এগিয়ে যাচ্ছেন কাতারের নারীরা
দিনদিনই এগিয়ে যাচ্ছেন কাতারের নারীরা। জ্বালানি সম্পদে সমৃদ্ধ গতিশীল অর্থনীতির দেশ কাতারে নারীরা নানা ধরণের কাজে অংশ নিচ্ছেন।
সরকার নারীদের নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণে সহায়তার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হওয়ার ক্ষেত্রেও সমানভাবে উৎসাহিত করছে।
‘কাতারাইজেশন’ নামের জাতীয় যে কর্মসূচি রয়েছে তার থেকে উপকৃত হচ্ছেন দেশটির নারীরা। এ কর্মসূচির লক্ষ্য শিল্প ও সরকারি বিভিন্ন বিভাগে কর্মচারীর ব্যবস্থা করে কর্মজীবী নাগরিকের সংখ্যা বাড়ানো। এছাড়া এ কর্মসূচির আওতায় জনগণকে নিজ ব্যবসা দাঁড় করাতেও সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
মারিয়াম আল সুবায়ে (২৮) নিজস্ব একটি কোম্পনীর যাত্রা শুরু করেছেন। নাম ‘কিউ-ট্যালেন্ট’। ওই নারী বলছেন, আমি কাতার টিভির প্রোগ্রাম অ্যান্ড ক্রিয়েশন বিভাগের পরিচালক ছিলাম। এর আগে আমি বিপণন, বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে কাজ করেছি। সুতরাং আমি মনে করি জীবনের এমন এক পর্যায়ে এসে পৌঁছেছি যেখান থেকে নিজেই কিছু শুরু করতে পারি।
সাবেক ফার্স্ট লেডি শেখ মোজা বিনতে নাসির আল মিসনাদ উপসাগরীয় দেশটির নারীদের এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন।
এছাড়া আমিরের মা শেখ তামিম কাতার ফাউন্ডেশনের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ফাউন্ডেশনটি শিক্ষা ও সংস্কৃতিতে ব্যাপক অবদান রাখার পাশাপাশি একটি ‘এডুকেশন সিটি’ পরিচালনা করছে যেখানে জর্জ টাউনসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা রয়েছে। আরো রয়েছে দোহার ‘সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি পার্ক’।
কাতারে নারীরা ১৯৯৯ সালে সরকারের সিনিয়র পদে যোগ দেয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন। দেশটির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রী হেসা আল জাবের ফোর্বস তালিকায় ২০১৪ সালের সবচেয়ে ক্ষমতাবান ২শ আরব নারীর মধ্যে ৫ম অবস্থান লাভ করেন।
দোহায় কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা বিষয়ক সহযোগি ডীন সেলমা লিমাম মানসার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলে শিক্ষার্থীর তুলনায় চারগুণ বেশি মেয়ে ব্যবসায় যোগ দিচ্ছে।
সুবায়ে বলেন, কাতারে নারীদের রাণীর মতো বিবেচনা করা হয়। এখানে নারীদের সব ধরণের অধিকার রয়েছে।
তিনি বলেন, এখানে আমার সব ধরণের সুযোগ রয়েছে। আমি কতোটুকু যাবো তা নির্ভর করছে আমারই ওপর।
তবে নারীরা অনেকদূর এগিয়ে গেলেও দেশটির সামাজিক অবস্থান এখনও রক্ষণশীল। ‘কাতার সাকসেস স্টোরিজ-ইন্সপায়ারিং উইমেন’ নামক গ্রন্থের লেখক ক্যারোলিন কার্পেন্টিয়ার। তিনি কাতারের সকল ক্ষেত্রের সব নারীকে নিয়ে গবেষণা করেছেন।
তিনি বলেন, এখানকার সংস্কৃতি এখনও রক্ষণশীল। এখানে এখনও অনেকেই মনে করেন কিছু বিষয় আছে যা নারীদের জন্য নয়। এগুলো পুরুষের। যেমন কৃষি ও মাছধরা।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া নারীরা তাদের স্বপ্নের বাস্তবায়ন করতে পারছেন অনায়াসে, অনেক বেশি পরিমাণে।