বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি ব্যক্তি ও গোষ্ঠী স্বার্থনির্ভর
বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ ছাত্র রাজনীতিকে ব্যক্তি বা গোষ্ঠী স্বার্থনির্ভর কর্মকান্ড থেকে বেরিয়ে জাতির বৃহত্তর কল্যাণে আদর্শিক ও গণমুখী করে তুলতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর হিসেবে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৯তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রেসিডেন্ট উল্লেখ করেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জন্ম দিয়েছে অনেক বরেণ্য রাজনীতিবিদের। মূলত ছাত্র রাজনীতির পথ বেয়েই তাদের উত্থান ঘটেছে। নেতৃত্ব সৃষ্টিতে ছাত্র রাজনীতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে তা হতে হবে আদর্শিক ও জনকল্যাণমুখী।
নিজেদের সময়ের ছাত্র রাজনীতির কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘ষাটের দশকে আমরা যারা ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম, তাদের সবারই আদর্শ ছিল দেশ ও জনগণের কল্যাণ সাধন। সেখানে ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর স্বার্থের কোনো স্থান ছিল না।’
তিনি সমাবর্তনে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের হৃদয়ে ও মননে দেশের গৌরবময় ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করতে বলেন। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার পাশাপাশি বই পড়া, নিজ এলাকায় পাঠাগার তৈরি, দরিদ্র শিশুদের সহায়তা, রক্তদান ও বস্ত্রদানসহ মানবিক-সামজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নেয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
এর আগে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে চ্যান্নেলর কার্জন হলের সামনে থেকে শোভাযাত্রা করে সমাবর্তনস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে যান। জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হওয়া এ সমাবর্তন অনুষ্ঠান বেলা একটা ৫১ মিনিটে আবার জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে জেনেভাভিত্তিক মেধাস্বত্ব সংগঠন ওয়ার্ল্ড ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি অর্গানাইজেশনের (ডব্লিওআইপিও) মহাপরিচালক ফ্রান্সিস গ্যারিকে সম্মানসূচক ‘ডক্টর অব লজ’ ডিগ্রি দেয়া হয়।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘আমরা এখনো একুশ শতকের সব পর্যায়ের শিক্ষাকে বিজ্ঞানমুখী করে তুলতে পারি নি। আগামী ৫০ বছরে না হোক, অন্তত আগামী ২০ বছরে জাতীয় জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কী জাতীয় এবং কী পরিমাণ বিশেষায়িত জ্ঞানের প্রয়োজন, সে রূপরেখা তৈরি করে তা বাস্তবায়ন আমাদের শিক্ষা পরিকল্পনায় এখনো প্রাধিকার লাভ করে নি।
সমাবর্তনে ২৯ জনকে স্বর্ণপদক, ৪২ জনকে পিএইডি, ২০ জনকে এমফিল, ৫৬৫ জনকে স্নাতকোত্তর এবং তিন হাজার ১৬০ জনকে স্নাতকসহ মোট ছয় হাজার ১০৪ জনকে বিভিন্ন ডিগ্রি প্রদান করা হয়।