১৫ দিনের অবরোধে নিহত ২৯, অগ্নিসংযোগ ৫৭২ গাড়িতে

৫ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত হরতাল অবরোধের সময় দুর্বৃত্তদের হামলায় ১৮ যাত্রী, ১১ পরিবহন চালক ও শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। একই সময় সারা দেশে ৫৭২টি যানবাহনে আংশিক অগ্নিসংযোগ ৬৫টি যানবাহন সম্পূর্ণ পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তকারীরা। এছাড়া ভাঙচুর করেছে ৩ হাজার ২৩১টি যানবাহন। এছাড়াও সরকারি পরিবহন সংস্থা বিআরটিসির ৫০টি বাসে অগ্নিসংযোগ ও ৩১৭টি বাস ভাঙচুর করা হয়েছে।
বুধবার বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি নামে একটি সংগঠন এক প্রতিবেদন প্রকাশ করে এই তথ্য জানিয়েছে। বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ যাত্রীকল্যাণ সমিতি ‘গণপরিবহনে রাজনৈতিক সহিংসতা নিরসনে কর্মসূচি’ প্রকাশকালে সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ প্রতিবেদন তোলে ধরেন। ‘গণপরিবহনে রাজনৈতিক সহিংসতা নিরসন কর্মসূচির’ আওতায় দেশের দশটি জাতীয় ও পাঁচটি আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা এবং ইলেক্ট্রনিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত ও প্রচারিত প্রতিবেদন মনিটরিং করে গণপরিবহনে রাজনৈতিক সহিংসতা বিষয়ক এই প্রতিবেদন দেখানো হয়। প্রতিবেদন দেখানো হয়, অবরোধ থেকে রক্ষা পায়নি ৪ দফা রেলে নাশকতা চালানো হয়। এসকল ঘটনায় আহত হয়েছে ৫৫ হাজার ২১৭ জন যাত্রী। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন মহাসড়কে বিজিবি ও পুলিশ পাহারায় যাত্রী ও পণ্যবাহী বাস/ট্রাক চলাচলের চেষ্টা চললেও তবে তা খুবই সীমিত। কোটি টাকা দামের অভিজাত বাসগুলো রাস্তায় নামানো যাচ্ছে না সহিংসতার কারণে। এতে বলা হয়, বিরোধী পক্ষের রাজনৈতিক কর্মসূচি ঠেকাতে ক্ষমতাসীন দল কৌশল হিসেবে পরিবহন খাতকে ব্যবহার করছে।
সংবাদ সম্মেলনে ওই যাত্রীকল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, রাজধানীতে স্বাভাবিক পরিস্থিতি দেখে এটা মনে করার কোনো কারণ নেই যে, দেশ সচল আছে। আজ সারাদেশে প্রতিটি নাগরিকের জনমনে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। এসব সহিংসতায় যে সকল মানুষ মারা যাচ্ছে তারা সরকার বা বিরোধী পক্ষের নেতাকর্মী নয়, নিহত হচ্ছে সাধারণ মানুষ, যাদের অপর নাম যাত্রী। গণমানুষ বাঁচাতে হবে, বাঁচাতে হবে গণপরিবহন ব্যবস্থা। এসময় রাজনৈতিক কর্মসূচি ও আন্দোলনের ধরণ পাল্টানোর আহবান জানানো হয় রাজনৈতিক দলগুলোকে। সংগঠনের চেয়ারম্যান শরীফ রফিকউজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে লিখিত প্রতিবেদন পাঠ করেন সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী। এসময় অন্যান্যের মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রাজীব মীর, অধ্যক্ষ কামাল আতাউর রহমান, তেজগাঁও কলেজের অধ্যাপক আশিক খান নতুন, ব্র্যাকের গবেষক প্রিচিলা রাজ, সমিতির সহসভাপতি ডা. এএম শামিমুজ্জামান, যুগ্ম মহাসচিব এম মনিরুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রুমি, কেন্দ্রীয় সদস্য ইয়াসমিন আক্তার সীমা, মাহমুদ হোসেন, ইমাম হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button