প্রস্তাব অনুমোদন লাভ করে। ২০১৪ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কুয়ালালামপুর সফরকালে এই চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button