ব্রিটেনের হাউস অব লর্ডসে আলোচনা সভায় বক্তারা
ব্রিটেনের কারী শিল্পের সংকট মোকাবেলায় সরকারকেই এগিয়ে আসতে হবে
ব্রিটেনের বাংলাদেশীদের শ্রমে গড়া প্রায় দু‘শো বছর পুরোনো কারী ইন্ড্রাস্ট্রি। এই কারী শিল্পের উপর ভিত্তি করেই বৃটেনে সুপ্রতিষ্টিত বাংলাদেশীরা। বৃটেনের প্রায় ১২ হাজার রেষ্টুরেন্টের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন ‘বাংলাদেশ ক্যাটারাস এসোসিয়েন’ প্রতিষ্ঠার অর্ধ শতক পেরিয়ে গেলেও এই প্রথমবারের মতো কারী শিল্পের নানা সংকট মোকাবেলার মাধ্যমে এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে ‘অল পার্টি পার্লামেন্টারী গ্রুপ অন কারী এন্ড ক্যাটারিং ইন্ড্রাস্ট্রি’ সংক্ষেপেপ ‘এপিপিজি’ গঠিত হয়েছে।
গত ০৩ মার্চ মঙ্গলবারের বৃটেনের হাউস অব লর্ডস এর চামেলি হলরুমে অনুষ্ঠিত হয় এর দ্বিতীয় সভা। বাংলাদেশী বংশোদ্ভুত বৃটিশ হাউস অব লর্ডস ব্যারোনেস পলা উদ্দিন এই অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন।
তিনি বলেন, বৃটিশ সরকারের কঠোর ইমিগ্রেশন নীতিমালা, বাবুর্চি ও রেষ্টুরেন্ট কর্মচারী সংকট, উচ্চ মাত্রার ভ্যাট এবং ব্যাংকিং অসহযোগিতাসহ নানামুখী সমস্যায় কারী শিল্প মুখ থুবড়ে পড়ার অবস্থা হয়েছে। এখন আর শুধু সমস্যা নিয়ে কথা বলার দিন নেই, প্রয়োজন সুষ্ঠু একটি সমাধান। আর এই জন্য বৃটিশ সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
অনুষ্ঠানে হোম অফিস মিনিষ্টার মাইক প্যানিং এমপিও স্বীকার করে বলেন, বেশ কিছু নতুন ইমিগ্রেশন নীতিমালার কারণে বাংলাদেশ থেকে বার্বুচি বা রেস্টুরেন্ট কর্মী আনা সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে এই ইন্ডাষ্ট্রি মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
বৃটেনের নতুন প্রজন্মকে কারীর উপর প্রশিক্ষণ দিয়ে এই সংকট মোকাবেলার পরামর্শও দেন তিনি।
কারী শিল্পের উন্নয়নে এই সংগঠন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই ইতিমধ্যে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে এবং হঠাৎ করেই রেষ্টুরেন্টে অবৈধ অভিবাসী ধরতে অভিযানের মাত্রাও কমিয়ে আনা হয়েছে বলে জানান বিসিএ প্রেসিডেন্ট পাশা খন্দকার।
তিনি আরো বলেন, স্টাফ সংকটের কারণে এই কারী সংকট এখন মারাত্মকভাবে হুমকীর সম্মুখীন। আমরা এই বিষয়ে বৃটিশ হোম অফিসের সাথে আলোচনা করে যাচ্ছি যাতে ইমিগ্রেশন নীতিমালা শিথিল করে বাংলাদেশ থেকে স্টাফ আনার অনুমতি দেয়।
বিসিএ সেক্রেটারী এম এ মুনিম বলেন, কারী ইন্ড্রাস্ট্রি রক্ষার স্বার্থে স্বার্থে মিডিয়াসহ সকল পর্যায়ের সহযোগিতা কামনা করেন। আজকের এই উদ্যোগ কারী শিল্পের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নেওয়া হয়েছে। বৃটেনে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগেই আমরা রিজিওনালভাবে এই শিল্পকে বাঁচাতে স্থানীয় এমপিদের সাথে আলোচনা করবো।
বৃটিশ পার্লামেন্টের লর্ড মোহাম্মেদ শেখ বলেন, এই কারী শিল্পের মাধ্যমে বাংলাদেশীরা শুধুমাত্র বৃটেনের অর্থনীতিতে যে ভূমিকা রাখছে তাই নয়, এটি বাংলাদেশীদের জন্যও গর্বের বিষয়। তারা এই শিল্পের মাধ্যমেই তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে।
বৃটিশ অর্থনীতিতে প্রতি বছরে এই কারী শিল্পের অবদান ৪.৫ মিলিয়ন পাউন্ড। কারী শিল্পের উন্নয়নে সুনির্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে বক্তব্য রাখেন বৃটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার মোঃ আবদুল হান্নান।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বৃটিশ লর্ড সেইক ,লর্ডস কিরন বিলোমোরিয়া, ও রিচার্ড হারিংটন এমপি।