ক্ষমতার কাড়াকাড়িতে জনগণের সর্বনাশ ডেকে আনবেন না : শাহ আহমদ শফী
চলমান রাজনৈতিক সংঘাত, অর্থনৈতিক স্থবিরতা, মানুষের জান-মালের চরম নিরাপত্তাহীনতা ও খুন-খারাবির মতো নৃশংস ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও হতাশা প্রকাশ করে এ ব্যাপারে বিবদমান রাজনৈতিক দলসমূহকে অবিলম্বে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সংকট নিরসনের উপায় বের করে দেশ ও জনগণের কল্যাণে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের আমীর ও দারুল উলূম মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী মাদ্রাসার মহাপরিচালক দেশের শীর্ষ আলেম আল্লামা শাহ আহমদ শফী (দা.বা.)।
শনিবার সংবাদপত্রে প্রেরিত বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, ঈমান-আক্বিদা ভিত্তিক একটি অরাজনৈতিক বড় সংগঠন হিসেবে হেফাজতে ইসলাম কোনভাবেই দেশে দমন-পীড়ন, জ্বালাও-পোড়াও, নিরীহ মানুষকে আক্রমণের নিশানা করা ও হত্যাকান্ডের মতো নৃশংসতা চায় না, শান্তি চায়।
তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দ্বন্দ্ব-সংঘাতের কারণে বর্তমানে দেশে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি চলছে, তাতে দেশবাসী আতংকিত। দেশব্যাপী সহিংসতা, হানাহানি, ধ্বংসাত্মক কর্মকা- ভয়াবহ রূপে বেড়ে যাওয়ায় মানুষের স্বাভাবিক চলাচল ও আয়-রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। দ্রব্যমূল্য ধরাছোঁয়ার বাইরে। খেটে খাওয়া শ্রমিক থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, শিল্পপতিসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ কর্মহীন ও নিঃস্ব হয়ে খেয়ে-না খেয়ে দিন কাটাচ্ছে। পাশাপাশি রাজনৈতিক মামলা ও গ্রেফতার আতংকে নাগরিক জীবনে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের পাশাপাশি দেশের আলেম সমাজও চরম উদ্বিগ্ন।
হেফাজত আমীর আরো বলেন, আমরা চাই বর্তমান সংঘাতময় পরিস্থিতির দ্রুত অবসান হয়ে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক। রাজনৈতিক দলগুলো দেশ ও জনগণের জন্য কাজ করলে এমন সংকট কখনোই তৈরি হতো না। রাজনৈতিক সংকটের সমাধান রাজনৈতিক ভাবেই আসতে হবে, ছাড় দেয়ার মানসিকতা ছাড়া কখনোই সংকটের সুরাহা হবে না।
হেফাজত আমীর বলেন, পবিত্র ইসলাম ধর্ম হচ্ছে শান্তির ধর্ম। ইসলামে সন্ত্রাস, খুনা-খুনি ও জোর-জুলুমের যেমন স্থান নেই, তেমনি মানুষের মৌলিক অধিকার হরণেরও সুযোগ নেই। ইসলাম সব সময় ন্যায়, ইনসাফ প্রতিষ্ঠায় অন্যায়-অবিচার, জুলুম-অত্যাচার ও অনৈতিক কর্মকা-ের বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর। দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকটের কারণে যে ভয়ংকর সংঘাতময় পরিস্থিতি চলছে, তাতে ইসলামের খাদেম ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের আলেম সমাজের চুপ থাকার সুযোগ নেই। বৃটিশবিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলন থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত দেশ ও জাতির যে কোন সংকটে আলেম সমাজ দায়িত্বশীল ভূমিকা রেখে আসছে।