পালিয়ে গেছে প্রায় ১২ লাখ ৫০,০০০ মানুষ
ইউক্রেনে সহিংসতায় নিহত অন্তত ৬০০০
জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন পূর্ব ইউক্রেনে সহিংসতায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৬,০০০ মানুষ নিহত হয়েছে বলে এক রিপোর্ট বলছে। দেশটির বর্তমান পরিস্থিতির এক গুরুতর চিত্র তুলে ধরে রিপোর্টটি বলছে, মধ্য ফেব্রুয়ারিতে এক যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত সীমান্তের ওপারে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণ ভারী অস্ত্র দেশটিতে ঢুকেছে। রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ অবশ্য বলছেন, যুদ্ধক্ষেত্র থেকে ভারী অস্ত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তার সঙ্গে এক বৈঠকের পর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি পূর্ব ইউক্রেনে রুশপন্থী বিদ্রোহীদের মানবাধিকার লংঘনের অভিযোগ তদন্ত করে দেখার আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থাটি বলছে, সংঘাত শুরু হওয়ার পর থেকে সেখানে ছয় হাজারেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। নিজেদের বাড়িঘর থেকে পালিয়ে গেছে প্রায় ১২ লাখ ৫০,০০০ মানুষ। রাশিয়া ও ইউক্রেনের নেতাদের মধ্যে যুদ্ধবিরতির সমঝোতা হওয়া সত্বেও কোথাও কোথাও তীব্র লড়াই চলছে।
সোমবার প্রকাশিত জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, রাশিয়া থেকে এখনও বিদেশি যোদ্ধারা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকছে। আসছে ভারী অস্ত্রশস্ত্রও। সংস্থাটি বলছে, তাদের এই বক্তব্যের পক্ষে বিশ্বাসযোগ্য তথ্যপ্রমাণ তাদের হাতে রয়েছে।
মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার জেইদ রাদ আল-হোসাইন বলেছেন, পূর্ব ইউক্রেনে নির্বিচারে যে ধ্বংসযজ্ঞ আর বেসামরিক লোকজনদের হত্যা করা হয়েছে সেই চিত্রটাই তারা প্রতিবেদনে তুলে ধরেছেন। কিয়েভ সরকার, পশ্চিমা নেতারাসহ ন্যাটোও রাশিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আসছে যে মস্কো ভারী অস্ত্র ও সৈন্য দিয়ে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সহযোগিতা করছে। আর এই অভিযোগ শুরু থেকেই অস্বীকার করে আসছে রাশিয়া।
মস্কো বলছে, রুশ কোনো নাগরিক যদি বিদ্রোহীদের সাথে যোগ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটা সে তার নিজের ইচ্ছায় করেছে।
দনিয়েস্ক শহরে স্বঘোষিত সরকারের একজন শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তা বলেছেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুসারে বিদ্রোহীরা সেখান থেকে তাদের সকল ধরনের ভারী অস্ত্র প্রত্যাহার করে নিয়েছে। কিয়েভ সরকারের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ করছেন যে তারা শুধু ট্যাঙ্কবিধ্বংসী অস্ত্র সরিয়ে নিয়েছে। আর ইউরোপীয় নিরাপত্তা সংস্থার পর্যবেক্ষকরা বলছেন, পূর্ব ইউক্রেনে উভয়পক্ষ থেকেই ভারী অস্ত্রের ব্যবহার অব্যাহত রয়েছে।