শার্লির প্রচ্ছদে ফের ব্যাঙ্গচিত্র : বিশ্বব্যাপী নিন্দা
মহানবী (সা:)কে অবমাননা করে আবারো কার্টুন প্রকাশ করায় সারাবিশ্বে সমালোচনার মুখে পড়েছে শার্লি এবদু। সমাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে ম্যাগাজিনটির এ কাজের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে। কিছু সংবাদমাধ্যম ও ব্যক্তি একে বাকস্বাধীনতার বহিঃপ্রকাশ এবং প্রতিবাদ হিসেবে দেখলেও নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে প্রায় সব মহল।
মিসরের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় ইসলামি প্রতিষ্ঠান হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে এই কার্টুন উত্তেজনা বাড়াবে। রাষ্ট্রপরিচালিত দারুল ইফতা বলেছে, শার্লি এবদুর প্রচ্ছদ সারা বিশ্বের ১৫০ কোটি মুসলমানের অনুভূতির বিরুদ্ধে অন্যায় উসকানি। প্রচ্ছদছবি উভয় পক্ষের উগ্রবাদীদের সহিংসতার সুযোগ করে দেবে। যার মূল্য দেবে শুধু নিরপরাধ মানুষ।
তেমনি আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাকেন্দ্র এক বিবৃতিতে বলেছে, নতুন কার্টুন কেবল ঘৃণাই উসকে দেবে। এটি বিভিন্ন ধর্মের মানুষের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পক্ষে কাজ করবে না এবং ইউরোপীয় ও পশ্চিমা সমাজে মুসলমানদের মিশে থাকার পথে বাধা সৃষ্টি করবে। মিশিগানে অবস্থিত কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের নির্বাহী পরিচালক দাউদ ওয়ালিদ বলেছেন, নতুন করে মহানবী সা:কে নিয়ে কার্টুন প্রকাশ মুসলিমদের ক্রোধান্বিত করবে।
মধ্যপ্রাচ্যসহ অনেক মুসলিম দেশের সাধারণ নাগরিকেরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে শার্লি এবদুর এ পদপেকে ঘৃণ্য বলে উল্লেখ করেছেন।
সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনটির গতকাল বুধবার ৩০ লাখ কপি ছাপা হয়েছে। এর আগে মঙ্গলবার পত্রিকাটির প্রচ্ছদের ছবি দিয়ে খবর প্রকাশ করে ফরাসি দৈনিক লিবারেশন।
প্যারিসে অবস্থিত শার্লি এবদুর কার্যালয়ে গত বুধবার হামলা চালায় দুই বন্দুকধারী। ২০১১ সালে মহানবী সা:কে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক কার্টুন প্রকাশের কারণে চালানো ওই হামলায় পত্রিকাটির সম্পাদক ও চার কার্টুনিস্টসহ মোট ১২ জন নিহত হয়।
ওই হামলার ঘটনার প্রতিবাদে আবারো মহানবী সা:কে নিয়ে কার্টুন প্রকাশ করল পত্রিকাটি। এবারের কার্টুনে ‘আই অ্যাম শার্লি’ স্লোগান নিয়ে মহানবী সা:-এর গাল বেয়ে পানি পড়ার দৃশ্য দেখানো হয়েছে। ওপরে লেখা রয়েছে, ‘অল ইজ ফরগিভেন’ (সব ক্ষমা করা হয়েছে)। ম্যাগাজিনে কার্টুন প্রকাশের বিষয়টিকে এড়িয়ে যাওয়ার পক্ষপাতিত্বও কম নয়। অনেক মুসলিমই বিষয়টিকে পাত্তা না দেয়ার কথা বলেছেন। এর মধ্যে ক্যালিফোর্নিয়ার বিখ্যাত চিন্তাবিদ ইমাম জায়েদ শাকিরও রয়েছেন।
মুসলিমদের ধর্মানুভূতিতে আঘাত দিয়ে প্রচ্ছদ ছাপানোর বিষয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করা থেকে বিরত রয়েছে বিশ্বের অনেক নামকরা সংবাদমাধ্যম। এর মধ্যে রয়েছে বিবিসি, রয়টার্স, ইন্ডিপেনডেন্ট ও গার্ডিয়ান।