লন্ডনে যেমন চলছে টাওয়ার হ্যামলেটস নির্বাচনী মামলার শুনানী
তাইছির মাহমুদ: ২০ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার। সকাল তখন ১০টা ৯ মিনিট। সেন্ট্রাল লন্ডনের রয়েল কোর্ট অব জাস্টিস’র টাওয়ার হ্যামলেটস নির্বাচনী মামলার বিচার কক্ষ। বিচারকের খাসকামরার দরজায় পায়চারি করছেন একজন মহিলা কর্মকর্তা। বিচারকক্ষে বসে ও দাঁড়িয়ে আছেন আইনজীবী, সাংবাদিক, বাদী-বিবাদী পক্ষের সমর্থকসহ প্রায় ৫০জন। এমন সময় হঠাৎ দরজা খুলে প্রবেশ করলেন বিচারক। পরনে কালো গাউন ও মাথায় সাদা উইগ পরিহিত বিচারকের নাম রিচার্ড মাওরি কিউসি। দ্রুত পায়ে এসে টেবিলের পাশে দাঁড়ালেন। সাথে সাথে ওঠে দাঁড়ালেন উপস্থিত সকলে। বিচারক চেয়ার টেনে বসার আগে খানিকটা মাথা নাড়লেন। এবার নিজ নিজ চেয়ারে বসে পড়লেন সকলে। শুরু হলো মামলার শুনানী। মিসিং ডকুমেন্ট ফাটোকপি করতে ১৫ মিনিট, দুপুরে লাঞ্চের জন্য ১ ঘন্টা ১০ মিনিট ও বিকেলে কফির জন্য ১০ মিনিটের বিরতি দিয়ে শুনানী চললো টানা সাড়ে ৪ ঘন্টা।
বহুল আলোচিত টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাচনী মামলার শুনানী শুরু হয়েছে গত ২ ফেব্রুয়ারি সোমবার। ১৯ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার পর্যন্ত টানা ১৩ কর্মদিবসে সাক্ষ্য দিয়েছেন বাদী পক্ষের প্রায় ৪০ সাক্ষি। ২০ জানুয়ারি শুক্রবার বিচারকার্যের ১৪তম দিবসে শুরু হয় বিবাদী পক্ষের শুনানী। প্রথম দিনে সাক্ষ্য দেন মামলার বিবাদী টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের দু’বারের নির্বাচিত নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান। তাই দিনটি ছিলো খুবই গুরুত্বপুর্ণ। আর তাই সকাল পৌনে ১০টার আগে আগেই বাদী-বিবাদী, তাদের সমর্থক ও সাংবাদিকরা ছুটে চলেন সেন্ট্রাল লন্ডনের চেনচারী লেইনে অবস্থিত রয়েল কোর্ট অব জাস্টিসে।
ঐ দিনের বিচারকার্য পর্যবেক্ষণ করতে এই প্রতিবেদকসহ লন্ডনের বাংলা মিডিয়ার একদল সাংবাদিক পৌঁনে ১০টার কিছু আগে গিয়ে পৌঁছেন আদালত প্রাঙ্গণে। বিচারকক্ষের প্রবেশদ্বারে দেখা গেলো সিকিউরিটি চেক চলছে। চেকিং শেষে খানিকটা এগিয়ে একটি দরজায় লেখা দেখা গেলো টাওয়ার হ্যামলেটস নির্বাচনী পিটিশন কক্ষ। ভেতরে প্রবেশ করে দেখা গেলো ইতোমধ্যে প্রায় ৩০ ব্যক্তি কক্ষে পৌছেছেন। কেউ দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ এদিক ওদিক হাঁটছেন, কথা বলছেন।
বিরাট আয়াতনের একটি কক্ষ। দরজা দিয়ে প্রবেশ করে ডান পাশে সাংবাদিক গ্যালারী। সেখানে আগে থেকেই বসে আছেন ডেইলি টাইমস এর রিপোর্টার ডমেনিক কেনেডিসহ বিভিন্ন ইংলিশ মিডিয়ার বেশ কজন সাংবাদিক। বাংলা মিডিয়ার সাংবাদিকদল গ্যালারির পাশে পৌঁছতেই এগিয়ে এলেন একজন আশার (কর্তব্যরত কর্মকর্তা)। সাংবাদিক পরিচয় দিলে চেয়ার টেনে গ্যালারীতে বসালেন।
মিনিট পাঁচেকের মধ্যে বিচারকক্ষে প্রবেশ করলেন মামলার বিবাদী টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের নির্বাহী মেয়র লুৎফুর রহমান। সাথে তাঁর আইনজীবী ডানকান পেনি কিউসি ও এম বেইলি। তাঁদের হাতে বিশাল এক গাদা ফাইল। বিচারকের সোজা সম্মুখে সাংবাদিক গ্যালারির পাশে লম্বা একটি টেবিলে এসে বসলেন দু’জন। কিছুক্ষণের মধ্যে চলে এলেন বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফ্রান্সিস হোর ও ক্যাথরিন হ্যালিট। ক্রমান্বয়ে এলেন লুৎফুর রহমানের সমর্থকদের মধ্যে কাউন্সিলার মোহাম্মদ প্রমাণিক, কাউন্সিলার সুলুক মিয়া, কাউন্সিলার মাহবুব আলম প্রমুখ। আরো কিছু সমর্থককে বিচারকক্ষের বাইরে দেখা গেলো।
পরক্ষণেই বিচারকক্ষে প্রবেশ করতে দেখা গেলো নির্বাচনী মামলার বাদী এন্ড্রু এরলাম, আজমল হোসেইন, ডিবি সাইমন ও এঞ্জেলা মওফটকে। এলেন বাদীপক্ষের সমর্থকদের মধ্যে টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিল নির্বাচনে পরাজিত মেয়র প্রার্থী জন বিগস, কনজার্ভেটিভ দলের লীডার পিটার গোলড, সাবেক কাউন্সিলার খালিস উদ্দিন প্রমুখ। এলেন আরো ক’জন মূলধারার সাংবাদিক। সবমিলিয়ে বিচারকক্ষে প্রায় ৫০ জনের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলো।
বিচারক, আইনজীবী ও সাক্ষীর টেবিলে মাইক্রোফোন। বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যবর্তী স্থানে লম্বা একটি টেবিলে বসে আছেন তিনজন আশার। তাঁদের মধ্যে একজন বিচারক, আইনজীবী ও সাক্ষির মধ্যে চলমান সংলাপ হেডফোনে শুনছেন এবং খুবই দ্রুত লেপটপে টাইপ করছেন।
বিচারকার্য শুরু হবে। মেয়র লুতফুর রহমান সোজা গিয়ে বসলেন কক্ষের বামপাশের নির্ধারিত সাক্ষির ডেস্কে। খানিকটা উঁচুতে বড় একটি ডেস্ক। তাতে কিছু ফাইল। ডেস্কের বাম পাশে একটি ফাইল কেবিনেট। সেখানে লাল ও সবুজ রঙের ৮/১০টি ফলডার। টেবিলে একটি গ্লাস ও মিনারেল ওয়াটার।
এবার মেয়রের আইনজীবী ডানকান পেনি দাঁড়ালেন। পরনে গাউন, গলায় বিশেষধরনের টাই, মাথায় সাদা উইগ। তিনি বিচারকের অনুমতি নিয়ে মেয়রকে চীফ এক্সামিনেশন শুরু করলেন।
ডানকান পেনি: আপনার নাম প্লীজ?
মেয়র: লুতফুর রহমান
ডানকান পেনি : লুতফুর রহমান, এটা কি সত্য যে এই পিটিশন সম্পর্কিত চারটি স্ট্যাটমেন্ট আপনি আদালতে দাখিল করেছেন।
লুতফুর রহমান : হ্যা স্যার।
এভাবেই চীফ এক্সমিনেশন অব্যাহত রাখলেন লৎফুর রহমানের আইনজীবী। তিনি ইতোপুর্বে মেয়র কর্তৃক দাখিলকৃত স্টেটমেন্টগুলো তাঁর কি-না জিজ্ঞেস করলেন। মেয়র সেগুলো তাঁর দেয়া স্টেটমেন্ট বলে নিশ্চিত করলেন। দুই একটি স্টেটমেন্টে তিনি কিছু পরিবর্তনও আনলেন। ১০টা ১০মিনিট থেকে ১০টা ৫০মিনিট পর্যন্ত ডানকান পেনি কিউসি লুতফুর রহমানকে এক্সামিনেশন করলেন।
১০টা ৫১ মিনিটে উঠে দাঁড়ালেন বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফ্রান্সিস হোর। তিনি শুরু করলেন ক্রস এক্সামিনেশন। ১০ মিনিট শুনানীকালে ব্যারিস্টার হোর মেয়র লুৎফুর রহমানকে নিয়ে প্রাইস-ওয়াটার-কুপারর্স-হাউজের রিপোর্টের একটি অংশের প্রতি আলোকপাত করতে বিচারকসহ সংশ্লিস্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাইলে বিচারক রিচার্ড মাওরি কিউসি বললেন, আমার কাছে এই ডকুমেন্ট নেই। তিনি জানতে চাইলেন এই ডকুমেন্ট কত পৃষ্ঠার। ব্যারিস্টার হোর জানালেন এটা প্রায় ১৫০পৃষ্ঠার। এবার বিচারক বললেন, আমি মনেকরি দিনের শুরুতে একটি বিরতি দিলে এই সময়ে ১৫০ পৃষ্ঠা ফটোকপি করে নিয়ে আসা সম্ভব। বিরতি কোয়ার্টার অব এন আওয়ার। ব্যারিস্টার হোর বললেন, আমিও তাই মনে করি।
এবার বিচারক বললেন, তাহলে আমি মনে করি একটি বিরতিতে যাওয়া উচিত। কারণ লুতফুর রহমানকে ক্রস এক্সমিন করতে এই ডকুমেন্টগুলো অবশ্য প্রয়োজন। তাহলে আমরা সকলে কফির বিরতিতে যাচ্ছি। আমি বলবো আদালত কক্ষের ঘড়ির সময় অনুযায়ী আমরা সোয়া এগারোটায় ফিরে আসবো। এবার বিচারক লুৎফুর রহমানকে বলেন, মিস্টার রহমান-আপনি এখনো শপথের মধ্যে আছেন। সুতরাং এই সময়ে শুনানী বিষয়ে কারো সাথে কথা বলবেন না।
বিচারক চেয়ার ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন। হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে গেলেন ব্যারিস্টার ফ্রান্সিস হোর’ও। সময় মাত্র ১৫ মিনিট। ১৫০ পৃষ্ঠা ফটোকপি করতে হবে। তাই দৌঁড়ালেন ফটোকপি রুমে। মেয়র লুতফুর রহমান ও তাঁর আইনজীবী বেরিয়ে গেলেন তাদের জন্য রাখা নির্ধারিত রুমে। কেউ কেউ বসে থাকলেন, পানি খেলেন। ১১টা ১৫ মিনিটে সকলে ফিরে এলেন। বিচারক বেরিয়ে এলেন খাসকামরা থেকে। চেয়ারে বসেই জানতে চাইলেন, হোয়াট ইজ দ্যা পজিশন? ব্যারিস্টার হোর ফটোকপি করে নিয়ে আসা একটি বান্ডিলটি বিচারকের হাতে তুলে দিলেন। বিচারক জানতে চাইলেন, মিঃ রহমানকেও কি একটি সেট দেয়া হয়েছে?
এমন সময় হঠাৎ একটি মোবাইল ফোন বেজে উঠলে সকলের মনোযোগ বিঘিœত হয়। বিচারক বিরক্তির সুরে বললেন, ‘প্লীজ নো ফোন। উইল ইউ টেইক ইট আউট?’ ক্রস এক্সামিন চলতেই থাকলো। টাওয়ার হ্যামলেটস ওভারভিউ এন্ড স্ক্রুটুনি কমিটির সভায় উপস্থিত হওয়া-না-হওয়া সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে মেয়র লুৎফুর রহমান যখন ব্যারিস্টার হোরকে বলছিলেন, ক্যান আই জাস্ট এক্সপ্লেইন মিঃ হোর? জবাবে কিছুটা গরম মেজাজে ব্যারিস্টার হোর বলে ওঠেন ‘নো’।
বিচারক তখন লুৎফুর রহমানকে কথা বলার সুযোগ দিতে গিয়ে বলেন, ইয়েস মিঃ রহমান, ইউ এক্সপ্লেন। তখন লুৎফুর রহমান ওভারভিউ এন্ড স্ক্রুটুনি কমিটির সভায় উপস্থিত হওয়া না হওয়া সংক্রান্ত ব্যাখ্যা তুলে ধরেন।
এভাবে একনাগাড়ে শুনানী চলতে থাকে। ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে বিচারক বলে উঠেন, এটি সাক্ষির জন্য যেমন একটি লম্বা দিন তেমনি আমাদের জন্যও। আমি আবার বিকেল ২টায় ফিরে আসবো। বিচারক লাঞ্চের বিরতিতে যাওয়ার প্রাক্কালে লুৎফুর রহমানকে একই কথা বললেন, ‘আপনি এখনও শপথের মধ্যে আছেন। সুতরাং শুনানীর কোনো বিষয়ে কারো সাথে আলাপ করা যাবে না’। বিচারক চলে গেলেন তাঁর খাসকামরায়। আইনজীবীরা তাঁদের নিজ নিজ কক্ষে। শুক্রবার জুমার নামাজ পড়তে হবে। তাই অনেকেই বেরিয়ে আশাপাশে মসজিদ খুঁজতে থাকেন। পাশেই পাওয়া গেলো লন্ডন স্কুল অব ইকোনোমিক এলএসই’র প্রেয়ার রুম। সেখানে জামাতে নামাজ ও বাইরে লাঞ্চ সেরে আবারও আদালত কক্ষে ফিরে এলেন সকলেই। ঠিক ২টায় খাসকামরা থেকে বেরিয়ে এলেন বিচারক। ফের শুরু হলো শুনানী। বিভিন্ন কঠিন প্রশ্নের মুখোমুখি হলেন মেয়র লুৎফুর রহমান। নানান অঙ্গ ভঙ্গিমায় প্রশ্ন ছুড়ছিলেন ব্যারিস্টার হোর। মেয়রের প্রতি একটি প্রশ্নে বেশ চটে গেলেন তাঁর আইনজীবী ডানকান পেনি কিউসি। অকস্মাত দাঁড়িয়ে বিচারকের উদ্দেশে বলে উঠলেন, দুঃখিত, আমি ভীত। আদালতে এই মুহুর্তে কী চলছে? এটা কি গৃহ বিবাদ? জবাবে বাদী পক্ষের আইনজীবী মেয়র লুৎফুর রহমানের আইনজীবী ডানকান পেনির মন্তব্য উড়িয়ে দেয়ার চেষ্টা করে বললেন, অহ রিয়েলি? ডানকান পেনি বললেন, ব্যারিস্টার হোর যে বাক্যটি উচ্চারণ করেছেন এটা জনসমক্ষে মোটেই যথোপযুক্ত নয়। বিচারক বললেন, ইউর প্রটেস্ট নোটেড।
শুনানী চলতেই থাকে। এক পর্যায়ে কঠিন তর্কে বিচারকক্ষে নিস্তব্ধতা বিরাজ করলে বিচারক বলে উঠেন, আমার মনে হয় আমাদের সকলেই ১০ মিনিটের জন্য এই নন-অফিশিয়াল সওনা থেকে একটু ঠান্ডা হয়ে ফিরে আসা উচিত। আমরা ৩টা ২০ মিনিটে ফিরে আসবো। এবার সকলে বিরতিতে চলে যান। ১০মিনিটি পর ফিরে এলে ফের শুনানী শুরু হয়। দীর্ঘক্ষণ একনাগাড়ে শুনানী শেষে বিকেল ৪টা ২০মিনিটে বিচারক মেয়র লুৎফুর রহমানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, মিঃ রহমান- আগামী সোমবার সকাল ১০টায় আপনাকে আবারও আসতে হবে। আপনাকে, আপনার আইনজীবীকে আমার সাথে যেকোনো বিষয়ে কথা বলার অনুমতি দিচ্ছি। এই সময়ের মধ্যে শুনানীর বিষয়ে কারো সাথে কোনো কথা বলবেন না। ভেরি গুড। আমরা এখন সোমবার সকাল ১০টা পর্যন্ত উঠছি। আমরা আশা করছি এই সময়ের মধ্যে বিচারকক্ষের হিটিং সিস্টেমটিও মেরামত হয়ে যাবে। এই বলেই বিচারকার্য সোমবার সকাল পর্যন্ত মুলতবি করেন।
টানা সাড়ে ৪ ঘন্টার শুনানীর মূল বিষয় ছিলো ২০১০ সালের মেয়র নির্বাচনে লেবার পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হওয়ার পর ডিসিলেক্ট হওয়া, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের অভারভিউ স্ক্রুটুনি কমিটির সভায় অংশগ্রহণ করা না করা এবং সর্বোপরি মেয়রের গ্রুপ টাওয়ার হ্যামলেটস ফার্স্ট এর গঠন প্রক্রিয়া, কন্সটিটিউশন ও একাউটন্ট নিয়ে বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফ্রান্সিস হোরের জেরার মুখোমুখি হন মেয়র লুৎফুর রহমান। তবে দীর্ঘ সাড়ে ৪ ঘন্টার শুনানীকালে আইনজীবীর কঠিন জেরার মুখে মেয়র লুতফুর রহমান বেশ আত“বিশ্বাসী দেখা যায়।
উল্লেখ্য, সোমবার ও মঙ্গলবার পূর্ণদিবস এবং বুধবার অর্ধদিবস শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন মেয়র লুতফুর রহমান। বুধবার দিবসের শেষভাগে টাওয়ার হ্যামলেটস নির্বাচনের রিটানিং অফিসার জন উইলিয়ামস সাক্ষ্য প্রদান করেন। জানা গেছে, মেয়র লুৎফুর রহমানের পক্ষে প্রায় আড়াইশ মানুষের স্টেটমেন্ট দাখিল করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে এরমধ্যে কমপক্ষে ৫০/৬০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে মার্চের শেষ দিকে বহুল আলোচিত এই মামলার রায় ঘোষণা করা হবে। টাওয়ার হ্যামলেটস তথা বৃটেনের রাজনীতি সচেতন মানুষ এই মামলার রায়ের জন্য গভীর অগ্রহে অপেক্ষমান। প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক মানুষ মামলার শুনানীর খবর নিচ্ছেন। কেউ কেউ সরাসরি বিচারকার্য দেখতে চলে যাচ্ছেন রয়েল কোর্ট অব জাস্টিসের এই বিশেষ বিচারকক্ষে। কেউবা বিবিসি, গার্ডিয়ান, ইভনিং স্ট্যান্ডার্ডসহ মূলধারার সংবাদপত্রের পাতায় নিয়মিত চোখ চোখ রাখছেন। সাক্ষীদের জবানবন্দী, দুপক্ষের আইনজীবীদের জেরা ও বিচারকের রুলিং থেকে আঁচ করার চেষ্টা করছেন- কী হতে পারে মামলার রায়। বাদী পক্ষে উচ্ছাস, বিবাদী পক্ষে উদ্বিগ্নতা-এভাবেই পার হচ্ছে সময়। তবে অনেকের মতে, মামলার রায় ঘোষণার দিনটি হবে নির্বাচনী ফলাফল ঘোষণার মতো একটি বিশেষ দিন। কারণ বাদীপক্ষ চান আদালত নির্বাচনের ফলাফল বাতিল করে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠানের নির্দেশ দেবেন। আর বিবাদী পক্ষ মনে করে, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে, সুতরাং ফলাফল বহাল রাখার পক্ষেই রায় দেবেন আদালত।