ইয়েমেনে মার্কিন দূতাবাস বন্ধ
ইয়েমেনে নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতির কারণে দেশটিতে মার্কিন দূতাবাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেয়া হয়েছে এবং দূতাবাস কর্মী ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর মঙ্গলবার জানায়, ‘ইয়েমেনের রাজধানী সানায় নিরাপত্তা পরিস্থিতিরি অবনতির কারণে আজ সেখানকার মার্কিন দূতাবাস ও এর কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে এবং দূতাবাস কর্মীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে।’
পররাষ্ট্র দফতর জানায়, ‘দূতাবাসের সব নিয়মিত ও জরুরি সেবা পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।’ একইসাথে মার্কিন নাগরিকদের ইয়েমেন ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ইয়েমেনে ভ্রমণ না করার এবং বর্তমানে যারা ইয়েমেন রয়েছেন তাদেরকে জরুরিভিত্তিতে ওই দেশ ত্যাগ করার আহবান জানিয়েছে পররাষ্ট্র দফতর। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও গণ অসন্তোষের কারণে ইয়েমেনে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা হুমকি জারির কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ইয়েমেনের শিয়া মুসলিম মিলিশিয়ারা সম্প্রতি রাজধানী সানা দখল করে নিয়েছে। দেশটিতে সঙ্কট সমাধানের লক্ষ্যে জাতিসঙ্ঘের মধ্যস্থতায় দ্বিতীয় দিনের মত আলোচনার প্রেক্ষাপটে বিদ্রোহীরা মঙ্গলবার ইয়েমেনকে ‘অস্থিতিশীল’ করার যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছে।
এক রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যূত্থানের পর ২০১২ সালের শুরুতে ইয়েমেনের দীর্ঘদিন ধরে থাকা প্রেসিডেন্টে আলী আব্দুল্লাহ সালেহ পদত্যাগ করার পর থেকে দেশটিতে স্থিতিশীলতা আসেনি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে আল কায়েদার যুদ্ধ এবং দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন।
ইয়েমেন দূতাবাস বন্ধ করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জেন সাকি কোনো কথা বলতে রাজি হননি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সব ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছি।’
গত সেপ্টেম্বরে বিদ্রোহী শিয়া মুসলিম গোষ্ঠি হুতি’র যোদ্ধারা রাজধানী দখল করে নেয়। এক মাস আগে তারা প্রাসাদ দখল করে প্রেসিডেন্ট আব্দ-রাব্বু মনসুর হাদি ও তার সরকারকে পদত্যাগে বাধ্য করে।
কয়েক বছর ধরে চলা তীব্র রাজনৈতিক সঙ্কটের পর আঞ্চলিক, রাজনৈতিক, গোষ্ঠিগত ও সম্প্রদায়গত হানাহানিতে বিভক্ত হয়ে পড়া ইয়েমেন এখন পূর্ণমাত্রার গৃহযুদ্ধের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
বিশ্বের শীর্ষ তেল রপ্তানীকারী দেশ সৌদি আরবের সাথে দেশটির দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। ইয়েমেনের পরিস্থিতি সৌদি আরবের জন্যও অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।