অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নতুন করে অভিযান শুরু করছে সৌদি আরব
যেসব শ্রমিক ও বসবাসকারী সৌদি আরবে আইন লঙ্ঘন করে অবস্থান করছেন আগামী ৮ মার্চ থেকে তাদের বিরুদ্ধে এ অভিযান শুরু হচ্ছে।
এর আগে খবর প্রকাশিত হয়েছিল যে, অবৈধ অভিবাসীদের বৈধতা অর্জনের জন্য এক মাসের সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করা হবে। কিন্তু সেই খবর যথার্থ নয়। সরকার এ সিদ্ধান্ত নেয়নি। এ কথা জানিয়ে দিয়েছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। রবিবার সৌদি গেজেট এ খবর দিয়েছে।
পাসপোর্টবিষয়ক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল সুলাইমান বিন আবদুল আজিজ আল ইয়াহিয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য দিয়েছেন সৌদি গেজেটকে। তিনি বলেছেন, অভিবাসন ও শ্রম নিয়মনীতি বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনিক কমিটি গঠনের কাজ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অভিযানে যাদেরকে নিয়ম লঙ্ঘন করে সৌদি আরবে অবস্থান করার প্রমাণ পাওয়া যাবে তাদেরকে আটক করে স্ব স্ব দেশে ফেরত পাঠানো হবে। তাই তার দেশের কোনো নাগরিক যেন অবৈধ অভিবাসীদের যেন আশ্রয় না দেন এবং তাদের পক্ষ অবলম্বন না করেন- এব্যাপারে সতর্ক করেছেন তিনি। কাউকে আইন লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্ত পাওয়া গেলে তার শাস্তি লাঘব হবে না।
জেদ্দা পুলিশের এক সূত্র বলেছেন, সৌদি আরবের শ্রম আইন লঙ্ঘন করলে সেইসব বিদেশীকে আটক করতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। এ জন্য রাস্তায় রাস্তায় চেকপয়েন্ট বসানো হয়েছে।
মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিষয়ক স্পেশাল ফোর্সের কমান্ডার মেজর জেনারেল খালেদ আল কাহতানি বলেছেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যেসব আইন ও নির্দেশনা দিবে তা বাস্তবায়ন করবে তার বাহিনী। এসব অভিযানের মধ্যে অবৈধ কোনো শ্রমিক বা আইন লঙ্ঘন করেছেন এমন কাউকে পাওয়া গেলেই তাকে ধরা হবে।
তিনি বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এটা আমাদের নিত্যদিনের কাজ। তিনি আরও বলেন, অবৈধ অভিবাসী বা শ্রমিকদের আটক করায় তাদের এ উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে। মক্কায় নিরাপত্তা টহল বিভাগের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আল কারনি বলেন, শ্রম অফিসকে সহায়তা দেবে তাদের নিরাপত্তা রক্ষাকারীরা।
তারা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নজরদারি করবে এবং সেখান থেকে আইন লঙ্ঘনকারীদের আটক করা হবে। প্রতিদিন মক্কায় আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক করা হয় ৪০০ থেকে ৫০০ মানুষকে। এসব মানুষের বেশির ভাগের কাছে কাজ করার অনুমতিপত্র (আকামা) ছিল না।
ন্যাশনাল কমিটি ফর কনস্ট্রাকশন-এর সদস্য ফাহাদ মোমেনা বলেন, আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে এ অভিযান পরিচালিত হলে তাতে নির্মাণখাত সবচেয়ে বেশি প্রভাবিত হবে। কারণ, নির্মাণ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রধানত বিদেশী শ্রমিকদের ওপর নির্ভরশীল। তার মতে, নির্মাণখাতে যেসব শ্রমিক কাজ করেন তাদের মধ্যে শতকরা ৮০ ভাগই দৈনিক ভিত্তিতে নিয়োজিত, যদিও এটা শ্রম আইন ও অন্য আইনের পরিপন্থি।
ফলে যদি নতুন করে শ্রমিকদের বিরুদ্ধে এ অভিযান চালানো হয় তাতে এ খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা, যারা অবৈধ শ্রমিকদের ওপর ভর করেন বেশি। তবে শুদ্ধি অভিযানের ফলে ভুয়া কন্ট্রাক্টরদের নির্মূল করা যায়। এটাই এ অভিযানের একটি সুবিধা।