দুই সাবেক ব্রিটিশ মন্ত্রীর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ
অর্থের বিনিময়ে একটি বেসরকারি কোম্পানিকে সুবিধা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুই সাবেক ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে। অভিযোগে বলা হচ্ছে, একটি কল্পিত কোম্পানির প্রতিনিধির ছদ্ম পরিচয়ে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টেলিগ্রাফ ও চ্যানেল ফোর এর পক্ষ থেকে গোপন অনুসন্ধানের সময় এ সব প্রতিশ্রুতি দেন ওই দুই জাঁদরেল নেতা।
অভিযুক্ত দুই মন্ত্রী হচ্ছেন কনজারভেটিভ দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ম্যালকম রিফকিন্ড ও লেবার পার্টির শীর্ষ নেতা জ্যাক স্ট্র। গোপন ক্যামেরায় এ দুই মন্ত্রীর প্রভাব খাটানোর ইঙ্গিতবাহী নানা কথাবার্তা ধারণ করা হয়। মিডিয়ার এই অনুসন্ধান চলে কয়েক মাস ধরে।
যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস আগে প্রকাশিত এই কেলেঙ্কারির অভিযোগ ঘটনা বেশ আলোড়ন তুলেছে। রিফকিন্ড ও স্ট্রর মতো নেতাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আগে ওঠেনি। প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর স্ট্র লেবার পার্টি থেকে পদত্যাগ করেছেন। অনদিকে কনজারভেটিভ দল ঘোষণা করেছে, রিফকিন্ডের দলের প্রতিনিিধত্ব করা স্থগিত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে তদন্ত করা হবে। তবে দুই মন্ত্রীই দাবি করেছেন, কাজ পাইয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাঁরা কোনো আইন ভঙ্গ করেননি।
প্রতিবেদনে জ্যাক স্ট্রকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, তিনি নিজে আড়ালে থেকে কাজ করেন বলে দাবি করেন। স্ট্র দাবি করেন, একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বছরে ৬০ হাজার পাউন্ডের চুক্তিতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি আইন পরিবর্তন করতে তিনি প্রভাব খাটিয়েছিলেন। কীভাবে তাঁকে অর্থ দেওয়া হয়— এ প্রশ্নের জবাবে স্ট্রকে বলতে শোনা যায়, ‘এটি খুব সহজ। ধরুন, আমাকে একটি বক্তৃতার জন্য দেওয়া হয় দিনে পাঁচ হাজার পাউন্ড। আমি এমনটাই চাই।’
অন্যদিকে রিফকিন্ডের দাবি অনুসারে, বিশ্বের যেকোনো ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ‘কার্যকর যোগাযোগ’ করিয়ে দিতে পারেন তিনি।
কনজারভেটিভ পার্টির কেনসিংটনের এমপি স্যার ম্যালকম রিফকিন্ড ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড সিকিউরিটি কমিটির চেয়ারম্যান। তাঁকে বলতে শোনা গেছে, ‘আমি স্বনিয়োজিত। তাই কেউ আমাকে বেতন দেয় না। আমার আয় আমাকেই করতে হয়।’
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাঁর আধা দিনের পারিশ্রমিক পাঁচ থেকে আট হাজার পাউন্ড বলে দাবি এই ব্রিটিশ এমপির।
স্ট্র ও রিফকিন্ড এ অভিযোগ ওঠার পর দাবি করেছেন, তাঁরা আইনবিরুদ্ধ কিছু করেননি। স্ট্র বলেছেন, তিনি ‘দক্ষভাবে পরিচালিত একটি ফাঁদে’ পড়েছেন।
রিফকিন্ডের ভাষ্য, এখানে বিব্রত হওয়ার কিছু নেই। কোনো অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি। আর সব অভিযোগই তিনি ‘সমস্ত শক্তি দিয়ে’মোকাবিলা করবেন। কল্পিত কোম্পানির কাছ থেকে কোনো অর্থ নেওয়ার প্রস্তাব তিনি গ্রহণ করেননি বলে দাবি করেন রিফকিন্ড। তিনি বলেছেন, পুরো আলোচনাটা একেবারে প্রাথমিক অবস্থায় ছিল। রিফকিন্ড এমপি হিসেবে বছরে ৬৭ হাজার পাউন্ড পান। এর পরেও ‘কোনো কিছু পান না’—এমন বক্তব্য দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ঠিক আছে, এমপি হিসেবে আমি বেতন পাই। আমি শুধু আমার ব্যবসায়িক স্বার্থের বিষয়টি নিয়ে বলেছিলাম।’ -প্রথম আলো