ভাষা সৈনিকদের স্মরণে চট্টগ্রাম নগর উত্তর শিবিরের দোয়া মাহফিল
চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর শিবির সেক্রেটারী সালাউদ্দিন মাহমুদ বলেন মায়ের ভাষা হত্যাকারী বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে পাওয়ার দাবি ছিল ন্যায়সঙ্গত। পুরো পাকিস্তানের জনসংখ্যার বিবেচনায় বাংলাভাষীরা ছিল সংখ্যারিষ্ঠ। তদুপরি উর্দু পাকিস্তানের কোনো প্রদেশেরই ভাষা ছিল না। শাসকেরা অত্যন্ত অদূরদর্শিতার সাথে বাংলা ভাষাভাষীদের দাবিকে পদদলিত করার প্রয়াস পেয়েছিলেন। কিন্তু মাথা নত না করার প্রেরণা একুশ তথা ভাষা আন্দোলনের রক্তরাঙা পথ মাড়িয়েই স্বাধিকার আন্দোলন দানা বেঁধেছিল। স্বাধীনতার মূল স্বপ্নই ছিল গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। সেই স্বপ্ন আজ কেড়ে নিয়েছে জবরদখলকারী বর্তমান অবৈধ সরকার। গণতন্ত্রকে পায়ে ঠেলে জনগণের ভোটের অধিকার, কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়েছে তারা। নিরাপদে বেঁচে থাকার গ্যারান্টিও আজ নেই। প্রতিনিয়ত এদেশের নিরপরাধ নাগরিকদের এখন হত্যার শিকার হতে হচ্ছে। কথায় কথায় গুলি চলছে। চোখের পানি ঝরছে হাজারো মা-বাবা, স্ত্রী, বোন ও সন্তানের। এমন এক শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের একটি উপায়, আবারো ৫২’র ভাষা আন্দোলনের সেই চেতনাকে বুকে ধারণ করে আত্মত্যাগের মন্ত্রে বলীয়ান হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে লড়াইয়ে। চারিদিকে একই ধ্বনি হবে-এক হাতে মুষ্টিবদ্ধ করে রাখা বাকশালী গণতন্ত্রের পতন ঘন্টা বাজাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে জনগণের ভোটের অধিকার , বাক স্বাধীনতা ও বেঁচে থাকার স্বাভাবিক গ্যারান্টি।
চট্টগ্রাম মহানগরী উত্তর শিবিরের ভাষা সৈনিকদের স্মরণে আয়োজিত কুরআন খানি ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মাহফিলে আরো বক্তব্য রাখেন শিবির নেতা আব্দুল আজিজ,কায়েস মাহমুদ, জামাল উদ্দিন,এম.আর.সোহেল প্রমুখ।
মাহফিলে বক্তারা বলেন রাষ্ট্রভাষা হিসেবে বাংলাকে প্রতিষ্ঠিত করার ইতিহাসও আজ বিকৃতির শিকার। যে প্রাণের উচ্ছ্বাস ও আবেগের বন্যায় বাংলা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা পেয়েছিল, সেই ভাষা আজ দূষণের শিকার এবং একুশের চেতনা ভূলুণ্ঠিত। উর্দুর পরিবর্তে হিন্দি আগ্রাসন সীমা অতিক্রম করেছে। বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির গতিময়তার পথ রোধ করে দাঁড়িয়েছে বিদেশী ভাষা ও সংস্কৃতি। উচ্চবিত্ত পরিবারে এখন বাংলা অপাঙ্ক্তেয়, সর্বত্র হিন্দি সংস্কৃতির সয়লাব হয়ে গেছে। এভাবে চলতে দিলে আরেকটি ভাষা আন্দোলন ছাড়া বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতিকে স্বমহিমা ও মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে। সেই সাথে মাথা নত না করার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আরেকটি সর্বাত্মক গণতান্ত্রিক আন্দোলনের প্রেক্ষিত রচনা করে গণতন্ত্র ও ভাষা-সংস্কৃতিকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান ।
সবশেষে ভাষা শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।