শান্তি আলোচনা অব্যাহত রাখার আশা ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের
দীর্ঘ তিন বছর পর ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের মধ্যে পুনরায় সরাসরি শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে কয়েক ঘণ্টাব্যাপী বুধবার প্রথম দিনের মতো এই বৈঠক শেষ হয়েছে বলে উভয় দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এদিকে, পূর্বশর্ত হিসেবে আলোচনা শুরুর মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগে ইসরাইলের কারাগার থেকে ২৬ ফিলিস্তিনিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
ইসরাইলের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা এই আলোচনাকে ‘দীর্ঘ এবং গুরুত্বপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছেন। উভয়পক্ষই কঠোর গোপনীয়তা অবলম্বন করায় শান্তি আলোচনা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। কোনো অগ্রগতি ছাড়া তারা আলোচনা বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি নয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। একজন ফিলিস্তিনি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জেরুজালেমের কিং ডেভিড হোটেলে স্থানীয় বুধবার সময় রাত আটটার দিকে শান্তি আলোচনা শুরু হয়েছে। প্রতি সপ্তাহে জেরুজালেম এবং পশ্চিম তীরের জেরিকো শহরে পর্যায়ক্রমে বৈঠক চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে।
অধিকৃত পশ্চিম তীরে এবং পূর্ব জেরুজালেমে ইহুদি বসতি সমপ্রসারণ অব্যাহত থাকায় শান্তি আলোচনার ভবিষ্যত্ নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েই গেছে। এই বসতি স্থাপনকে কেন্দ্র করেই ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরে চলমান সরাসরি শান্তি আলোচনা ভেঙ্গে যায়। সমপ্রতি ইসরাইল অধিকৃত ভূমিতে আরো দুই হাজার ইহুদি বসতি স্থাপনের ঘোষণা দিয়েছে। প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) কর্মকর্তা ইয়াসির আবিদ রাব্বো বলেন, বসতি স্থাপন শান্তি আলোচনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। ভয়েস অব প্যালেস্টাইন রেডিওতে তিনি বলেন, ‘ইসরাইলের আচরণের কারণে শান্তি আলোচনা অবশ্যই যেকোনো সময় ভেঙ্গে যাবে।’ এছাড়া, বুধবার সংবাদপত্র জেরুজালেম পোস্টে এই আলোচনার সাফল্য সম্পর্কে ‘খুব কম’ আশাবাদী বলে মন্তব্য করা হয়েছে।
এদিকে, মধ্যপ্রাচ্য শান্তি আলোচনা নতুন করে শুরুর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা চুক্তির আওতায় ২৬ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে ইসরাইল। বুধবার প্রথম প্রহরে এসব বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়। আলোচনার শর্তানুযায়ী যে ১০৪ ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দেয়ার কথা তারই প্রথম ধাপে মুক্তি পেয়েছে এই ২৬ জন। পশ্চিমতীরে মুক্তিপ্রাপ্তদের স্বাগত জানাতে তাদের আত্মীয়-স্বজনরা ভোররাতে রাজধানী রামাল্লার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ প্রাঙ্গণে জড়ো হয়। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। উঁচু একটি মঞ্চে পশ্চিমতীরের ১১ ফিলিস্তিনের প্রত্যেককে দুই গালে চুমু খেয়ে স্বাগত জানান আব্বাস।