কোকোর মাগফেরাত কামনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল

Kokoশহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে এবং বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ছোট ভাই মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফেরাত কামনায় এক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ১৫ ফেব্রুয়ারি রোববার পূর্ব লন্ডনের ওয়াটার লিলি হলে অনুষ্ঠিত হয়। সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকের আহ্বায়ক এম এ মালেকের সভাপতিত্বে ও সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তারা মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফেরাত, তার কর্মময়জীবন ও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট নিয়ে আলোচনা করেন।
দোয়া মাহফিলে মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়। এছাড়া দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও দেশনায়ক তারেক রহমানের সুস্থতা কামনা করে তাদের ধৈয্য ধারণের ক্ষমতা দেয়ার জন্য পরম করুণাময়ের কাছে দোয়া করা হয়। দোয়া পরিচালনা করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি শাহ সদরুদ্দিন। কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন কারী আশিক মিয়া।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকের আহ্বায়ক এম এ মালেক, ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি শাহ সদরুদ্দিন, ড. কে এম এ মালিক, ব্যারিষ্টার আবু বকর মোল্লা, ব্যারিষ্টার এম এ সালাম, বিশিষ্ট সাংবাদিক অলি উল্লাহ নোমান, মাওলানা আব্দুল হাই, মাওলানা সৈয়দ জামাল, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল সভাপতি পারভেজ মল্লিক, যুক্তরাজ্য বিএনপির সহসভাপতি আখতার হোসেন, সাবেক ছাত্রনেতা নসরুল্লাহ খান জুনায়েদ, শরীফুজ্জামান চৌধুরী তপন, প্রফেসর ফরিদ উদ্দিন, আতিকুর রহমান চৌধুরী পাপ্পু, শামসুর রহমান মাতাব, তাজ উদ্দিন, আমিনুর রহমান আকরাম, কামাল উদ্দিন, খসরুজ্জামান খসরু, নাসির আহমেদ শাহীন, নজরুল ইসলাম, ইটালী বিএনপি নেতা বাবু, ব্যারিষ্টার তমিজ উদ্দিন, ব্যারিষ্টার হামিদুল হক আফিন্দি লিটন, ব্যারিষ্টার আলিমুল হক লিটন, মাসুদ আলী, ফিরোজ চৌধুরী, মশাইদ মিয়া, আমিনুল ইসলাম। যুবদলের সিনিয়র সদস্য কামাল চৌধুরী, সিনিয়র সদস্য রহিম উদ্দিন, সিনিয়র সদস্য সাব্বির আহমেদ ময়না।
সিটিজেন মুভমেন্ট ইউকের আহ্বায়ক এম এ মালেক বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মরহুম আরাফাত রহমান কোকোর রুহের মাগফেরাত কামনা করে বলেন, শুধুমাত্র অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারণে দীর্ঘদিন পরিবারের সবার কাছ থেকে দুরে থেকে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন কোকো। শেষের দিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করার পর খুবই অস্থিরতায় ভুগছিলেন তিনি। আর এ থেকেই হার্ট এ্যাটাকে আক্রান্ত হন । মঈনÑফখরুদ্দিন সরকারের নির্যাতনে অসুস্থ্য হয়ে মরহুম আরাফাত রহমান কোকো চিকিৎসার জন্য মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন। পরে সেই সেনাশাসিত সরকারের সাথে সমঝোতা করে ক্ষমতায় গিয়ে শেখ হাসিনা কোকোকে দেশে ফিরতে দেয়নি। কোকোর মৃত্যুর জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী।
এম এ মালেক বলেন, ৫ জানুয়ারীর প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে শেখ হাসিনা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছেন। ক্ষমতা দখলের পর থেকেই অবৈধ শেখ হাসিনা বিএনপি এবং ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীদের হত্যা, খুন, গুম অব্যাহত রেখেছেন। এই সরকারকে জনগণ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। বাংলাদেশের তিনবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে তার গুলশান কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। গত ৫ দিন যাবত তার কার্যালয়ে খাবার ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। অভুক্ত রয়েছেন রয়েছেন গণতন্ত্রের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। এম এ মালেক বলেন, ভোটারবিহীন হাসিনার অবৈধ সরকার এখন বেগম জিয়াকে গ্রেপ্তার করার চক্রান্ত করছে। তাদের মনে রাখা দরকার, ক্রসফায়ারের নামে বেপরোয়া বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ডের পরও আন্দোলনকারীরা যখন থামেনি এ অবস্থায় খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তারের অপচেষ্টা শেখ হাসিনার পতন ডেকে আনবে। বাংলাদেশে পদে পদে মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে উল্লেখ করে এম এ মালেক বলেন, ৫ জানুয়ারীর নির্বাচন বৃটেন, আমেরিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এই নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয়েছে। ভোটারবিহীন এই নির্বাচনে জনগণের আশা আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটেনি। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, কানাডা, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশ উদ্বিগ্ন। তারা গণতন্ত্রের স্বার্থে সংলাপের মাধ্যমে একটি একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে।
ইসলামী চিন্তাবিদ মুফতি শাহ সদরুদ্দিন বলেন, দেশ এখন এক গভীর সংকটে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনের প্রধান ২০ দলীয় জোট নেত্রী বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে সরকার বন্দি করে নানাভাবে হয়রানী করছে। তার কার্যালয়ে খাবার ঢুকতে না দিয়ে বেগম খালেদা জিয়াকে অভুক্ত রেখে এই সরকার কাফেরের পরিচয় দিয়েছে। তিনি বলেন, সমগ্র বাংলাদেশে আওয়ামীলীগ সরকার সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। হত্যা, গুম, খুন, নির্যাতন ও মিথ্যা মামলা দিয়ে গোটা দেশকে কারাগারে পরিণত করেছে। নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়ে কেউই ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, এ অবৈধ সরকারও পারবে না। শেখ হাসিনাকে একদিন এইসব অপকর্মের জন্য বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। তিনি এই সরকারকে ইসলামের শত্রু আখ্যায়িত করে গণতন্ত্র পুণরুদ্ধার ও ভোটের অধিকার ফিরে পেতে জনগণের প্রতিনিধিত্বশীল সরকার গঠনের জন্য ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে আন্দোলন শুরু শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত সে আন্দোলন চালিয়ে যাবার আহ্বান জানান।
ড. কে এম এ মালিক বলেন, আওয়ীমী দুঃশাসনে দেশ আজ এক গভীর সংকেট। অবৈধ সরকারের দুর্নীতি, অন্যায় এবং অত্যাচার এখন সীমা ছাড়িয়ে গেছে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও দেশের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য যেসব বাহিনী রয়েছে তাদেরকে বিরোধী দল ও মতের নেতাকর্মীদের দমনের জন্য ব্যবহার করছেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, চলমান সংকট নিরসনে সংলাপের মাধ্যমে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের কোন বিকল্প নেই। আর সংলাপের উদ্যোগ শেখ হাসিনাকেই নিতে হবে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন কোন নির্বাচনই নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচনের এক বছর পর গত ৫ই জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী গণতন্ত্রের বিজয় উদযাপন করছেন। বর্ষপূর্তি পালন করেছেন। যে নির্বাচনে ১৫৪ জন বিনা প্রতিদ্বদ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। জনগণ যে নির্বাচনে ভোট দেয়নি। এটা সত্যিই হাস্যকর।
ব্যারিষ্টার আবু বকর মোল্লা বলেন, দুঃশাসন টিকিয়ে রাখতে রাষ্ট্র এখন ভয়াল ঘাতকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও নাগরিক অধিকারহীন একদলীয় রাষ্ট্র ব্যবস্থায় সরকারী কর্মচারীদের দলের আনুগত্য করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সেখানে নিরপেক্ষতার ও জবাবদিহিতার প্রশ্ন করা যায় না। শেখ হাসিনা গণতন্ত্রের খোলসে আসলে বাকশালকেই কায়েম করছে। অবৈধ শেখ হাসিনা সরকার ২০ দলীয় জোট নেত্রী বেগম জিয়াকে বন্দী করার নানা ফন্দি করে বাকস্বাধীনতার আইনগত অধিকারকে শূলে চড়িয়ে গণমাধ্যমকে শুধুমাত্র সরকারের সকল বার্তা প্রচারের নির্দেশ দিয়েছে। তিনি বলেন, নির্যাতন ও নিপীড়ন চালিয়ে কেউই ক্ষমতায় টিকে থাকতে পারেনি, এ অবৈধ সরকারও পারবে না। শেখ হাসিনার পতন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মানবাধিকার বিষয়ক উপদেষ্টা ব্যারিষ্টার এম এ সালাম বলেন, বাংলাদেশে একদলীয় বাকশালী শাসন চলছে। রাষ্ট্র ও প্রশাসনকে আওয়ামীকরণ করা হয়েছে। বিএনপি‘র ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ও সিনিয়র নেতাদেরসহ সারাদেশে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে কারান্তরীণ করে বর্তমান অবৈধ সরকার গায়ের জোরে দেশকে দখলে রেখে ভয়াবহ দুঃশাসন চালিয়ে যাচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে নাশকতা সৃষ্টি করে বিরোধী দলের ওপর দোষ চাপানো হচ্ছে। আর এ ক্ষেত্রে গণমাধ্যমগুলোকে কড়াকড়িভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে সরকার। তিনি অবিলম্বে শেখ হাসিনার পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি জানান।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সৈয়দ মুহিবুল ইসলাম রিপন, রাজিব আহমেদ খান, সাইফুল ইসলাম মেরাজ, আবু নাসের শেখ, আমিনুল ইসলাম, জাহিদুর রহমান গাজী, শাবউদ্দিন মজুমদার, মীর মাসুদ সিজান, মনোয়ার হোসেন, মুরাদ হোসেন, খোকন আলী আকবর, আব্দুল কাইয়ুম, শাহজাহান আহমেদ, জুয়েল আহমেদ, মোঃ হাবিবুর রহমান রাজন, শহিদুল ইসলাম স্বপন, ইউসুফ রায়হান গোলাপ, টিটু আহমেদ, আরমানুল আরোফিন, মোঃ সুলেমান খান, মীর জুবায়ের আহমেদ, সেলিম আহমেদ, মিছবাহুল ইসলাম বাবু, হাসনাত কবির খান রিপন, মোঃ আলিম আল রাজি, মাহমুদ হোসেন সুজন, জুয়েল রহমান, আতাউর রহমান, জুনেদ আহমেদ চৌধুরী, সিদ্দিকুর রহমান সোহাগ, জিয়াউর রহমান, আকমল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম শিমু, রাজু আহমেদ খান, আসাদুজ্জামান মুকুল, শাহাব উদ্দিন মজুমদার সাবু, ইমতিয়াজ এনাম তানিম, মাসুদুর রহমান, হুমায়ুন কবির হিমু, নওমি, শেখ নাসের, হেলাল উদ্দিন, মীর মাসুদ শেজান,জুল আফরোজ মজুমদার, রনি আহমেদ, খান পাবেল, মাহবুবুর রহমান, সুহেল রানা, সুহেল সরকার, শফিউল আলম প্রমূখ।

আরও পড়ুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button