খালেদা জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে নন : শেখ হাসিনা

Hasinaবিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের পক্ষে নন মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বিরোধী দলীয় নেতা ১৫ আগস্ট জন্মদিন পালন করে পাকিস্তানীদের বিশ্বাস করিয়েছেন যে তিনি এখনো পরাজিত শক্তির সাথে আছেন। বিয়ে-কাবিন, সার্টিফিকেট কোথাও খালেদা জিয়ার জন্ম তারিখ ১৫ আগস্ট নেই। তারপরও তিনি জাতির এ শোকের দিনে জন্মদিন পালন করেন।’
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে শুক্রবার আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য আমির হোসেন আমু, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী, মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, ঢাবি ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া প্রমূখ।
স্বাধীনতাবিরোধী চক্রকে সামরিক শাসকরা লালন করেছে এবং বর্তমান বিএনপি তার ধারাবাহিকতা রক্ষা করে চলেছে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘পঁচাত্তরের খুনীদের জিয়াউর রহমান পূনর্বাসন করেছিল। এরশাদ তাদের দিয়ে ফ্রিডম পার্টি গঠন করে। কর্ণেল ফারুককে রাষ্ট্রপতি প্রার্থী করে। শুধু তাই নয় এসব সামরিক শাসকরা শাহ আজিজকে প্রধানমন্ত্রী বানায়, আবদুল আলীমকে মন্ত্রী বানায়, আবদুল মান্নানকে মন্ত্রী করা হয় পরে উপদেষ্টা করা হয়। এর ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া কর্ণেল হুদা, কর্ণেল রশীদকে ভোটারবিহীন নির্বাচনে নির্বাচিত করে আনেন। পরে স্বাধীনতাবিরোধী নিজামী-মুজাহিদের গাড়িতে ৩০ লাখ শহীদের রক্তে ভেজা পতাকা তুলে দেন। খুনীদের মদদ দেয়াই তাদের চরিত্র। যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করাই তাদের কাজ। প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন।
প্রধানমন্ত্রীর আধঘণ্টার বক্তব্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকান্ডের বিবরণ তুলে ধরে বলেন, দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা কী পর্যায়ে এসেছে, বিদ্যুতের অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে, মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হচ্ছে। আওয়ামী লীগ পঁচাত্তর পরবর্তীতে দুইবার ক্ষমতায় এসেছে ততবারই বিশ্ব থেকে বাংলাদেশ পুরষ্কৃত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে কী হবে একবার ভাবুন। এ কথাটা দেশের জনগণকে মনে রাখতে হবে।’ দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, যারা মসজিদে আগুন দেয়, কোরআন পোড়ায় তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য আবদুল লতিফ সিদ্দিকী অপশক্তিকে প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, ‘তাদের প্রতিহত করতে না পারলে আমি বিদ্রোহ করব।’ দলের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সব কিছুর জন্য প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ লাগবে কেন। যখন বাড়ি-গাড়ি করেন তখন কোথায় থাকে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ। বিরোধী দলীয় নেতার ‘ভূয়া’ জন্মদিন উদযাপনের খবর প্রকাশ করায় গণমাধ্যমের বিষোদ্গারও করেন তিনি। শোক দিবসে যারা কেক কেটে ফুর্তি করে, তাদের সাথে কোনো আলোচনা, সংলাপ ও আপস নয় মন্তব্য করে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘বিএনপি যুদ্ধ শুরু করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। তারা শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চায়। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। তাই তাদের সাথে কোনো সমঝোতা হবে না, সংলাপ হবে না। শেখ হাসিনার বাবা-মা, ভাই-বোনদের হত্যাকারী এবং আমার পিতার হত্যাকারীদের সাথে কোনো আপস করব না।’ তিনি আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনা যে সিদ্ধান্ত নেন, তা সবাইকে একাগ্রচিত্তে মেনে নিতে হবে। নইলে আমার-আপনার কারোই মঙ্গল হবে না।’

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও দেখুন...
Close
Back to top button