মফস্বলে হত্যাকান্ড কমেছে, ঢাকায় বাড়ছে : অর্থমন্ত্রী
দেশব্যাপি চলমান হরতাল-অবরোধকে ‘ওয়ার্থলেস’ আন্দোলন হিসেবে অভিহিত করে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেছেন, এ পরিস্থিতি টিকবে না, আমি নিশ্চিত। তিনি আরও বলেছেন, মফস্বলে হত্যাকান্ড কমছে। কিন্তু ঢাকায় বাড়ছে। মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন এর সাথে প্রায় দেড়ঘন্টাব্যাপি বৈঠকের পর দেশের বর্তমান পরিস্থতি নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নিয়ে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কোন কথা হয়েছে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি। তিনিও কোন কথা বলেন নি। আমার কাছে মনে হয় এটা একটা ওয়ার্থলেস(অপদার্থ) সাবজেক্ট। এটা নিয়ে আলোচনার কিছু নেই। সন্ত্রাসী একটা কর্মকান্ড চলছে, এখানে রাজনৈতিক কিছু নেই। সুতরাং এটা নিয়ে আলোচনার কোন প্রয়োজন নেই।
অর্থমন্ত্রী উল্লেখ করেন, দেশ উন্নয়নের ধারায় আছে। আমাদের টার্গেট হলো, ২০১৮ সাল নাগাদ দেশে কোন দারিদ্রতা থাকবে না। ২০১৮ সাল নাগাদ দারিদ্র সীমা ১১ দশমিক ১৪ শতাংশে নেমে আসবে। দারিদ্র সীমা ১১ দশমিক ১৪ শতাংশ মানে দরিদ্র না থাকার মতোই।
রাজনৈতিক অস্থিরতা চলতে থাকলে ২০১৮ সাল নাগাদ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দারিদ্রতা কমানোর সম্ভব কীনা-এ প্রশ্নের জবাবে তিনি দৃঢ়কন্ঠে বলেন, এই পরিস্থিতি টিকবে না তো। আমি নিশ্চিত।
কিন্তু ইতোমধ্যে ৫০ দিন(হরতাল-অবরোধের) অতিক্রম হয়ে গেছেÑসাংবাদিকদের এ কথার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘যে ক’দিন গেছে এটা মোমেন্ট অব টাইম। মফস্বলে হত্যাকান্ড কমছে, এখন তো হত্যাকান্ড ঢাকায় বাড়ছে। ’
তবে তিনি ব্যাখ্যা করেননি মফস্বলে কী ধরণের হত্যাকান্ড কমেছে। আবার ঢাকা কী ধরণের হত্যাকান্ড বাড়ছে। কিন্তু বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর বেরিয়েছে ঢাকায় ক্রয়ফায়ারে মৃত্যু’র সংখ্যা বেড়েছে।
বিএনপি’র কর্মসূচীকে ‘ওয়ার্থলেস কর্মসূচী’ হিসেবে আখ্যায়িত করে অর্থমন্ত্রী বলেন, এ ধরনের একটা ওয়ার্থলেস কর্মসূচী কোন রাজনৈতিক দল কোন দেশে দেয়নি। এটা রাজনৈতিক কর্মসূচী নয়। এটা সন্ত্রাসী কর্মকান্ড। বিশ্বব্যাংকের কাছে বাজেট সহায়তা চাইলেন অর্থমন্ত্রী
আগামী ২০১৫-১৬ অর্থবছরের জন্য বিশ্বব্যাংকের কাছে ৫০ কোটি ডলার বাজেট সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সচিবালয়ে বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যানেট ডিক্সন এর বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রোগ্রাম বাজেট’ কর্মসূচীর আওতায় এ বাজেট সহায়তার প্রস্তাব ইতোমধ্যেই বিশ্বব্যাংকের কাছে পাঠানো হয়েছে। ‘বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে এ সহায়তা পাওয়া যাবে’ বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
বৈঠক প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘অ্যােেনট ডিক্সন সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। এটা তাঁর প্রথম বাংলাদেশ সফর। বৈঠকে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি।তিনি জানান-‘বৈঠকে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে পরিচালিত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রকল্প নিয়ে কথা হয়েছে। এর মধ্যে তিন-চারটির চুক্তি ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেটি বাজেট সহায়তা চুক্তি সেটা এ বছরেই হবে।’
তিনি বলেন, এছাড়া বাংলাদেশের দারিদ্র হার কমিয়ে আনা এবং বর্তমান সরকারের আমলে রাজস্ব আদায় বাড়ানোর বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হয়েছে। অর্থমন্ত্রীর সাথে আলোচনার পর সাংবাদিকদের অ্যানেট ডিক্সন বলেন ‘বাংলাদেশের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। দারিদ্র বিমোচন ও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ধরে রাখার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভালো করছ্ েবৈঠকে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে কোন আলোচনা হয়েছে কি না’ চানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বিষয় নিয়ে কথা বলেছি।’