গঙ্গায় ভাসছে শতাধিক লাশ
ভারতের উত্তরপ্রদেশে গঙ্গা নদীতে শতাধিক মৃতদেহ ভেসে আসাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ইতিমধ্যেই এ নিয়ে প্রশাসনিক তদন্ত শুরু হয়েছে।
পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেল (আইন শৃঙ্খলা) এ সতীশ গণেশ জানান, ‘এ সব মৃতদেহ সাফিপুর এলাকার পেরিয়ার ঘাটের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। পুলিশ সব দিক খতিয়ে দেখছে।’
এদিকে, এসব বেওয়ারিশ মৃতদেহ বিভিন্ন পশু পাখিতে ছিঁড়ে খাওয়ায় এলাকায় পরিবেশ দূষণ সৃষ্টি হয়েছে।
উন্নাও জেলার অতিরিক্ত জেলা শাসক সরজু প্রসাদ বলেছেন, ‘আমরা স্থানীয় লোকদের পক্ষ থেকে মৃতদেহ ভাসার খবর পেয়েছি। এসব দেহ দাহ করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।’
জানা গেছে, পেরিয়ার ঘাটে পানির স্তর কম হওয়ার কারণে এসব লাশ নদীতে আটকে যাওয়ায় সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
পুলিশের আই জি (আইন শৃঙ্খলা) এ সতীশ গণেশ জানান, ‘প্রাথমিক তদন্তে স্থানীয় মানুষজন জানিয়েছেন, এসব অবিবাহিত মেয়েদের মৃতদেহ দাহ করার পরিবর্তে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়া হয়েছে।’ তবে অনেক দেহ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় তারা নারী না পুরুষ তা শনাক্ত করা যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।
পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) এ কে মিশ্র বলেছেন, খবর পেয়েছি বিঠুরের পেরিয়ার ঘাটে প্রায় ১০০ আধ পোড়া এবং পোড়া নয় এমন মৃতদেহ গঙ্গা নদীর পাড়ে দেখা গেছে। বিঠুর একটি পৌরাণিক স্থান, এজন্য অনেক মানুষ এখানে এসে মৃতদেহ ভাসিয়ে দিয়ে থাকে। উন্নাও জেলার পার্শ্ববর্তী কোনো কোনো এলাকার মানুষ তাদের স্বজনদের দেহ না পুড়িয়ে গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়। এসব দেহ মাঝপথে অনেক সময় আটকে থাকে। গঙ্গার প্রবাহ যখন জোরালো হয়, তখন একসঙ্গে অনেক দেহ ভেসে আসে। এ রকম ঘটনা এর আগেও হয়েছে।
মকর সঙ্ক্রান্তি উপলক্ষে গঙ্গায় স্নান করেন অনেকে। কিন্তু এখানে এভাবে মৃতদেহ মেলায় অনেকেই আর গঙ্গার ঘাটে যেতে চাইছেন না। গঙ্গা দূষণ মুক্তি অভিযানের আহ্বায়ক রামজি ত্রিপাঠি গঙ্গার ওই ঘাট থেকে মৃতদেহ মুক্ত করা এবং পরিস্কার পরিছন্ন করার দাবি জানিয়েছেন।
সামাজিক সংস্থা ইকো ফ্রেন্ডস-এর রাকেশ জয়সওয়াল বলেছেন, ‘অনেক মৃতদেহ এভাবে থাকার জন্য ঘাটের পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে।’ সূত্র: আইআরআইবি