‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড ২০১৫’-এর উদ্বোধন
‘ফিউচার ইজ হিয়ার’ শ্লোগানে তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সম্মেলন ও প্রদর্শনী ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫’ এর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সোমবার উৎসবের উদ্বোধনী ঘোষণা করেন তিনি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা জনাব সজীব ওয়াজেদ জয়।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস) সভাপতি শামীম আহসান। এতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সচিব শ্যাম সুন্দর সিকদার।
উদ্বোধনী বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ তুলে ধরে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ এখন আর স্বপ্ন নয়, ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল মানুষ পেতে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও জনসেবা প্রদানে আমাদের উল্লেখযোগ্য সাফল্য অর্জিত হয়েছে। আমাদের দেশের তরুণদের মেধার অভাব নেই। প্রয়োজন মেধা বিকাশে কার্যকর উদ্যোগ। এজন্য বর্তমান সরকার নানা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পের উন্নয়নে বেসিসের বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, বেসিস আইটি শিল্পের জন্য ২৩ হাজার উপযুক্ত জনবল তৈরি করেছে। ২০১৮ সালের মধ্যে ১০ লাখ নতুন ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তৈরির কাজ করছে।
তিনি তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে রফতানির পরিমাণ চলতি বছর ২৫০ মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, ২০১৮ সালের মধ্যে এই খাত থেকে ১ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে তার সরকার।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, মানুষের জীবনের নানমুখী সুবিধা যুক্ত করাই হলো ডিজিটাল বাংলাদেশের লক্ষ্য। দুর্নীতি কমাতে সকল পর্যায়ে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানো হচ্ছে। ভবিষ্যতে আমরা প্রযুক্তি খাতে কোন দেশের পিছিয়ে থাকবো না। বাংলাদেশ পোশাক খাতের চেয়ে বেশি আয় করবে প্রযুক্তি খাতে।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, অল্পদিনের মধ্যেই বাংলাদেশে বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ডাটা সেন্টার স্থাপিত হতে যাচ্ছে। এর মাধ্যমে সরকারের সকল তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। এছাড়াও ভাড়া দিয়ে বাড়তি আয়ের সুযোগ তৈরি হবে।
এবারের তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে নাগরিক সেবা এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা উপস্থাপনে ‘ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড-২০১৫’-এ থাকছে চারটি পৃথক প্রদর্শনী। আয়োজনে প্রদর্শনীর মধ্যে রয়েছে বেসিস সফট এক্সপো, ই-গভর্নেন্স এক্সপো, মোবাইল ইনোভেশন এক্সপো এবং ই-কমার্স এক্সপো। পাশপাশি ই-কমার্স জোন, বিপিও ফোরাম, ডেভেলপারস ফোরাম, আইটি ক্যারিয়ার কনফারেন্স এবং আউটসোর্সিং ফোরামের মতো নানা উদ্ভাবনী উদ্যোগের পসরা নিয়ে হাজির থাকছে তরুণ প্রযুক্তিবিদরা।
এসব প্রদর্শনী ছাড়াও সম্মেলন থাকছে প্রায় ২০টি সেমিনার, ১১টি কনফারেন্স এবং ১৩টি টেকনিক্যাল সেশন, সিএক্সও নাইট এবং ক্লাউড ক্যাম্প। সেমিনারের মধ্যে ব্যবসা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ১১টি, ই-গভর্নেন্স নিয়ে ১১টি এবং ৩টি স্পেশাল সেশন রয়েছে।
এ আয়োজনে ২৫টিরও বেশি দেশ থেকে যোগ দিচ্ছেন ৮৫ জন আইটি বিশেষজ্ঞ ও উদ্যোক্তা। তথ্যপ্রযুক্তির নিয়ে আয়োজিত সেমিনার ও টেকনিক্যাল সেশনে অভিজ্ঞতা তুলে ধরবেন তারা।